লাশের মিছিল



লাশের মিছিল
দাউদুল ইসলাম


প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে ঝরছে তরতাজা প্রাণ। মশা মাছির মতন নির্বিচারে জীবন দিচ্ছে মানুষ! এ যেন মহাসড়কের মহাব্যাধি! এর যেন কোন প্রতিষেধক নাই , নাই কোন প্রতিরোধক। ফলে এই মহামারি এই ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে সমাজের সকল শ্রেণীর  পেশার মানুষ। কারণ আমরা সকলেই এসব যানবাহনের যাত্রী, সমাজের ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার, উকিল  মোক্তার, শিক্ষক ছাত্র/ছাত্রী, কৃষক শ্রমিক, চাকুরীজীবী, পেশাজীবী, নারী পরুষ অর্থাৎ সকলকেই তো কোন না কোন যানবাহনে উঠতে হচ্ছে,হোক তা প্রাইভেট অথবা পাবলিক। যেহেতু সমস্যাটা সড়ক ব্যবস্থাপনায় , সড়ক নিয়ন্ত্রণের সেহেতু আপনি যেই কোন যানবাহনের যাত্রী হোন না কেন আপনি মৃত্যুর মহাসড়কে পা রাখলেন।
কিন্তু কেন?
অনেকেই কথায় বলে “এক্সিডেন্ট মানে এক্সিডেন্ট, এইটা কি কেউ ইচ্ছে করে করে?”
কথাটির যুক্তি থাকলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই যুক্তি টি সম্পূর্ণ ভুল! বরং এই যুক্তি থাকার কারণে দুর্ঘটনার দায়ী ব্যক্তিরা সড়ক ব্যবহারে অবহেলা ও বেপরোয়া হতে উৎসাহ পায়, সুযোগ পায়।
“ইচ্ছে করে দুর্ঘটনা করিনি/ করনি” এমন উক্তির জন্যই আমাদের দেশের সকল শ্রেণীর যান চালক গন একটু বেশীই অবহেলা ও দৌরাত্ম মানসিকতা লালন করে।
তার উপর  তাদের রয়েছে রাঘব বোয়াল টাইপের ছত্রছায়া! আইনের ফাঁক পোকর তো রয়েছেই সেই সাথে যোগ হয়েছে চালকদের তথাকথিত কমিটি /সমিতি, ইউনিয়নের জোর।যেমন একজন চালক ১০০% তার অবহেলা বা দাম্ভিকতার ধরুন একটি দুর্ঘটনার জন্ম দিলো, কিছু হতাহত হলো, সে কোন ভাবে পালিয়ে তার সমিতির ধাতস্থ হলো, ব্যাস!যেহেতু সেই সমিতির নেতা ক্ষমতাসীন দলের ( বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাই হয়)নেতা, সেহেতু তার হাত স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশীই লম্বা। কারণ এসব নেতারা সড়কের রাজা, আর সড়ক মানে রাজ পথ > রাজ পথ মানে নানান আন্দোলন সংগ্রামের ময়দান, সুতরাং যেই নেতার দখলে এই ময়দান সেই নেতার হাত এম পি, মন্ত্রী, উকিল, ব্যরিষ্টার অব্ধি থাকেই। আর নেতার যেহেতু এতো লম্বা হাত দু চার টা দুর্ঘটনা বা মানুষ মৃত্যুর ঘটনা তো তার কাছেই কিছুই না। এই হচ্ছে আমাদের সড়ক, মহাসড়কের যান চালকদের মাস্তানি আর দৌরাত্ম্যর মূল কাহিনী।
   এখন আসুন সড়ক/ মহাসড়কের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কারীদের দায়িত্ব, কর্তব্য, ক্ষমতা, আর সততার দিকে একটু তাকাই-
আমি যেহেতু ঢাকা চট্টগ্রামের মত শহরে থাকি না, একটি মফস্বলে থাকি আর রোজ
নিজেই বাইক নিয়ে চলাফেরা করি সেহেতু আমি আমার চলাচলের সড়ক টুকুর চিত্র যা দেখে আসছি তাই তুলে ধরবো-
চট্টগ্রাম শহরের আগে অর্থাৎ সিটি গেট থেকে ফেনী শহরের আগ পর্যন্ত যদি হিসেব করি তাহলে অন্তত ৪/৫ টি পুলিশ চেক পোষ্ট চোখে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী এক্টিভ দেখা যায় মিরসরাই তে, বিশেষ করে রামগড় রোড় ও এশিয়ান হাইওয়ের সংযোগ স্থল হচ্ছে বারৈয়ার হাট বাজার, এই বাজারের দু পাশে তিন দিকে হচ্ছে গাছ ব্যবসায়ীদের দোকান, দু দিকে রয়েছে বাঁশ এর কাজ কারবার। রামগড়/ খাগড়াছড়ি হচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের জন্য স্বর্গের সড়ক, কারণ এই পথে প্রতিদিন শত শত পাহাড়ি গাছ, বাঁশ, ফল ফলাদির ট্রাক যাতায়াত করে। আর এসব ট্রাক মানেই নিঃশর্ত চাঁদা! কোন কথার প্রয়োজন নাই, কোন ধর কষাকষির প্রয়োজন নাই, নির্দিষ্ট  কয়েক টা স্থানে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হাজির থাকেন, আর যানবাহন চালক/হেলফারেরা তৈরি থাকেন কথিত হ্যান্ডশেকের জন্য। এই যে কয়েক স্থানে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হাজির থাকেন তাদের সবার সাথে কিন্তু হ্যান্ডশেক হচ্ছে না, এদের এক ধাপ হচ্ছে আগত বাহন টি কে সিগনাল দেয়া, আরেক ধাপ হচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেক টা করা। আরেক ধাপ আছে যারা শুধু রেড়ী থাকেন দৌড়ানোর প্রয়োজনে দৌড়োবার জন্য।
এই যে মেকানিজম টা- এর টোটাল প্রভাব টা পড়ে মূল সড়কের উপর, কারণ মহাসড়কে একটি গাড়ি যেখানে ব্রেক করে সেখানে অটোমেটিকলি পেছনের গাড়ী গুলো স্লো গতি অথবা ডান বাম করতে হয়, ফলে যানজট বা ও দুর্ঘটনার আরেক টি কারণ হচ্ছে এই ট্রাফিক হ্যান্ডশেক মেকানিজম । এখানে আরেকটি প্লাস পয়েন্ট রয়েছে, এই রামগড় বা বারইয়ারহাট সংযোগ সড়ক হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে আসা চোরা চালানের রুট। সুতরাং বিজ্ঞ পাঠক বুঝতেই পারছেন এই সড়কের মর্ম কতটা!...
সেই যাই হোক
আমাদের আম জনতার এসবে কোন লেনা দেনা নাই। মাঝে মধ্যে একটু যানজট সইতে হয় এই যা-
কিন্তু এই মেকানিজমের কারণে যে  সড়ক/ মহাসড়ক গুলো আক্রান্ত হচ্ছে অসম্ভব এক মহামারি ব্যাধিতে। আর এই ব্যাধির মরণ কামড় কতটা নির্মম তা আমরা ইতিমধ্যেই হাতে কলমে দেখেছি, দেখছি। বিষয় টা হচ্ছে চালকেরা অসম্ভব গাদ্দার,দাম্ভিক, আর ক্ষমতাধর!
কেন?
কারণ যেহেতু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার টাকার গোলাম, যেহেতু স্থানীয় নেতা, পাতি নেতারা তার ভাই- দলীয় ভাই, লাঠিয় ভাই; যেহেতু এসব ভাইয়েয়া এম পি, মন্ত্রীর কোরামীয় ভাই, রাজ পথের সৈনিক, দলবাজির ভাই।
 সেহেতু-
“ আমারে আর পায় কে? কন হালা আছে আমার হাত ধরে, ব্যাটা বাল ফালা গা...”


ইত্যাদি মনোভাব সংশ্লিষ্টদের জন্য একেবারেই সস্তা! এবং কি এসব স্থানীয় চালক
( টেম্পো, সি এন জি অটোরিকশা, পিক আপ ভ্যান, সেইফ লাইন, ভটভটি, মোটর বাইক চালক, বাস, মিনিবাস ) ইত্যাদি চালক গনের বেশীর ভাগেরই সঠিক ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। বিশেষ করে মফস্বল সড়কের যানবাহন গুলোর চালকদের বেশীর ভাগই রিক্সা ড্রাইভিং করতো, দু’চার দিন কোন বন্ধু সি এন জি চালকের সাথে থেকে সেও ড্রাইভার সেজে যায়। এসব স্থানীয় চালক গন যখন সড়কে দৌরাত্ম্য চালায় তখন বাহির থেকে আসা কোন ট্রাক না বাসের চালক দের কোন তোয়াক্কাই করেনা  স্থানীয় ক্ষমতার বলে। আর ট্রাক/পিকাপ/বাস চালকেরা সেটা সহজে মানতে পারেনা ফলে সড়কে এক ধরনের প্রতিযোগিতা তৈরি হয় এবং ফলাফল দাঁড়ায় এক একটি পরিবারের নিঃস্ব হবার ইতিহাস।
এই তো সে দিন মিরসরাই আবু তোরব প্রফেসর কামাল উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষের প্রাণ গেলো সেইফ লাইনে, জানা গেছে যেই বাহন টির সাথে তার সংঘর্ষ হয় স্রেফ দৌরাত্ম বজায় রাখার কারণেই তা হয়। এর এক সপ্তাহ পরই-
গত ১৩ই এপ্রিল বারইয়ার হাট করের হাট রুটে যে দুর্ঘটনা ঘটে তা আরো মর্মান্তিক
একটি বাই বাহি ট্রাকের ধাক্কায় একিই পরিবারের চারজন, দু জন মারাত্মক আহত আর বাকী দুজন পিঠাপিঠি ভাইএর মৃত্যু।
    এভাবে প্রতিদিন শুধু মিরসরাইতেই  কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে। এমন কোন দিন নাই যে দিন কোন দুর্ঘটনার খবর আসছে না, প্রতিদিন কোন না কোন পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে, প্রতিদিন কেউ না কেউ পঙ্গু হচ্ছে। শুধু দুর্ঘটনা বলে দিনের পর দিন এসব মৃত্যুকে সস্তা করে তুলছে, যাদের অবহেলায় চাকার নিচে পিষ্ট হচ্ছে মানুষের জীবন তাদের একশ জনের জীবনের মূল্য একজন দুর্ঘটনা কবলিত মানুষের সমান হবেনা !
সমান হবেনা এক মিশুক মুনিরের অথবা এক তারেকের জীবনের সাথে একশ জন চালকের জীবন!
সমান হবেনা এখন বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রের জীবনের সাথে একশ জন চালকের জীবন!
সমান হবেনা একজন অধ্যক্ষ আমিনুর রসুলের ছাত্রের জীবনের সাথে একশ জন চালকের জীবন!
  গাড়ীর চালকেরা গাড়ীর স্টিয়ারিং এ বসলেই যেন দানবের রূপ নেয়, ইচ্ছে মতন আচরণ- অসদাচরণ তো আছেই, এক হাতে মোবাইল, এক হাতে সিগারেট নিয়েও গাড়ী চালাচ্ছে এবং কি একিই অবস্থায় গাড়ী অভারটেকিং ও করতে দ্বিধা করেনা। যাত্রীরা গাড়ীতে ধূমপান করে না অথচ গাড়ির ড্রাইভার হেল্পার সুপারভাইজারেরা দেদারচে ধূমপান করে। ট্রাক ড্রাইভারদের নেশা গ্রস্ত অবস্থায় গাড়ী চালানোর বিষয় টা যেন একেবারে নিয়ম করা, যেন গাড়ি চালাতে হলে নেশা করেই চালাতে হয়।মহাসড়কে সি এন জি অটো রিক্সার বিধি নিষেধের পর এসব চালকেরা যেন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, সেই সাথে যেহেতু মহা সড়কে চলবে না সেহেতু “যেমন তেমন ড্রাইভার সিএনজি চালাতে পারবে” এমন মানসিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রতিটি সড়কে মহাসড়কে সি এন জি অটো রিক্সা না চললেও গ্যাসের জন্য তারা রাস্তায় উঠছে,আর এই অল্প সময়েও অনেক দুর্ঘটনার জন্ম দিয়েছে। সি এন জি অটো রিক্সা না চললেও সাধারণ রিক্সা কিন্তু ঠিকই চলছে, ভটভটি বা নসিমন গুলো বিনা বাঁধায় চলছে। এই ভটভটি বা নসিমন গুলো সবচেয়ে বেশী মরণ-ঘাতী, এদের না আছে সড়কে চলাচলের মত উপযুক্ত বাহন, না আছে চালকের অনুমতি, অথচ প্রায় দেখা যায় পাঁচ ফুট বাহনে ২০ফুট লম্বা রড বোঝাই করে উল্কার মত ছুটছে। এসব বাহন গুলোর উপযুক্ত ব্রেক নাই, হর্ন নাই, সিগনাল লাইট নাই, চালকের নিজের কোন সেপ্টি নাই। ইদানীং সাধারণ রিক্সা গুলোতে সংযোজন হয়েছে ব্যাটারি, রাতের বেলায় এরা যে লাইট জ্বালায় তাতে বিপরীত দিকের বাহন গুলোর চালকের খুব সমস্যা হয়, কারণ রিক্সার স্টিয়ারিং হাতল যে উঁচুতে হয় তাতে যদি এলইডি লাইটের মত লাইট জ্বলে তাতে বিপরীত দিক থেকে আসা বাহন গুলোর চালকের চোখের উপর সরাসরি আলোটা পড়ে, এরা আবার রিক্সাতে অধিক সাউন্ডের হর্ন লাগায়, কেউ কেউ আবার সাউণ্ডবক্স লাগিয়ে গান বাজায়। এতে শব্দ দূষণ ও সত্যিকার প্রয়োজনীয় হর্নের গুরুত্ব নষ্ট হচ্ছে। এভাবে আমাদের সাধারণ মানুষের অনুভূতি , বিবেক ভোঁতা হয়ে গেছে।

আমরা এখন যতো মৃত্যুর খবর শুনি তাতে আমাদের ভ্রু কুঁচকায় না, মনে হয় স্বাভাবিক কোন খবর।
ইন্দ্রিয়গুলো আগের মত আবেগে আক্রান্ত হয় না। নয়ন, মন পাথর হয়ে গেছে, ভোঁতা হয়ে যাওয়া অনুভূতিতে মানুষের মৃত্যু আর আগের মতো ভাবায় না। শুধু সাময়িক এক ধরনের যন্ত্রণা দেয়। যে যন্ত্রণায় মিশে থাকে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে না পাওয়ার ব্যর্থতার কথা। বারবার বহু আলোচনা, যুক্তি, তর্ক, বহু লেখালেখি বহু টকশো হয়েছে এই সড়ক দুর্ঘটনার উপর। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
 আমাদের পার্শ্ববর্তী সীতাকুণ্ড থানার চিত্র আরো করুণ-
গত তিন মাসে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, হাইওয়ে পুলিশের হিসেব অনুযায়ী গত তিনমাসে সীতাকুণ্ড অংশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন, একবছরে ১৪২ জন নিহত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে হতাহতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।
“অদক্ষ ও লাইসেন্স বিহীন চালকদের বেপরোয়া যান চালনা এবং মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে অব্যবস্থাপনাই এর জন্য দায়ী।”
আমাদের দেশে এসব সড়ক/ মহাসড়কে যারা যানবাহন চালায় তারা বেশিরভাগই অশিক্ষিত। গাড়ি চালানোর সঠিক সাইড, গতি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয় জানে না বললেই চলে। জানলেও আইনের ফাঁকফোকর খুঁজে তার মারপ্যাঁচে ঠিক নিজেকে বের করে নেয়। ফলে এত এত দুর্ঘটনা ঘটলেও শাস্তির খবর আসে হাতেগোনা। অথচ চালকের ভুলেই কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটার হার বেশি থাকে। কিন্তু শাস্তির ক্ষেত্রে তা লঘু অপরাধে পরিণত হয়।
“দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই”!
এই ধরণের মন্তব্যের জোরে দুর্ঘটনার জন্য দায়ীরা বহাল তবীয়তে একের পর ঘটনা করতেই থাকে।

আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।
আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। জীবনের নিরাপত্তা চাই।
আর এই নিরাপত্তা এই নিশ্চয়তা কেবল মাত্র সড়ক মহা সড়কের যান চালকেরাই দিতে পারে।
কেমন হবে-
যদি প্রতিটি ড্রাইভার সু শিক্ষিত, সু প্রশিক্ষিত,ও সদাচারী হয়-
যদি তারা তাদের পেশা কে সম্মান দেয়, নিজেদের একটা স্ট্যাটাস একটা স্টাইল মেইন্টেইন করে।
যদি চালকেরা নিজেদের মধ্যে অহেতুক প্রতিযোগিতা না রাখে, দাম্ভিকতা আর দৌরাত্ম্য মনোভাব পরিহার করে।
যদি প্রতিটি চালক সড়ক আইন মেনে চলে আর সড়কের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি যান চালক দের অহেতুক হয়রানী না করে।
যদি প্রতিটি যান বাহনের মালিক চালকের উপর আর্থিক ও মানসিক চাপ না দেয়।
যদি প্রতিটি যাত্রী এসব চালক ও তাদের সহযোগীকে সম্মান করে।
যদি নির্দিষ্ট গতি মানা হয়, নির্দিষ্ট স্থানে স্টপেজ ও পার্কিং হয়, চালকদের নির্দিষ্ট সময় সীমার ডিউটি হয়-
আর যদি এসব কিছুর উপর থেকে অশুভ রাজনীতির কালো হাত সরে যায়। ঘুষ, চাঁদা বাজি নিপাত যায়।
যদি পথচারীরা নির্বিঘ্নে চলার জন্য ফুটপাত পায়, রাস্তা পারাপারে যদি সকলে আইন মানে , জেব্রা ক্রসিং বা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে-
তাহলে কেমন হবে?
এই ভাবনা গুলো কোন অস্বাভাবিক ভাবনা নয়। এগুলোই একটি সভ্য দেশের  যোগাযোগ ব্যবস্থার নিয়ম।
একটা জাতি কখনোই সভ্য নয় যতক্ষণ না সে তার করনীয় ও বর্জনীয় বিষয় গুলো না জানবে।
আমরা ডিজিটাল হচ্ছি, স্টাইলিশ হচ্ছি, স্মার্ট হচ্ছি অথচ আমরা সভ্য হচ্ছি না।
আসুন দয়া করে নিজেকে সভ্য হিসেবে উপস্থাপন করি।
অন্যের ক্ষতি যেন না হয় এই মনোভাব কে লালন করি। তাহলে সমাজ , সংসার, সড়ক, অফিস- আদালত, হোটেল রেস্তোরা, পার্ক, রাস্তা ঘাট, রাত –দিন, সকাল বিকাল সবকিছু উপভোগ্য হয়ে উঠবে।আনন্দময় হয়ে উঠবে।

সবার প্রতি শেষ বারের মত মিনতি করছি-
আসুন নিজেকে ভালবাসি, অন্যের উপকারে আসি, দেশের মঙ্গলে কাজ করি, নূন্যতম প্রতিদিন অন্তত এক মিনিট করে ভাবি কি করলে সোনার দেশ গড়া যাবে।




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট