কাঙ্ক্ষিত একটি আলোর শহর
রফিকুল ইসলাম
লাবণ্য প্রবাহে কনকময় জোছনা আসেনি আজও
আঁধার রাতের আঙিনা দ্বারে,
ক্ষয়ে ক্ষয়ে ফিরে গেছে ক্ষীণতনু খ-পা-ুর চাঁদ
আমার আকাশ ছোয়া স্বপ্ন পারে।
দখিনের খোলা দরজায় কত বসন্ত বাতাস এসেছে
কতবার ফিরে গেছে আবার,
যেখানে ফোটে আগুনঝরা রক্তরাঙা শিমুল সম্ভার
পাখিরা বিজয়ের গান গাইবে অনিবার।
ফুলেরা ছুঁতে পারেনি পাষাণ দেবতাদের পদতল
কল্পনার সিঁড়িতে বুনেছে মাকড়সার জাল
চারিপাশ মৃত্যুর মতো কালো, থেমে গেছে কোলাহল।
ধুলোময় জানালায় গড়িয়ে পড়েছে ঝাঁঝালো দুপুর
ঝিঁঝিরা নেচে নেচে আর উড়ে না বাজিয়ে নূপুর,
অতশি চশমার ফ্রেমে কৃষ্ণচূড়ার তামাটে রঙ দেখি
জেনেছি, ভালোবাসারা ঠিকানা রেখে যায় না নাকি?
রেখে গেছে শুধু অনুভূতির অস্পর্শী ছায়ার মায়া
দীর্ঘশ্বাসে ভাঙে আধখানা মন নিষ্ঠুর পাথর নীরবে
ছিঁড়ে পড়ে ঝুলে থাকা আকাশের শুকতারা প্রগাঢ় অন্ধকারে।
স্বপ্নরা হেঁটে বেড়ায় শব্দহীন মধ্যরাতের উঠোনে
আধপোড়া সিগারেট পোড়ে, পোড়ে একাকিত্বের প্রহর
অন্ধকারের প্রচ্ছদ ছিঁড়ে দেখি স্বপ্নময় কাক্সিক্ষত একটি আলোর শহর ।
তর্জন
মাজরুল ইসলাম
শত বিরহের পর
লোকগুলোর সামনে আবার এসেছে নতুন হুমকি
তাইতো ঘরবাড়ি সব সাবাড়।
এখন আবার লোকগুলোর ভাবাবেগ নিয়ে
মিথ্যার বেসাতি করে।
কণ্ঠে বেমরশুমি ফুলের হার শোভা পাচ্ছে
যা মিথ্যার স্তোকবাক্য ছাড়া কিছু নয়।
ব্যাপারটা নিয়ে সারাদিন ধরে ফ্যাসাদ চলছে
এবার আসবে তার দুয়ারে দুঃসময় আর
তর্জনীর তখন উঠবে নাভিশ্বাস...
তুমি কি সেই বিজয়?
সুমন আহমেদ
তুমি কী সেই বিজয়?
যার তরে বাবা আজও অবধি নিরুদ্দেশ...
ফিরবেনা জেনেও অবুঝ মন ফিরে আসার প্রত্যাশায়
সকাল থেকে সন্ধ্যা- মায়ের নিরন্তর প্রতীক্ষা।
আর শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে কেঁদে-কেঁদে বুক ভাসাই।
তুমি কি সেই বিজয়?
সন্তানের সম্মুখে ধর্ষিতা জননী- ভাইয়ের সম্মুখে বোন,
নববধূর অঙ্গে সাদা কাফনের সাজে বিধবার সাজ।
নদীর স্রোত বানের পানির মতো সারি বদ্ধ হয়ে ভেসে
যাওয়া অসংখ্য লাশের ভেলা- আর রক্তে পচা গন্ধ,
রক্তের খুলিতে মেতে উঠা তান্ডব ধ্বংসলীলার এক-সাগর
রক্তের বিসর্জনে পাওয়া লাল-সবুজের পতাকা।
তুমি কি সেই বিজয়?
স্বৈরাচার দেশদ্রোহী বিশ্বাস ঘাতক রাজাকারদের স্বপ্নের
স্বপ্নের নৈরাজ্যের দেশ বানাতে দাওনি,
হায়েনার শিকার ধর্ষিতা উলঙ্গ অবলার গায়ে- সেদিন
তুমিই কী পড়িয়ে ছিলে স্বাধীনতা বারো হাত শাড়ি?