মুক্তির লড়াই

 


মুক্তির লড়াই

সানজিদা আকতার আইরিন


বিঘা দু এক জমি ছিলো করিম মুন্সির। স্বামি স্ত্রী খাটা খাটনি করে সংসারের শান্তির গতি বাড়াতে কখনো আলসেমি করেনি বলে খেয়ে পড়ে ভালোই কাটছিলো দিন গুলো তাদের । বেশি খাটনির ধকলে করিম মুন্সির স্ত্রী নেতিয়ে পড়ে খানিকটা, ফলে শরীরে বাসা বাঁধে নানা জটিলতা। যার খেসারতে রুগ্ন কায়া দেহ খানা ফেলে তার আত্তা পৃথিবীর মায়া ত্যাগকরে খুব সহজে। ছেলে মেয়ে দুটোর যতেœর ভার সৎ মাকে দেয়া হয় অল্প কদিনেই। জমিলার তিল তিল করে জোড়ানো সংসার মাজেদার দখলে যাওয়ায় অধিকারের তুলনায় ক্ষমতার দাপট বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। নির্যাতন আর নিপিড়নের ভারে কচি ছেলেমেয়ে দু’টো কোণ ঠাসা হয়ে থাকলেও কিছুই করার থাকেনা বাবা করিমের। ক্ষমতা যার আইন তার বলেই শিশু দুটির সহ্যের সীমা পার হয়ে যাওয়া অত্যাচারও মুখ বুঝে সয়ে নেয়। কিছুতেই বউকে সামলাতে পারছিলোনা বলে সন্তানদের উপর অত্যাচার হয় জেনেও না জানার ভান করে সবসময়। এ যেনো নিজের ঘরে পরবাস। ছয় বছরের মেয়ে সুমনা কিছুই বোঝেনা বলে নিরিহ বোবা প্রাণির মত মার খেয়ে লুকিয়ে কাঁদে। দিনের পর দিন অত্যাচার সইতে সইতে একদিন বড় ছেলে তমাল তেড়ে ওঠে সৎ মাকে। স্ত্রীকে শান্ত রাখতে নিজের ছেলেকে থামিয়ে উল্টা ধমক দেয় বলে রাগে যন্ত্রনার মাত্রা দ্বিগুন হয়ে বুকের মাঝে জ্বলতে থাকে তমালের। মা বেঁচে নেই বলে বাবাও এমন পর হয়ে গেলো? ছোট বোনটার কথাও ভাবেনা বাবা। চোখ থেকে প্রতিশোধের আগুন ঢিকরে বের হতে চায় তার। ছোটবোনের জন্য সে কিছুই করতে পারেনা, এই যন্ত্রনায় ছট ফট করে দিন কাটে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলে নিজের ও বোনের অধিকার রক্ষা করা সহজ হবে তাই একদিন প্রতিশোধের আগুনকে অবলম্বন করে ঘর ছাড়ে তমাল।

ঢাকায় একটি বাড়িতে আশ্রয় পায় তমাল। এ বাড়ির সবার বহু আদর পেয়ে তমাল এ বাড়ির এক জন হতে পেরেছে সহজে। বাড়ির একমাত্র ছেলে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়া সবুজের হাত ধরে এ বাড়িত এসেছে বলে তার খুব ভক্ত তমাল। সারাক্ষণ তার কাজ গুলো আগে আগে করে দেয় সে। নিজের জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর তাড়নায় সবুজের আশ্রয়টুকু তমালের প্রয়োজন। ছোট বোনকে স্বাধীন করতে নিজেকে সাবলম্বি হওয়ার জন্য সবুজের মত কাউকে পাশে পাওয়া দরকার । সবুজের বন্ধুরা বাড়িতে এলে চা নাস্তা এগিয়ে দেয়ার ফাঁকে তমাল ওদের কথায় কান পাতে। আজকাল তারা প্রায়ই গম্ভীর মুখে আলাপ করে। তমালকে থাকতে দেয়না ঘরে। আগের মত গল্প, আড্ডা হয়না সেটা তমাল বুঝতে পারে। সারাক্ষণ কি পরিকল্পনা ও পরামর্শ করে খুব জানতে ইচ্ছে করে তমালের। সবুজ ইদানিং রাত করে ঘরে ফিরে বলে সবুজের বাবা মা খুব চিন্তা করে। মাঝে মাঝে খুব বকা ঝকা করে। সবুজ কোন প্রতিবাদ নাকরে সয়ে নেয় নিরবে। নির্বাচন, অধিকার, ভোট, পার্লামেন্ট সবকিছু না বুঝলেও বারো বছরের বালক তমাল অধিকার হারানোর বেদনাটা বোঝে ঠিকই । বয়সের চেয়ে অভিজ্ঞতা খানিকটা বেশি বলে এতো কঠিন কথাও সহজেই অনুধাবন হয় তার। অধিকার শব্দটা অন্তরের গভীরে ধাক্কা দেয় তমালের। সৎ মা তাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এটা তমাল জানে। কিন্তু দেশ মার অধিকারের বিষয়টি পরিষ্কার নয় ততোটা। কিছু দিন পর সবুজ বন্ধুদের নিয়ে দরজা বন্ধ করে রেডিওতে এক ভাষণ শুনছিলো। কি যে অদ্ভুত কণ্ঠ। দরাজ গলায় সবাইকে অধিকার রক্ষার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর যখন ‘বলেন রক্ত যখন দিয়েছি আরো রক্ত দেবো। এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ’ তখনই তমালের শিড় দাড়া শক্ত হয়ে ওঠে। তার কথায় রক্তে বিজলি খেলে। বুকের মাঝে তাজারক্তের প্রবাহ অনেক কিছু করার তাড়া দেয়। শত্রুর সাথে মোকাবিলা করার সাহস যুগিয়ে দিয়ে মৃত্যু ভয়কে জ্বয় করতে শেখায়। এক দিনে অধিকার দেশ মা, ভোট সব কিছু বুঝতে না পারলেও আজ বঙ্গবন্ধুর ডাকে বারো বছরের তমাল শত্রু তাড়ানোর শপথ নেয় । এতোদিনে সবুজের চোখের ক্ষীপ্র চাহনি পরিষ্কার তমালের কাছে। এমন বজ্র কণ্ঠের আগুন ঝড়া বক্তব্য কিশোর তমালের বুকের ক্ষত এর জ্বালা কোটিগুন বাড়িয়ে দেয় বলে মনে মনে নিজের জ্বালার চেয়েও দেশ মায়ের জ্বালা আগে মেটাতে হবে সিদ্ধান্ত নেয়। তাই এ লড়াই এ তমালকেও সামিল হতে হবে। দরজা ভেদ করে ঘরে ঢুকে সবুজের চোখে চোখ রেখে তমাল ঘোষণা করে বাংলা মায়ের সন্তান হয়ে তার পাশে দাঁড়ানোর। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সেও সাড়াদিতে চায়। তমালের শক্ত চোয়ালের দৃঢতা আর চোখের প্রতিশোধ পরায়ণ চাহনি দেখে সবুজ দলে টেনে নেয় তমালকে। আস্তে আস্তে তাকে কিছু সুক্ষ কৌশল ও কাজ শিখিয়ে নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে বলে। দেশের পরিবেশ ভালোনা বলে ঢাকা থেকে দলে দলে লোক গ্রামে চলে যাওয়ার হিরিক লেগে যায়। যুবক ছেলেরা শহর থেকে হাওয়া । এখানে আগুন ওখানে আর্মি, পুলিশ ধর পাকড় চোখের সামনে অনেক উত্তেজনা তমালকে আরো দৃঢ হতে সাহায্য করে। সবুজ ভারতে যাবার আগে বাবা মাকে গ্রামে যাবার সব ব্যবস্থা করে দিয়ে তমালকে পাশের একটা মুদি দোকানে কাজ পাইয়ে দেয়ার ফলে আশ্রয়টুকু থাকে। সারা দিনের কাজ শেষ করে রাতে দোকানেই ঘুমিয়ে থাকে। কেনাবেচার ফাঁকে ফাঁকে তথ্য আদান প্রদান করতে অসুবিধা হয়না তমালের। নিজের অধিকারের লড়াইটা এবার দেশ মায়ের জন্য বরাদ্দ হলো বলে চোখের আগুন বুকের আক্রোশ সব ই এখন পাক সেনাদের খাকি পোশাকের উপর বর্তালো। তবুও তমাল কিছু না জানার ভান করে সারাদিন কেনাবেচায় মন দেয়। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি এক বৃদ্ধ ভিক্ষারির আটা কেনার ছলে চিরকুট হাত বদলের কাজটি করে দক্ষ ভাবেই। সেই রাতে তমাল স্বশরীরে যুদ্ধ দলে যোগ দেয়।

সাতাশ জনের দলটির কারো প্রকৃত চেহারা বোঝার উপায় নেই। সবার মুখে লম্বা দাড়ি আর লম্বা চুল। নাওয়া খাওয়ার বালাই নেই। চোখ মুখে যেনো প্রতিশোধের ক্রোধ। সকলের চোখে ভয়ালো শিকারি বাঘের তীক্ষè দৃষ্টি যেনো শিকার খুঁজে ফেরে। সবুজ এই দলের কমান্ডার। গত সাত টি অপারেশনে ওরা ব্রিজ ভেঙ্গেছে এগারোটি আর হানাদারদের ক্যাম্প উড়িয়েছে দুটি, গ্রেনেড় হামলায় সেনা দলের ট্যাংক হামলা করেছে বহু। এতে কত হানাদার লোপাট হলো বলা মুসকিল তবে কাজের অগ্রগতি হয়েছে অনেক। তমাল মুক্তিযোদ্ধাদের সব কাজে সাহায্য করে আর মাঝে মাঝে বন্ধুক চালানো শেখে। গহীন জংগলে তাদের ক্যাম্প। দিনের আলোও এখানে প্রবেশ করেনা। যত্র তত্র সাপ বিচ্ছুর ছড়াছড়ি থাকলেও সে নিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই। সকলের মনে বঙ্গবন্ধুর একটাই ¯েœাগান, ‘রক্ত যখন দিয়েছি আরো রক্ত দেবো। এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।’ সকাল হবার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা বেড়িয়ে পড়ে ফেরার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। অপারেশন হয় রাতে। তমালকে গত কদিন সাথে নেইনি তারা। আজ ভোর রাতে দলের সদস্যরা তমালকে সাথে নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যায়। নতুন টার্গেট, নতুন পরিকল্পনা। সবার রক্তে চাপা উত্তেজনা, আর চোখে প্রতিশোধের আগুন তাদের যুদ্ধের অনুপ্রেরণা। মাঝে মাঝে যায়গা বদল করে নতুন নতুন কৌশল এটে শত্রু ঘায়েল করাই তাদের লক্ষ।

মাস খানেকের মধ্যে তমাল হয়ে ওঠে এক দক্ষ যোদ্ধা। গত দুইটি অপারেশনে তমালের চোখের আগুনে বুলেটের গতিকে তীব্র থেকে তীব্র করে। হানাদারদের ঘায়েল করতে এক খানা অ¯্র বরাদ্দ পায় সে। গত অপারেশনে তিন সহযোদ্ধাকে হারিয়ে মর্মাহত হলেও অনুতাপে সময় নষ্ট না করে তমালকে অস্র চালানোর অনুমতি দেয়। প্রথম অপারেশনে তমালের কাজ দেখে পিঠ চাপড়ে সবুজ বলেছিলো সত্যি তুই বাংলা মায়ের দামাল ছেলে। গর্বে তমালের বুক ভরে যায়, ফলে দিগুন আগ্রহে কাজ করে।


ডিসেম্বর মাস শুরু। দেশের কোথায় কি অবস্থা তা সঠিক ভাবে বলা যায়না তবে রেডিওর কিছু গান সবাইকে উজ্জিবিত করে। কত নিহত সঙ্গীকে হেথা হোথা ফেলে এগিয়ে যেতে হয়েছে তার হিসেব নেই। গত অপারেশনে মেডিকেল ছাত্র উজানের মাথার খুলি উড়ে গেলে বিভৎস লাগছিলো। কিন্তু এসব এখন মন কাঁদায়না, শুধু প্রতিশোধের আগুন জ্বালায় চোখে। কত বিপদ উপেক্ষা করে বনে জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়াতে হয় তার শেষ নেই। একটাই নেশা শত্রু ঘায়েল। একটাই আশা স্বাধীনতা।


ডিসেম্বর চৌদ্দ তারিখ প্রায় সাত দিনের পরিকল্পনার আক্রমণ। খুব শক্তিশালী সেনা ঘাঁটি। ঘায়েল করা সহজ নয়। জীবন মরণ লড়াইয়ে যা যা করণীয় সব কিছু করতে হবে। রাত পৌনে বারোটার পর আস্তে আস্তে পজিশন নেয় সবাই। খবর আছে ক্যাম্পে আশি জনের মত সেনা আছে। মুক্তি দলের মাত্র এগারো জন। এর মধ্যে আহত আছে দুইজন। তবুও কারোভয় নেই কোন শংকা নেই। পরিকল্পনা মাফিক পজিশন নিয়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা পর আক্রমণ করে মুক্তিদল। নিরিবিলি রাতে তারাও প্রস্তুত হতে কয়েক মুহুর্ত সময় লাগে। এতেই গ্রেনেড় বর্ষনে সৈন্য ঘাঁটি অনেক বেশামাল হয়ে পড়ে। মুহুর মুহু গুলি বর্ষণে যুদ্ধ চলে ঘণ্টা খানেক। তার পর মুক্তিদল পরিকল্পনা মাফিক ক্যাম্পের পিছন দিক থেকে পজিশন নেয়। মুক্তিদলের গুলির আওয়াজ না পেয়ে পাক সেনারা বুঝতেই পারেনি কি হতে যাচ্ছে। প্রায় চল্লিশ মিনিট পর গ্রেনেড হাম্লায় উড়ে গেলো সেনা ক্যাম্প। সুনসান নিরবতায় আরো কিছু সময়। আবার চললো মুক্তিদলের গুলি। কিন্তু প্রতিপক্ষের কোন সাড়া না থাকায় পরিকল্পনা মাফিক আগাতে থাকে মুক্তিদল। কাছে যেতেই আহত জনা কয়েক পাকসেনা আবার গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। সাথে সাথে দুই মুক্তিযোদ্ধার শরীর ঢলে পড়ে। সবুজের বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। মুক্তিদল আর দেরি না করে আবার গুলি চালাতে থাকে। দুটি তাজা প্রাণের বিনিময়ে দখল হলো ঘাঁটি।

গুলিবিদ্ধ আহত সবুজকে বহু কষ্টে নিয়ে আসা হলো ক্যাম্পে । প্রচন্ড যন্ত্রনায় কাতড়াচ্ছে বলে তমালের ভেতরের ছোট্ট মনটা আজ জেগে উঠে। বাড়ি ছাড়ার পর সবুজই তমালের একমাত্র আশ্রয়। এতোদিন যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে মনকে শক্ত করার চেষ্টা করেছে কিন্তু আজ সব গলে জল । কত মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছে। সবুজ আহত মাত্র। তবুও তমালের মন ভেঙ্গে গেছে। যুদ্ধ করতে করতে গুলি খাওয়া আহত সৈনিকের চিকিৎসা করার জন্য কিছু গোপন চিকিৎসক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। এমন কাউকে ধরে নিয়ে এসে ক্ষত পরিষ্কার করে ওষুধ লাগানো হলো । মাংস ছুয়ে গুলি বেরিয়ে গেছে। সমস্যা না হলেও ভুগতে হবে অনেক। সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। যুদ্ধ এখন চরম পর্যায়ে। কি করে পরের টার্গেট ঠিক হবে? চোখ শুধু শিকার খোঁজে। হেডকোয়াটারে খবর দেয়া হয়েছে নতুন কমান্ডার ও কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার শক্তি যোগ হবে এই দলে।


ঢাকার পরিস্থিতি ভালো নয় খবর এসেছে। ঘর থেকে নামিদামি লোকদের ডেকে নিয়ে মেরে ফেলছে বা গুম করে ফেলছে। অনেকেরই হদিস মিলছে না। মুক্তিযোদ্ধাদের শরীরে আগুন জ্বলছে। নতুনটার্গেট এসে গেছে। প্রস্তুতি চলছে। এই প্রথম অ¯্র আর ভালোবাসার মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে তমাল অসহায় বোধ করতে লাগলো। প্রচন্ড তাপে সবুজের গা ফেটে যাবার পালা। জ্বরের প্রকোপে জ্ঞান হারিয়েছে কয়েক ঘণ্টা হয়ে গেলো। জ্ঞান ফেরার নাম মোটে নেই। তমাল ঠায় বসে আছে। মাটিতে বিছানো খড়ের বিছানাও আজ রাজার পালংক মনে করে সবাই ক্লান্ত দেহ নেতিয়ে দেয়। সারা রাত তমাল দু চোখের পাতা এক না করে প্রতিক্ষায় থাকে কখন সবুজের জ্ঞান ফিরবে। সুর্য উঠি উঠি করছে। কিছুক্ষন পরই পুব আকাশে নতুন আলোর আভা দেখা দিবে। পাখির কিচির মিচির ডাক কানে আসছে। প্রতিক্ষার রাত সহজে পার হয়না বলে মনে হয়। হঠাৎ সবুজের জ্ঞান ফেরায় আহ্লাদে তমালের চোখ পানি ছল ছল করে। যে চোখে প্রতিশোধের আগুন সেই চোখে আজ পানির ফোটায় সহযোদ্ধার প্রতি আবেগের প্রকাশ হয়। সবুজ তার আশ্রয়। তমালের শক্তির অনুপ্রেরণা। বেলা গড়াতে না গড়াতে রেড়িওতে বিজয়ের সংবাদ শুনে উল্লাস আর, আনন্দে দিশেহারা হয়ে যায় তারা। আর যুদ্ধ নয় এবার সবাই ঘরে ফিরবে যার যার আপন জনের মাঝে। কত মা কত বোন কত বাবা প্রতিক্ষায় আছে তাদের সন্তানদের। তমালের মনে পড়লো ছোট বোনের মুখটি। তমাল চোয়াল শক্ত করে মনে মনে ভাবলো এবার তার স্বাধীন হবার পালা। ছোটবোনের মুখটি বার বার চোখের সামনে ভেসে ওঠে তমালের। মুক্তি সেনাদের সেই ঘাঁটিতে উল্লাসের ঝড় বইতে শুরু করলো। এ কয় মাসের হারানো সাথীদের কথা মনে পড়ে মর্মাহত হয় তারা। একচোখে হারানোর বেদনা আর এক চোখে স্বাধীন হবার আনন্দ তাদের আপ্লুত করে তুলেছিলো। কত কষ্ট আর ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতার নতুন সূর্য কিনে আনতে হয়েছে তা শুধু বাংলার ঐ দামাল ছেলেরাই জানে। তাই আজো আমরা গভীর ভাবে সেই বীর মুক্তিসেনাদের জানাই অজ¯্র বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট