শব্দমালা : ইসরাফিল আকন্দ রুদ্র

 




প্যারাসিটামল


হিমশীতল, সকালের নরম রোদে হাঁটি শতবর্ষী ছাতিমতলায়

সেই আনন্দে কাতর; আছি এবং থাকি বেচে তোমার দায়।

বয়স যখন সাত তখনই করেছো ভালোবাসার সুখে আমার ভেতরটা জখম

জীবনকে তর্জমা করে জেনেছি- ‘তুমি’ই সেই প্রথম!’

তোমার হাতের মলিন স্পর্শ আমার মুখে, হাতে, বুকে বিরাজমান

ইরা তারা হয়ে নয়া দিগন্ত উন্মোচিত করে, সুখে লেগে থাকে আযান।


আমার ফুসফুসের ত্রিকোণাকার ফাঁপা অঙ্গে করি তোমার খোঁজ

ভালোবেসে বিদ্রোহ করে প্রেম বৃদ্ধি করি রোজ।

সুখ ও শোকে দ্রবীভূত, আনন্দ-বেদনা আছে মিশে-

ঝগড়া শেষে বুঝি তুমি আমার প্যারাসিটামল দুঃখ নাও শুষে।

বহু দ্রোহের আগুনে পুড়েও শেষমেশ ঘটে মিলন-

দুঃখের পরমাণু একত্রিত হয়ে করে সুখের অণু উৎপাদন।



প্রলাপ


সাত কোটি বছর হয়ে তোমার সাথে দেখা নেই

তবুও স্পষ্ট ভেসে আছো, মন সায় দেয় তুমি আমার সামনেই

বুকের ভেতর মিছিল করে তোমাকে কাছে না পাবার যত আছে ক্ষত-

সম্পর্কের শেষ সায়াহ্নে আমার আকুতির কাছে তুমি নত; আমি বেহায়ার মত !


শোকার্ত হয়ে কষ্টের সমুদ্রে ডুবে আছি সেই যে কবে গেলে রেখে-

মাঝে মাঝে তামাশার স্বরে ডাকো সুনীল আকাশ থেকে!

থেকে থেকে কেঁদে উঠি জল ভরে নয়নে; লাগে যে মায়া

বৃষ্টিভেজা সকাল ছয়টায় সেই যে দেখেছিলাম তোমার ছায়া।

এরপর আজও দেখা নেই। তবুও মনে হয় তুমি আমার পাশে’ই।

তোমার চিন্তা নেই? যেই তোমাকে একটা দিন না দেখে থাকতে পারতাম না

সেই তোমাকে সময়ের বদলে সাত কোটি বছর দেখি না।



অবহেলা


হিমশীতল, নিজস্ব সংসারে আমি ফিরে যাচ্ছি

প্রেম শোকে আমি কাতর, তোমায় শেষ দেখা দেখছি।

ভালোবাসা যাকে খায় চুষে চুষে খায়-

ভালোবাসা তপ্ত মায়া; বৃষ্টিতে ভিজায় আর রোদ্দুরে শুকায় !


আমি বিহীন ঠিকই সজ্জিত তোমার ঐতিহাসিক শহর

তোমার শোকে আমি পাথর অথচ তুমি মহানন্দে। তুমি স্বৈরাচারী ও স্বার্থপর!

তসবির মতো সারাক্ষণ তোমার-ই নাম জপি

অবহেলায়,বেদনায়, ভালোবাসায় আমি এক নিরেট পাপী

ঘুরে ফিরে তোমাকে পড়ি, তোমাকেই নিয়ে হাঁসি-

তুমিই আমার আখেরি; তুমিহীনা আমার গগণ মরুর শশী।

রাত জাগা পাখির ন্যায় দীর্ঘস্থায়ী নিদ্রাহীন

তোমার অভাবে অন্ধতার রাহু গ্রাসে আমি আজ বিমলিন !




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট