ভেবে ভেবে ব্যথা পাই
বাসার তাসাউফ
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু আমি কাঁদছি। আমার চোখ থেকে গাল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে বুক ভিজে যাচ্ছে। আমার মুখে কোনো শব্দ নেই। বুকের ভেতরে চাপা পড়ে আছে শব্দেরা। আমি যেন নির্বাক হয়ে গেছি। আমি চোখ মেলে দেখছি অসহায় মানুষের কালো ফ্যাকাসে মুখ। আমি কান পেতে শুনছি এসব মানুষের করুণ কণ্ঠের বিলাপ। আমি মুখে মাস্ক পড়ে আছি। কিন্তু আমার নাকের গহ্বরে প্রবেশ করছে উৎকট গন্ধ, লাশের গন্ধ। এখন বাতাসে লাশের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে।
আমি সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি এখানে। একটি মানুষের জন্য, একটি লাশের জন্য। যে মানুষটির জন্য আমি দাঁড়িয়ে আছি তার নাম সুচিত্রা। সে আমার বোন নয়, কোনো আত্মীয়ও নয়। তবু তার জন্য, তার লাশের জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। সে বেঁচে আছে না মরে গেছে জানি না। বিশাল এ প্রাসাদের নিচে চাপা পড়ে সে কীরকম ছটফট করছে বেরিয়ে আসার জন্য, বাঁচার জন্য তাও জানি না! অন্যান্য মানুষগুলোর কি একই অবস্থা? আজ এতটা দিন হয়ে গেল জন্তুর মতো বিরাট পাথর খ-ের নিচে ইট-বালি, সিমেন্ট-রডের তৈরী স্লাভের নিচে চাপা পড়ে আছে তারা। না জানি তাদের কেমন কষ্ট হচ্ছে? তাদের কি খুব পানির পিপাসা পাচ্ছে? নিকষ কালো কবরের মতো অন্ধকারে তাদের বুক কি ফেটে যাচ্ছে চিৎকার করে করে? না জানি কার মাথা চেপ্টা হয়ে গেছে। কার পুরো শরীর, হাঁড়-মাংস গুঁড়ো হয়ে গেছে।
সুচিত্রা কি বেঁচে আছে? মাত্র কয়েক মাস আগে এ ভবনের একটি গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছে সে। অবশ্য তারও কয়েক বছর আগে সে চলে গিয়েছিল আমাদের বাড়ি থেকে। সে ছিল আমার বাসার কাজের মেয়ে। কাজের মেয়ে কথাটা তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সে ছিল আমাদের পরিবারের একজন। খুব বিশ্বস্ত। পরিবারের সবাই কোথাও বেড়াতে গেলে তার কাছেই বাসার সব চাবি রেখে যেতাম। কোনদিন দুই টাকার কোন জিনিসও চুরি করে নি। তবে তার একটাই দোষ ছিলÑআসলে দোষ নয়, মুদ্রাদোষ। তা হলো, টিভিতে বাংলা সিনেমা দেখা। সিনেমা আরম্ভ হলে কাজে মন থাকত না। কাপড় ইস্ত্রি করতে গেলে পুড়ে ফেলত। ভাত বেশি ফুটিয়ে জাউ বানিয়ে ফেলত, নয়তো তরকারিতে লবণ দিতে ভুলে যেত। কাপড় ধুতে গিয়ে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রেখে রঙিন কাপড়ের দাগ লাগিয়ে ফেলত আর মাসে অন্তত দুটো চায়ের কাপ নয়তো চিনেমাটির থালা ভাংতো। আমি স্পোর্টস চ্যানেলে খেলা দেখলে কিংবা আমার স্ত্রী ভারতীয় মেগা সিরিয়াল দেখতে চাইলে সে বাংলা সিনেমা দেখতে না পেরে রান্নাঘরে গিয়ে ছোট্ট বাচ্চার মতো কাঁদত। তার চেহারা ছিল চমৎকার। অনেকটা সুচিত্রা সেনের মতো। যেদিন যে নায়িকার ছবি দেখত সেদিন সেই নায়িকার মতো ভঙ্গি করে কথা বলত, পোশাক পরত। একটি সিনেমায় তার প্রিয় নায়িকা সুচিত্রা সেনকে কাঁদতে দেখে সে নিজেও দিনভর কেঁদেছে। এরপর থেকে বাসার সবাই মজা করে তাকে সুচিত্রা সেন বলে ডাকা শুরু করল। সেও নিজের নাম বদলে এ নামটা নিয়ে নিল। এর আগে তার নাম ছিল শরীফা। তবে এ নামে ডাকলে সাড়া দিত না। সুচিত্রা বলে ডাকলে কোথা থেকে যেন এসে হাজির হত। প্রথম প্রথম সমস্যা হলেও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। তার শরীফা নামটা ভুলে আমরা সুচিত্রা বলেই ডাকতে লাগলাম।
একদিন সুচিত্রার এক মামা এলো তাকে নিয়ে যেতে। বিয়ের উপযুক্ত হয়ে গেছে সে। ফলে আমরা চইলেও আর তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। মেয়ে মানুষ। সময়মতো বিয়ে দিতে হবে, করতে হবে সংসার। তার বাবা-মা ছিল না। আমার স্ত্রী কিছু টাকা ও একটা শাড়ি দিয়ে বিদায় দিতে গেলে সে ছোট্ট বাচ্চার মতো হাউমাউ করে কেঁদে বিদা নিল। তার বিয়ে হয়েছিল এর কিছুদিন পরেই। একটা ফোন ফ্যাক্সের দোকান থেকে ফোন করে সুচিত্রা নিজেই তা জানিয়েছিল।
সুচিত্রা চলে যাবার পর দু’দিন যেতে না যেতেই আমাদের ময়লা কাপড় জমে পাহাড় হয়ে ওঠল। টেলিভিশন আর কম্পিউটারের ওপরে ধূলো জমল কয়েক ইঞ্চি। রান্না ঘরে থালা-বাসন, হাঁড়িপাতিল আধোয়া অবস্থায় পড়ে থাকে। ঘরের ছাদের কোণায় মাকড়সারা মিহিন সুন্দর জাল বুনে। বারান্দায় গ্রীলের ফাঁক দিয়ে কাক-চড়–ই-শালিক এসে প্রাকৃতিক কর্ম সেরে চলে যায়। লাল ও কালো পিঁপড়েরা দুধের মতো সাদা দেয়ালে লাইন ধরে পিলপিল করে চলে অনায়াসে নিজেদের খাদ্য সংগ্রহ করে। আরশোলারা ঘরের কোণায় কোণায় লুকিয়ে না থেকে ব্যাপক ওড়াওড়ি শুরু করে। চলে টিকটিকিদের অবাধ বিচরণ। কুনো ব্যাঙ ঘরের কোণা ছেড়ে মেঝে, শো’কেসের তলা, আলনার তলা দখল করে রাখে। মনে হয়, আমরা যেন প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকি। শুধু মাত্র একজন সূচিত্রা নেই বলে আমাদের সংসারের সবকিছু কেমন অগোছালো, কেমন উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে।
এরপর কেটে গেছে কয়েকটি বছর...
একদিন সকালে বৃৃষ্টি পড়ছে। পড়ছে তো পড়ছেই। কখনও বেড়ে যাচ্ছে, আবার কমছে। কিন্তু থামছে না। বেশির ভাগ সময়ই টিপটিপ। কিছুক্ষণের মধ্যে যে থামবে সেরকম কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। আকাশে ছড়িয়ে আছে কালো কালো মেঘ। বর্ষায় কখনও আকাশ মেঘহীন থাকে না। আলো ঝলমল নীলাকাশের বুকে সারাক্ষণ ভেসে বেড়ায় ছেঁড়াখোঁড়া মেঘ। ভাসমান এসব মেঘ দেখলে মনে হয় পেজা তুলোর মতো হাল্কা। বাতাসে ভেসে বেড়ায় এদিক ওদিক। এসব মেঘ সূর্যকে ঢেকে রেখেছে। যতক্ষণ না এই মেঘগুলো বৃষ্টি ঝরিয়ে নিঃশেষ হবে ততক্ষণ বৃষ্টি ঝরতে থাকবে হয়তো। বৃৃষ্টি হোক, ঝড় হোক অফিসে যেতে হবে। বৃৃষ্টির জন্য অফিসের কাজকর্ম থেমে থাকবে না। তাই বেরিয়ে পড়লাম। বাসা থেকে কিছু দূর এগিয়েই প্রত্যেক দিন যা ঘটে সেই ট্রাফিক জ্যামে আটকা পড়লাম। জ্যামটা বেশি বড় নয়, বড়জোর পাঁচ মিনিট লাগতে পারে। এই সুযোগে দশ এগারো বছরের একটা মেয়ে থেমে থাকা গাড়ির জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে আমার কাছে ভিক্ষে চাইল। আমি কিছু খুচরো পয়সা ওর হাতে দিতেই দৌড়ে অন্য গাড়ির দিকে ছুটল। আমার গাড়ির জানালা ফাঁকা হলে একটু দূরে ওভারব্রিজের গোড়ায় হেলান দিয়ে বসা একজন মহিলাকে দেখতে পেলাম। মহিলাকে আমার আধো চেনা আধো অচেনা মনে হল। সে আমাকে দেখেই মুখ আড়াল করে ফেলল ঘোমটা টেনে। কিন্তু আড়াল হবার আগেই আমার মনে পড়ল- এ যে সুচিত্রা! সেই যে আমাদের বাড়ির কাজের মেয়েটা...!
আশ্চার্য! সুচিত্রা এখন ভিক্ষে করে? তার সামনে বিছানো মাদুরে শুয়ে আছে একটা শিশু। শিশুটি মেয়ে না ছেলে ঠিক বোঝা গেল না। ড্রাইভারকে রাস্তার এক পাশে গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষা করতে বলে আমি সুচিত্রার দিকে ছুটলাম। কাছে গিয়ে দেখি তার সামনে মাদুরে শুয়ে আছে হাড্ডিসার এক শিশু। আমাকে দেখে ও মাথা নিচু করে শাড়ির আঁচল খুঁটছে। ময়লা শাড়ি, শুকনো মুখ, রুক্ষ চুল। তার দুই মেয়ে- বর্ষা ও মেঘ। এই নামগুলো কি তার কোন প্রিয় নায়িকার মেয়ের নামের সাথে মিলিয়ে রাখা হয়েছে? বড় মেয়েটা কিছুক্ষণ আগে যে আমার গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্ষে করছিল তার নাম বর্ষা, মাদুরে ঘুমোচ্ছে মেঘ।
আমি তাদেরকে বাসায় নিয়ে এলাম। আমাদের বাড়ি থেকে চলে যাবার পর সুচিত্রার বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছিল ট্রাকড্রাইভার। দুই বছর আগে রোড এ্যাকসিডেন্টে মারা গেছে সে। স্বামীর গ্রামের বাড়িতে সম্বল বলতে সামন্য ভিটে ও ছোট একটা খড়ের ঘর ছিল। কয়েকদিন আগে বন্যার জলে সেটা তলিয়ে গেছে। অসহায় সুচিত্রা অসহায় দুই মেয়ে নিয়ে কোথাও ঠাঁই না পেয়ে শহরে এসে ওভারব্রিজের নিচে আশ্রয় নিয়ে ভিক্ষে করছে। বাসায় আসতে আসতে গাড়িতে বসে এ কথাগুলো আমাকে জানালো সুচিত্রা। বাসায় পৌঁছানো মাত্র লোকজন জড়ো হয়ে গেল তাকে দেখতে। আমার স্ত্রী তো প্রথমে চিনতেই পারে নি। যে মেয়েটি এক সময় আমাদের ঘরদোর দোকানের শো রুমের মতো ঝকঝকে, তকতকে করে রাখতো। সে মেয়েটি নিজেই এখন কেমন রোগা, লিকলিকে। কোথায় তার সেই নায়িকার মতো চেহারা, সাজগোজ।
আমরা সুচিত্রাকে নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসেছি। আমার স্ত্রীর হুকুমে কাজের মেয়েটা বর্ষা আর মেঘকে খেতে দিয়েছে। খাবার পেয়ে তারা মুঠো ভরে খাচ্ছে। টি.ভিতে তখন উত্তম-সুচিত্রার বাংলা সিনেমা চলছিল, হারানো সুর। সুচিত্রা একবারও সেদিকে তাকাল না। ড্রয়িংরুমে বসে রইল মাথা নীচু করে।
আমার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুই এখন কোথায় থাকিস?’
সুচিত্রা নির্বাক। তার মুখে কোনো ভাষা নেই। শব্দ নেই।
আমি বললাম, ‘সুচিত্রা, তুমি কি কোনো কাজ করতে চাও?’
এবার তার মুখে শব্দ জুটল। বলল, ‘হ, ভাইজান। আমার এক দূর সম্পর্কের খালা কইছে আমারে একটা গার্মেন্টসে কাজ যোগাড় কইরা দিব।’
‘কোথায় সেটা?’
‘সাভার। আগামী কালই আমারে যাইতে হইব। গেলেই জয়েন।’
‘ঠিক আছে চাকরি করো। তবে আর ভিক্ষা করো না।’
তারপর সুচিত্রা আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। যাবার সময় আমার স্ত্র¿ী তার হাতে কিছু টাকা দিলে তার সে কি আনন্দ! এর দুই মাস পরে একদিন সুচিত্রা আমাদের বাসায় এসে জানালো, সাভারে গার্মেন্টসের সেই চাকরিটা পেয়েছে সে। আপতত দুই মেয়েকে নিয়ে একটি বস্তিতে উঠেছে। মাস শেষে বেতন পেলে ছোটখাটো একটা বাসা নেবে তারপর তার অফিসের ঠিকানা আমাকে দিয়ে চলে গিয়েছিল। সে-ই ছিল তার সঙ্গে আমার শেষ দেখা। যে অফিসে সে চাকরি করত তার ঠিকানা লেখা কার্ডটি এখন আমার হাতে।
নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড
৩য় তলা [রানা প্লাজা]
সাভার, ঢাকা
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে কাঁদছি এখনো। একটু পর পর ধ্বংসস্তুপ থেকে আহত ব্যক্তি কিংবা মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসছে উদ্ধারকর্মীরা। শত শত স্বজন স্রোতের বেগে ছুটে যাওয়া কচুরিপানার মতো দৌড়ে ছুটছে সেদিকে। পাগলের মতো খুঁজে ফিরছে তাদের হারিয়ে যাওয়া মানুষটিকে। কেউ খুঁজে পায় জীবিত আহত লাশ, কেউ পায় থেতলানো মৃত লাশ, কেউবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসে ধ্বংসস্তুপের সামনে। অপেক্ষায় অশ্রুসজল চোখে তাকিয়ে থাকে উদ্ধারকর্মীদের দিকে। এই বুুঝি উদ্ধার হয়ে এলো প্রিয় মানুষটি। সুচিত্রা ৩য় তলায় কাজ করত। জানি না সে বেঁচে আছে কিনা। যদি সে মরে গিয়ে থাকে তাহলে তার দুই মেয়ে বর্ষা ও মেঘের কী হবে? মেয়ে দুটো এখন কোথায় আছে? সুচিত্রার সাথে যখন আমার শেষবার দেখা হয় তখন সে বলেছিল মাস শেষে বেতন পেলে ছোটখাটো একটা বাসা নেবে। সে কি মাস শেষে বেতন পেয়ে বাসা নিয়েছিল? আমি তা জানি না। জানলে তার মেয়ে দুটোকে সেখান থেকে নিয়ে আসতে পারতাম। সাত দিন পার হয়ে গেল। সুচিত্রার জীবিত বা মৃত সন্ধান পেলাম না।
কেটে গেল আরো কিছুুদিন। এ ক’দিন আমি ধসে পড়া ভবন, সাভারে অধরচন্দ্র বিদ্যালয়ের মাঠ ও বিভিন্ন্ হাসপাতালে খুঁজে বেড়িয়েছি। কিন্তু কোথাও সুচিত্রার খোঁজ পাই নি। এর মধ্যে একজন উদ্ধারকর্মীর সঙ্গে কথা হল। সে বলল, ‘আপনি কাকে খুঁজছেন?’
আমি বললাম, ‘আমার এক আত্মীয়।’
‘কী নাম?’
‘নাম সুচিত্রা।’
‘সুচিত্রা নামে একজনকে ভেতরে চাপা পড়ে চিৎকার করতে দেখেছি। এমনভাবে আটকে ছিল, উদ্ধার করতে হলে বিম বা কলাম কাটতে হবে।’
আমি উদ্ধারকর্মীকে জাপটে ধরে কাঁদতে কঁাঁদতে বললাম, ‘ভাই, তাকে উদ্ধার করেন। তার দুটো বাচ্চা আছে। পৃথিবীতে সুচিত্রা ছাড়া তাদের আর কেউ নেই।’
উদ্ধারকর্মীটি চুপ করে শুধু আমার মুখের দিকে চেয়ে রইল। আমি দেখলাম আবেগ ছুঁয়ে গেছে তাকে। তার চোখ বেয়ে নেমে এসেছে অশ্রুবিন্দু। চোখের জল মুছে নিয়ে আমার হাতে একটা পরিচয়পত্র বাড়িয়ে দিল। তাতে সুচিত্রার নাম লেখা। আমি নির্বাক হয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। সুচিত্রার জন্য নয়, তার দুটো মেয়ের জন্য। জানি না এখন তারা কোথায় আছে। আমি লাশের দুর্গন্ধ শরীরে নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।