মদিরাক্ষী সিরিজ
রাবাত রেজা নূর
১
সুঁইচোরা উড়ে যায় পূবের
বাতাসে সাকিনের গভীরে
আমার ঘরের বাস্তুসাপ
পূঁজা দেয় মদিরাক্ষীমন্দিরে
দূরের পথ ধরে আরো দূরে
যাওয়া যেখানে গভীর বন
তুলোর পাতায় গাঢ় হাওয়া-
ধূলোর উজানে নদী তীরে
পটোলের ক্ষেতে হলুদপাখি
বিরহ বাতাসে উড়ে মথ-দেবী
হৃদয়ের নৈবেদ্য কোথায় রাখি?
মদিরাক্ষী মন্দিরে জড়ানো লতা
পূবে আমার মেটো ঘরবাড়ি-
সুরধুনীনদী অন্ধ প্রেমপূজারি
কত জলকত নদীগন্ধবণিক
ভেড়ায় তরী পারসিয়া বন্দরে
আমার তরী বেরহম হাওয়ায়
আটকে গেছে মদিরাক্ষী মন্দিরে!
২
ভেড়াদের খুরের হাওয়া
সূর্যের বিপরীতে ধূলি
আচমকা ছুটে আসা তীর
বালিতে সাপের ঝুনঝুনি
এই যে কাফেলা- হাওদায়
বসে থাকা চাঁদ- বেদুইন
তার ছেড়ে দেয় গলাসান্দ্র
হাওয়ায় আঁটকে যায় রাত
মরুজোছনায় তারাফুল
মালাবালি ক্যাকঁটাসে
জোছনায় পায়ের ছাপ
রেখেকে যায় কে আসে?
আজানের ধ্বনি পাগড়ি
নুয়ে পড়ে ভেড়াদের ভীড়ে
এই যে কাফেলা চিরপ্রেম
ক্যারাভেন পৌঁছাবে তীরে?
৩
ফুলের পরাগে মাখামাখি ঠোঁটে
মৌটুসী অতসীফুলের আয়ু
পৃথিবীর সেরা ফুল ফোটায়
মায়ের জরায়ু। কসমগাভীন
জমিন ঘোড়াদের লোহাখুর
দেহবড়শিতে আটকায় মীন
সমুদ্রসঙ্গমে জরায়ু কতদূর?
পুরুষীপুরাণের বয়ান কসম
প্রেয়সীর শেষ চুম্বনচিরচেনা
পথনিশাচর দীর্ঘশ্বাসে উড়ে
যায় ইশকের কবুলিয়া মথ
পাজরের হাড় খুলে প্রেয়সী
মুহব্বতের সুতা ধুনকামসুর
ভেসে আসে আরশে আজিম
থেকে দেহরাঙা বলি ফাগুন
ছুরি বিনা চাহনিতে- পুরুষী
করে ধীরে ধীরে আদমকে খুন
‘লা তাকরাবা হাজিহিশ শাজারাত’
ঐ বৃক্ষের নিকটে যেও না খেয়ো
না তার ফলগন্দম বৃক্ষের গহীনে
আগুনফুটে ফুল প্রেমের নাজাত
‘লা তাকরাবা হাজিহিশ শাজারাত’
৪
স্মৃতির আলপথ ঘেঁষেবক
উড়তেছে তোমার কার্ণিশে-
স্বর্পগন্ধা ফুলে একাকার
হৃদয় দিয়েছি কাঠবার্ণিশে
একটা হরিণ দূরে হাটে একা
সিনায় ঘাসের উতলিগন্ধ
কে কবে দেখেছে চাঁদরুপ
আমি তো জন্ম থেকেই অন্ধ-
নদীতে জল আসে মিটিমিটি
ঢেউ ছুড়ে দেয় কোমলপেয়ার
একটা কাক দূরে ভিজে একা
ছিল না কিছু তোমাকে দেওয়ার
লাউডুগি জড়িয়ে ধরে মায়ের
আঁচল উড়ে যায় মেটেঘুঘু-
আমার জমিনে হৃদয়কাটা
পোকাদের বাস ফসলশূন্য ধূ ধূ