শীতের পদাবলি : ০২









মায়াবী বেদনা
আহমাদ সোলায়মান

একটি জীবন্ত মিথ্যার আঘাতে
একটি প্রশান্ত সকাল আক্রান্ত হলো
কয়েকটি পৃথিবী দেখলো
অতঃপর পাশ-কেটে হেঁটে গেল
পদচিহ্নে রয়ে গেল বেদনায় মায়া।


নিরুত্তাপ হাসি
সিত্তুল মুনা সিদ্দিকা

শিশিরে ভেজা দূর্বা ঘাসের উপর
পা ফেলে যাই আলতো করে,
শীতের সুখানুভবের ছোঁয়ায়!
কনকনে শীতে ধোঁয়াটে
কুয়াশা মেখে বিহ্বল আত্মা,
একটু পরে ভোর হয়,
সূর্য উঠে নিরুত্তাপ হাসি নিয়ে ,
একটু উষ্ণতার জন্য কতোটা
প্রতীক্ষায় ক্ষণ গুনে চলা!
কালের গর্ভে একে একে
হারায় প্রতিটি মূহুর্ত,
পথে যেতে যেতে দেখি শিশির ভেজা
পাটি পাতায় জমেছে ধুলো,
হিমেল আবহে অতীত পিছু ডাকে বার বার..!
আগের মতো করে নান্দনিক প্রহর
আর আসেনা ফিরে!


বেগুনি রঙের ক্ষত
মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম
.

অপেরা, তবে কী এই শীতেও তুমি আসবেনা?
তোমার প্রত্যাখ্যানের পাশে আমিই তো পরিণত মিথ্যেবাদী এক।

অথচ আঙুলের সমস্ত গোঙানি আড়াল করে,
সে তোমার অপেক্ষাতেই প্রতিদিন সদ্যোজাত হই;
অবিরত ঝলমল করি জ্যোৎস্নায় শানানো চাকুর মতো।

অপেরা, তবে কী এই শীতেও তুমি আসবেনা?
এদিকে বিরুদ্ধ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে আমার যাবতীয় বাগানপাট!

অন্যকারও প্রেমিকার দিকে আর কতকাল তাকিয়ে থাকবো?
যৌথ খামারের কথা ভাবতে ভাবতে আর কত রাত,
লালচে চোখে শুধু হেঁটে যাবো নিজের কঙ্কালের দিকে?

অপেরা, তবে কী এই শীতেও তুমি আসবেনা?
পরিত্যক্ত ডুমুরের আয়ু সেলাই করে কবেই তো ভোলে গেছি সব।

এমন প্রসিদ্ধ শীতে কে হবে আমার মনোহর ফাঁদ?
পরোক্ষ যন্ত্রণা পুনরুদ্ধার প্রকল্পে তুমিইতো শিল্পিত সংঘাত;
তুমিইতো স্বেচ্ছাকৃত ভুল। তুমুল অন্ধকারে বেগুনি রঙের ক্ষত।

অপেরা, তবে কী এই শীতেও তুমি আসবেনা?
একার সন্ন্যাসে নৃশংস সুন্দরের মতো কে আছে আমার আর?

অন্ধচোরা গলির বিপাকে কে শোনে তোমার স্তনের কলরব?
কে দেখে তোমার জীর্ণ প্রমোদ, ঝোড়ো খেয়ালে, খুব সন্ধ্যেবেলা?
প্রতিবার, এমন শীতের শেষে কার বুকে বাজাও অবাধ্য প্ররোচনা?


শীতের আবেশ
শাহীন রায়হান

দেশটা জুড়ে ঠান্ডা আবেশ শীতের ছোঁয়া শুধু
যায় না দেখা আলোর রেখা দিগন্তটা ধুধু
দুধ কুয়াশায় মাঠ ঢেকে যায় ক্ষেতের ফসল তাও
থমকে থাকে জনজীবন পরান মাঝির নাও।

গাছির জীবন তাও থামেনা হাতে রসের হাড়ি
ভাঁপা চিতুই গন্ধ ছড়ায় মম করে বাড়ি
সর্ষে ক্ষেতে হলুদ ছোঁয়া পাখির ডাকাডাকি
নেই কোথাও রোদের দেখা সূর্যটা দেয় ফাঁকি।

টাপুরটুপুর শিশির ঝরে গাছের সবুজ পাতায়
হুড়মুড়িয়ে শীত ঢুকে যায় খুকুর গরম কাঁথায়
ঝিরিঝিরি হিমেল হাওয়ায় শেয়াল ডাকে রাতে
শীত সকালে পাখপাখালি আনন্দে সব মাতে।

হঠাৎ জাগে সূর্য্যি মামা নীলচে মেঘের ফাঁকে
খেজুর রসের মিষ্টি পায়েস ইশারাতে ডাকে।







শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট