পরকাল
তমসুর হোসেন
অনেক বড় বিপদ উপেক্ষা করে আমি হতে পারছি না অন্ধ উদাস
পারছি না পৃথিবী থেকে পালিয়ে অচেনা কোন জগতে লুকিয়ে থাকতে
মৃত্যু এসে সর্বগ্রাসী রূপে সুমুখে দাঁড়ালে কি করে করব প্রতিরোধ
বিভীষিকাময় অন্ধকার সুড়ঙ্গে একা একা কেমন করে যাব হেঁটে
স্বজন হতে বঞ্চিত হয়ে কবরের স্তব্ধতায় কী করে কাটবে দিন
কষ্টের যতিহীন প্রমত্ত হাহাকার হৃদয়ের সব স্বপ্ন মুছে দেবে।
কোটি কোটি বছর মাটির ঘরে অচেতন হয়ে থাকা কী করে সম্ভব!
সেখানে প্রদীপ নেই কথা বলার সাথী নেই পাখি নেই বাতাস নেই
নেই রঙিন কুসুমে ভ্রমরের গুঞ্জরণ, সীমাহীন নীলাভ আকাশ।
মৃত্তিকার জঠরে মিশে দেহহীন অনস্তিত্বে কি করে থাকব ঘুমিয়ে ।
প্রকাশের উদ্দাম তরঙ্গময় ললিত কাব্যকথা হারাবে কত দূরে
ব্যথিত বিহঙ্গ হয়ে বন থেকে বনান্তরে উড়ে যাব দূর অজানায়।
আকাশ দরোজা হবে ধূনিত তুলা হয়ে ওড়বে পাহাড় খসবে তারা
মহাসাগর উথলাবে কবর ফেঁটে ছুটবে মানুষ আরশের দিকে
জানবেনা কিছু কোনখানে গন্তব্য তাদের পিছু নেবে আগুনের শিখা
হাশর ময়দানে ঘামে গলবে দেহ কাটবে সাঁতার বাঁচার আশ^াসে
ওৎ পেতে থাকবে পুলসেরাতে ভয়াল গুপ্ত জাহান্নাম অগ্নি গহ্বর
জনক জননী ভ্রাতা আদরের সহোদরাসেদিন হবেনা সহায়ক।
চুলচেরা বিচার হবে তামারঙ মাঠে প্রচ- তাপে কতকাল ধরে
দ- হাতে বসবে ক্রুদ্ধ বিচারক একচ্ছত্র অধিপতি জাল্লেজালাল
বড়ই শক্ত আর নিরপেক্ষ যাচাই হবে খুটে খুটে বিগত আমল
নত হবে পাপী মলিন কদাক চেহারায় পড়ে রবে মৃত্তিকায়
আমার জায়গা হবে কোথায় লুকাব কৃত গুনাহরাশি কোন কর্দমে
বিপুল গ্রাসে খোদাদ্রোহী পাপীদের পেটে টেনে নেবে উন্মত্ত জাহান্নাম ।
কৌশলহীন হৃদয় মেলো
আশ্রাফ বাবু
যতোটা শব্দে ভালোবাসে
ততোটা হৃদয় স্পর্শ করে নাই,
অনেক কৌশলী।
কতটুকু হৃদয় প্রয়োজন ছিল?
যতোটা গ্রহণ করি ততোটা তার জায়গা নেই
কিছুটা বিশ্বাস করে স্বার্থে মিল হলে।
কিছুটা বিশ্বাস চাই।
এতো প্রশংসার প্রয়োজন নেই যা আড়ালে ডুবে যায়।
কিছুটা আঘাত,
অবহেলা চাই?
প্রত্যাখান।
সাহস আমাকে পথ দেখায়
মিথ্যার হাতছানি দেখি অবেলায়
কতটুক ফুলের প্রয়োজন ছিল।
প্রয়োজন নেই, নেই প্রয়োজন।
করুণাকাতর বিশ্বাসের সত্যতা আঁধার ঘরে।
নষ্ট হৃদয় বাঁচো আঁধারে একাথাকো কিছুদিন,
মন মমতায় জাগো;
আরো কিছুদিন দেখো তোমাকে।
নিরীহ উষ্ণতা সমৃদ্ধ করো
কৌশলহীন হৃদয় মেলো।
ডুব দেয় অসমাপ্ত চাওয়া
শরীফ সাথী
আমার চাওয়াগুলো যেন অসমাপ্ত থেকে যায়।
সেই কবে চেয়ে দেখছি তোমায়
মুচকি হাসির ফোয়ারা ভেজা ঠোঁট
নীল নয়না চোখ। মসৃণ গালে তিলক ছোঁয়া
পুষ্প ফোঁটা মুখয়বে অনুরাগের অনুভুতি
লম্বা কেশে ঢেউ তোলা বিন্দি
মেহেদী সাজানো হাত
জোছনা রাতে হেলেদুলে হাঁটা মনে পড়ে খুব।
ক্ষণে ক্ষণে ডুব দেয় মনে আমার অসমাপ্ত চাওয়া।
সৌদামিনী
রামপ্রসাদ সূত্রধর
তুমি সুন্দর তুমি মুগ্ধকর তুমি চমকসৃষ্টি
ফেরাতে পারি না আমার চোখের দৃষ্টি।
আমি তুমি সোমত্ত বিরহ ঘুচায়ে সকল দূরত্ব
এসো হই আজি প্রাণবন্ত, খুঁজে লই অস্তিত্ব।
আখর
সিত্তুল মুনা সিদ্দিকা
সাত সতের ভেবে ভেবে কাটাই জীবনভর,
আশার কঠিন জলরঙেতে রাঙানো বালুচর!
নিপুণ হাতে গড়েছি কেবল কল্পলোকের ঘর!
দুরন্ত এই নিঝুম প্রহর, অসীম শক্তিধর!
মাঝে মাঝে ভাবের ঘোরের চুপটি করে থাকি
মনের কোনের অলীক অভাব ঘুম পাড়িয়ে রাখি।
শুভ্র কাগজে আবেগটুকু কালির সাথে মাখি।
আখর দিয়ে সাজায়ে নেয়া কাব্য নেবে নাকি?
শোবার ঘর
শেখ একেএম জাকারিয়া
সামনে গাঁজার ছিলিম
নেশায় বুঁদ পিস লিলি ক্রিসেনথিমাম
এই হেমন্তে জনসমাগম তুলনামূলক বেশি।
ছোট প্রজাতির
স্নে প্ল্যান্ট নির্গত অক্সিজেন
মানসিক চাপ আর দূষিত বাতাস
সরাতে দিনরাত পাম্প করেথ
খুব সাহসী পদক্ষেপ
হৃদপিণ্ড হেসে ওঠে শোবার ঘরে
ফিকাস বা বস্টন ফার্ন
ফিগ প্ল্যান্ট অথবা স্পাইডার প্ল্যান্ট
দিনের আলোর মত সুখ বিলায়।
ওয়্যারড্রোবের ওপরে
বেড সাইড টেবিলে রাখাথ
ছোট আকারের চলনসই মানিপ্ল্যান্ট
নতুন বধুঁর মত দুগালে চুমু খেয়ে
শীৎকার দেয়
চোখবুজে লেমন বাম খুশবু
ফার্ন অর্কিড এলোভেরা
অথবা চায়নিজ এভারগ্রিনের মত।
বিজয়ের দাবিগুলো
আহমদ মেহেদী
আমি যদি বাংলাদেশের আটান্ন হাজার
বর্গমাইলের এক লক্ষ ভাগের একটি অংশ হয়ে থাকি,
তাহলে আমি চাই এদেশে আর একটিও বিনা কারনে লাশ না পড়ুক ,
বাংলাদেশের এই বিজয়ের লক্ষ-কোটি ভাগের একটি অংশও হয়ে থাকি
তাহলে আমি চাই এবারের বিজয়ের পর এদেশে আর একটি মেয়ে কিংবা নারী ধর্ষিত না হউক ,
এদেশে আর একটিও শিশু হাসপাতাল গুলোর লোভের কারনে অবেহেলায় না মরুক,
আমি যদি এদেশের হাজার-কোটি বালুকনার এক বিন্দুর অংশও হয়ে থাকি,
তাহলে আমি চাই এদেশের মানুষ নিরাপদে বাস করুক, ন্যায়বিচার পাক,
মানুষের পথচলা হোক আরো নিরাপদে,সড়কে অকালে কোন স্বপ্ন জড়ে না
পড়–ক,
বিজয়ের দাবিগুলো- সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়–ক, বাংলাদেশের সুনাম বিশে^ ভাইরাল হোক।