ইচ্ছেরা খুঁজে ফিরে
রফিকুল ইসলাম
ইচ্ছেরা খুঁজে ফিরে
যখন দুধমাখা চাঁদের রুপালি আলো
রাতে অদৃশ্য আঁধারে ঝরে ,
স্বপ্নগুলো নক্ষত্রের মত নিরন্তর জ্বলে
ইচ্ছেগুলো সাঁতরায় কল্পনার অসীম নীলে
আর, সুগন্ধ-স্মৃতির ফেনার সাগরে।
ইচ্ছেরা খুঁজে ফিরে
যেখানে দূরের পথ অদৃশ্য ধোঁয়াটে কুয়াশায়
উচ্ছ্বাসিত না বলা গল্পের ভীড়ে,
নীল দহনে বেলা-অবেলা সারাবেলা
পড়ন্তবেলা যখন পাখিরা ফিরে নীড়ে।
ইচ্ছেরা খুঁজে ফিরে
একগুচ্ছো স্বপ্ননদীর মায়াময় প্রহরে
যে নদী ডুবে গেছে সমুদ্র গভীরে,
যার বালুকায় সাধের ঝিনুক কুড়িয়েছিলে
কনক জোছনাতে হেঁটেছিলে অনেক দূরে।
আজও ইচ্ছেরা খুঁজে ফিরে ...
নিজেকে লুকিয়ে রাখি
মো. আরিফুল হাসান
নিজেকে লুকিয়ে রাখি মানুষের কাছে
অন্তঃসারশূন্যতা ধরা পড়ে পাছে
সমাজের চোখ থেকে হয়েছি আড়াল
জীবন গহীনে বয়ে গম্ভীর বেগে
পড়ে আছি স্থিত হয়ে ধীর অনুরাগে
অজানা শঙ্কা এক দিচ্ছে উড়াল
আপন অলখপুরে দীপ জেলে যাই
কার আছে রূপ-সুধা কার রোশনাই
আছে কিবা না-ই আছে ভাবিনা এবার
ধীবর চক্রবালে, নিজ জালে ধরা খেলে
গোপন সখিরা আর কি যাতনা মেলে
ত্রাসের রাজত্বে রাজা অদ্ভুত আঁধার
দুঃখের স্বরের মতো দিনরাত অবিরত
যে বরষা স্মৃতিপাঠে এঁকে যায় ক্ষত
তার আছে নিপুনা দু’হাত
রথের কারিশমা দিয়ে, রংধনু রং পিয়ে
যথা সর্বস্ব নিয়ে, দেখে শুধু চেয়ে চেয়ে
মাছের মায়ের মতো করে অশ্রুপাত
হে বিদিশা, ওহে সুর, আপনভূবনপুর
আছে এক ঘনাবিষ্ট ঘন ঘোমঘোর
নিভে যায় চাঁদে চাঁদে জ্যোতি
তরাসে গগন সাজে, নির্জাত অভিলাজে
প্রীতির বন্ধন যেনো মৌন নাদে বাজে
শূন্য কলসি এক, নেই তার দ্যুতি।
আয়ু
ইয়াসিন আরাফাত
১
অনন্ত অনিদ্রা চোখে-
সবেগে দৌঁড়ে চলেছে একটি জন্মান্ধ ঘোড়া।
আজন্ম দেখিনি তারে, কেবল আওয়াজ শুনি।
চির দুর্নিবার গতি তার! থামে না কখনো।
খুড়ের আঘাতে দাঁত চেপে ধরে অনাবাদি মাটি!
গন্তব্যঃ একটি ঘর; অতলান্ত মৌলিক আঁধারে।
এই নূরানী উপমা হতে সাড়ে তিন হাত নিচে;
অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুটিয়ে কোনো রকমে শোবার মতো।
২.
সমুদয় প্রাপ্ত আবাদের আয়োজন নিয়ে
একদিনে তৈরি হয় একটি খড়ের গাদা
অতঃপর ইতরের নিত্য ক্ষুধা মেটাতে মেটাতে
ক্রমাগত লীন হয় উলম্ব গাদার দম্ভ।
অবশেষে একদিন ক্ষয়িষ্ণু যজ্ঞের গ্লানি নিয়ে
উপক্ষায় পড়ে থাকে নিষ্প্রাণ উলঙ্গ এক খুঁটি।
বিবসনা
শেখ একেএম জাকারিয়া
আমার দেহজুড়ে তোমার সৃষ্টির
গোপন তত্ত্ব প্রচ্ছন্ন আছে ঈশ্বর
অব্যক্ত আছে তোমার বংশজন্মের ইতিহাস
যদি আমায় বিবসনা করো
হাস্যপরিহাসে কিংবা অগোছালো সাজে
তবে আমায় পরমেশ্বরী বানিয়ে
অন্বেষনা করো না একটি দিনে
কালের সিঁদুরে আংটা পরাও
তোমার এমন কাট-খোট্টা
যাপিত জীবনে হাঁপিয়ে উঠি নিত
আমার পঞ্চবায় বেরিয়ে আসে
তোমার অপত্যের মা হওয়ার অভিশাপে!