সাংবাদিক মুনশী ইকবাল’র ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’



সাংবাদিক মুনশী ইকবাল’র 
‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’

মোহাম্মদ অংকন


বিশ্বের বেশিরভাগ সফল এবং ধনী মানুষের মধ্যে একটি জায়গায় দারুণ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তা হল- তাঁরা প্রায় সবাই প্রচুর বই পড়েন। ওয়ারেন বাফেট একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি  দিনের শতকরা আশি ভাগ সময় বই পড়ে ব্যয় করেন, প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ পাতা পড়েন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বছরে পঞ্চাশের অধিক বই পড়ে থাকেন। বিশ্ববরেণ্য কোটিপতিদের সাফল্যের পিছনে তাদের পড়া বিভিন্ন বইয়ের অবদান কোনো অংশে কম নয়। পাঠকদের বই পড়ার দারুণ আগ্রহবোধ থেকে লেখকরা প্রতিনিয়ত বই লিখছেন। শুধু বইমেলা উপলক্ষ্য নয়, সারাবছরই কমবেশি বই প্রকাশ হচ্ছে। মৌসুমি লেখকদের আড়াল থেকে বেরিয়ে সেপ্টেম্বর (২০১৯) মাসে বই প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক মুনশী ইকবাল। তিনি বই লিখেছেন গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিভিন্ন উপাদান নিয়ে। বইটির নামকরণ করেছেন- ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’।

লেখক মুনশী ইকবাল মূলত একজন সাংবাদিক। তিনি সাংবাদিকতা বিষয়ক একজন দক্ষ প্রশিক্ষকও।  এর বাইরে তিনি একজন লেখক ও কবি। কর্মরত আছেন উত্তরপূর্ব জনপদের প্রভাবশালী দৈনিক জালালাবাদের ক্রাইম ও কারেন্ট বিটে। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন দৈনিক জালালাবাদের সাহিত্য বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। লেখক সময় পেলেই বেরিয়ে যান মাঠে প্রান্তের। চলে যান পাহাড়, নদী আর বন-বনানীর কাছে। ঘুরে বেড়ান জনপদ থেকে জনপদে,  কথা বলেন সাধারণ মানুষের সাথে। রিপোর্টিংয়ের বাইরে তাঁর লেখালেখির মূল রসদ আসে এখান থেকেই। ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’ বইটির মূল উপাদান তাঁর এই ঘুরে বেড়ানো থেকে নেওয়া। তিনি বইটিতে শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে সহজভাবে তুলে এনেছেন হারিয়ে যাওয়া সেইসব ঐতিহ্যের কথা যা কিছুদিন আগেও আমাদের চোখে পড়তো। ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’ বইটি পালকি, ঢেঁকি, হুক্কা, গ্রামোফোন, গরুর গাড়ি, হ্যাজাক বাতি, চিঠি, কাঠের লাঙল, নৌকাবাইচ, মাটির পাত্র নিয়ে লেখা তথ্যনির্ভর প্রবন্ধ দিয়ে সাজিয়েছেন। এসব জিনিসপত্র আমাদের ঐতিহ্য। কিন্তু কিভাবে এসব আজ বিলুপ্তির পথে, তা বইটি পাঠের মাধ্যমে জানা সম্ভব।


‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য’ বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন সত্তরের দশকের খ্যাতনামা কবি ও সাংবাদিক, গবেষক নিজাম উদ্দীন সালেহ। প্রচ্ছদ করেছেন খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, ডিজাইনার ও প্রকাশক আহমেদ ফারুক। ‘শ্রীহট্ট’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আশি পৃষ্ঠার বইটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র দুইশত টাকা। প্রকাশনীর প্রদর্শনী উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ে ৪০% কমিশনে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া রকমারি ডটকম থেকেও বইটি সংগ্রহ করা যাবে। আমি বইটি পাঠ করেছি। ভীষণ ভালো লেগেছে। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যচর্চা ও রক্ষায় এ ধরণের বইয়ের বিকল্প নেই।


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট