সানাউল্লাহরা টিকে থাকে
উলুল আমর অন্তর
‘মিষ্টি নিয়া আসো জামাই, তোমার বেটাছৈল হইছে!’ শ্বাশুড়ির কথা শুনেই আলহামদুলিল্লাহ বলে ওঠে সানাউল্লাহ। কিছুক্ষণ পর বউ ও সদ্যোজাত পুত্র সন্তানের কাছে যাওয়ার অনুমতি পায়। নাদুস-নুদুস বাচ্চাটা কোলে নিয়ে তার কানটা মুখের কাছে এনে আজান দেয় সানাউল্লাহ। এটা সানাউল্লাহর দ্বিতীয় পুত্র। টানা দুই বছরে দুই সন্তানের জনক হলো সে।
সানাউল্লাহর প্রথম সন্তানের জন্ম অবশ্য ক্লিনিকে হয়নি। শ্বশুরবাড়িতেই ধাত্রী ডেকে বাচ্চা জন্মানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এবারও তাই করা হতো, কিন্তু আয়েশা কাল রাতে হঠাৎই প্রচ- ব্যথায় কাতরানো শুরু করলে তাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে সানাউল্লাহ সকালেই এখানে চলে আসে।
সানাউল্লাহ বাচ্চাটার কপালে চুমু খেলো। ডাক্তার আপা এসে সানাউল্লাহর শাশুড়িকে বললেন, ‘মেয়েকে বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে দিয়েছেন। তার উপর এত তাড়াতাড়ি দুটা বাচ্চা জন্ম দিতে হলো। মেয়েটাকে কি মেরে ফেলবেন নাকি আপনারা?’ কথাটা শুনে সানাউল্লাহ লজ্জা পায়। মনে হয়, সে একটা কামুক- এটাই বলতে চাইছেন ডাক্তার আপা। ‘আপনাদের সমস্যা হলো নিজেদের মেয়েকে শিক্ষার সুযোগ দিবেন না, কিন্তু সে অসুস্থ হলে কিংবা বাচ্চা প্রসবের সময় আপনাদের মহিলা ডাক্তার না হলে চলবে না। এত মহিলা ডাক্তার কই থেকে আসবে? নিজের মেয়েকে তো ডাক্তার হতে দিবেন না।’ ডাক্তারনীর লেকচারে বিরক্ত হয় সানাউল্লাহ, বেরিয়ে আসে রুম থেকে।
পরদিন বউ ও দুই পুত্রকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে সানাউল্লাহ নিজের বাড়ি ফিরে আসে। শ্বশুর অবশ্য কয়েকদিন থাকতে বলেছিলেন কিন্তু সে রাজি হয়নি। বলেছিল,‘পৌরসভার চাকরিডা একটু মন দিয়া করিচ্চি আব্বা, যাওয়া লাগবে।’ শ্বশুর আর বাধা দেননি, বরং খুশি হয়েছেন। পৌরসভায় সানাউল্লাহর খ-কালীন কাজটার আসলে কোনো নাম নাই। সকাল বেলা যায়, মেয়রের কাগজপত্র, চিঠি এখানে সেখানে পৌঁছে দেয়, অতিথিদের চা নাস্তা খাওয়ায় এই আরকি। আজ ছয় মাস ধরে এ কাজ করছে সানাউল্লাহ। বেতন কোনো মাসে পায়, কোনো মাসে পায় না।
সানাউল্লাহ বিয়ে করেছে তিন বছর আগে। বিয়ের পেছনের গল্পটা বেশ নাটকীয়। সে গল্পটা বলতে গেলে আরও পেছনে গিয়ে সানাউল্লাহর প্রথম যৌবনের গল্প বলা দরকার। সানাউল্লাহ তখন হাইস্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ত। পাড়ার মসজিদ থেকে শখের বসে তিনদিনের তাবলিগে গেল সে। সেই তিনদিনের তাবলিগ সানাউল্লাহর জীবনটাই বদলে দিল। তাবলিগের প্রেমে পড়ে যায় সে। প্রতি মাসে একবার করে তাবলিগে যেতে লাগল, নিয়মিত তাহাজ্জুদসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে লাগল, আর এক কাওমি মাদ্রাসায় গিয়ে শুদ্ধ উচ্চারণে কুরআন শিক্ষা করতে লাগল। লম্বা দাড়িও রাখল। আল্লাহর নবীর সুন্নাত মেনে সানাউল্লাহ মাথা ন্যাড়া করে ফেলল। তাবলিগে গিয়ে ‘হেকায়েতে সাহাবাহ’ বইতে সাহাবাদের কষ্টের জীবন আর শত প্রতিকুলতার মাঝে ঈমান ও আমল ঠিক রাখার কাহিনী পড়ে সানাউল্লাহ মুগ্ধ হয়ে গেল। দ্বীনের প্রকৃত শিক্ষা সানাউল্লাহকে এতটাই বেচয়েন করে দিল যে স্কুলের লেখাপড়ায় সে আর মনই বসাতে পারল না।
সানাউল্লাহর পিতা হাসমত উল্লাহ ব্যবসায়ী মানুষ, ধর্ম-কর্মে তার মন কোনোদিনই ছিল না। একমাত্র পুত্রের এই বৈরাগ্য তার সহ্য হল না। সানাউল্লাহর এসএসসি পরীক্ষার তিন মাস বাকি। কিন্তু পড়াশুনা বাদ দিয়ে সে দিন রাত মসজিদে তালিম আর মানুষকে দীনের দাওয়াত দিয়ে বেড়ায়। সানাউল্লাহ তখন অন্য জগতের মানুষ, বস্তুজগতের সবকিছু তার কাছে তুচ্ছ। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পিতা পুত্রের মধ্যে ঝগড়া হতে লাগল।
হাসমত উল্লাহ একদিন রাগ সামলাতে না পেরে থাপ্পড় মেরে বসলেন পুত্রকে। সানাউল্লাহ কিছু না বলে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। চার মাস পর সে যখন বাড়ি ফিরল তখন সে আর কিশোর সানাউল্লাহ নেই, পরিণত হয়েছে এক তাবলিগী হুজুরে। বৃদ্ধ হাসমত উল্লাহ সানাউল্লাহকে আর সরাসরি কিছু বলার সাহস পান না, আত্মীয়-স্বজনকে অনুরোধ করেন পুত্রকে বুঝাতে। খালা, মামা, চাচারা এসে সানাউল্লাহকে বুঝান- ইসলাম তো লেখাপড়া করতে নিষেধ করেনি। আল্লাহর নবী বলেছেন, জ্ঞানার্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও। কিন্তু সানাউল্লাহ দীনি এলেম ছাড়া অন্য কিছু শিখতে নারাজ। এক বছর ধরে অসংখ্য মানুষের উপদেশ শুনে তাবলিগকর্মী এক স্কুল মাস্টারের পরামর্শে শেষমেশ সানাউল্লাহ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেই আবার পড়াশুনা ছেড়ে দিল সানাউল্লাহ।
হাসমত উল্লাহ ধরেই নিলেন- তার পুত্র শেষ হয়ে গেছে, সে জগতসংসারের কোন কাজে আর আসবে না। অথচ একমাত্র সন্তানকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল তার! হলো না, কিচ্ছু হলো না। হাসমত উল্লাহ শান্তিতে আর মরতেও পারবেন না। প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে এইসব অপ্রাপ্তির গল্প, মনের দুঃখের কথা একমাত্র বন্ধু নুরুলের সাথে শেয়ার করেন তিনি। একদিন আলাপের মধ্যে নুরুল বলে উঠলেন, ‘বেটারে বিয়া দিয়া দাও দোস্ত, সংসারের প্যারায় পড়লে এইসব পাগলামি দৌড় দিয়া পালাবে।’
বুদ্ধিটা মনে ধরে হাসমত উল্লাহর। সেদিন রাতে খাওয়ার পরে পুত্রকে ঘরে তুলে দরজা লাগিয়ে দিলেন তিনি। তারপর সানাউল্লাহর হাতদুটো চেপে ধরে কাঁদতে লাগলেন। শক্ত মনের পিতাকে হঠাৎই এভাবে কাঁদতে দেখে সানাউল্লাহ অবাক হয়। হাসমত উল্লাহ বলেন,‘ বাপ তোর কাছে জীবনে কিছু চাইনি, আজ হামার একটা কতা রাখ। তোর কোনো কামে হামি বাধা দিমুনা, তুই খালি একটা বিয়া কর।’
সানাউল্লাহ না করতে পারেনি, তবে একটা শর্ত ঠিকই জুড়ে দেয়- হাসমত উল্লাহকে আগে তাবলিগে গিয়ে তিন চিল্লা দিয়ে আসতে হবে, তবেই সানাউল্লাহ বিয়ের পিঁড়িতে বসবে। হাসমত উল্লাহর রাজি না হয়ে উপায় ছিল না। পরের সপ্তাহেই তাবলিগে চলে যান তিনি।
হাসমত উল্লাহ তিন চিল্লা পুরো করে ফিরে আসলে অনেক দেখেশুনে করিমগঞ্জের মকসুদ আলীর কন্যা আয়েশা সিদ্দিকার সাথে বিয়ে হলো সানাউল্লাহর। আয়েশা বয়সে ছোট হলে কি হবে, খুবই গুণবতী মেয়ে। কুরআনে হাফেজা, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির খেদমত করে, নামাজ কালাম ঠিকমত পড়ে, পর্দা ছাড়া পরপুরুষের সামনে যায় না- এমন দ্বীনদার বধু পেয়ে সবাই খুশি।
বিয়ে যখন সানাউল্লাহ করেছে, সংসারের দায়িত্বও তো নিতে হবে। সানাউল্লাহর একটা কাজের দরকার পরলো। কাজের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেলো সানাউল্লাহর প্রথম পুত্রের জন্মের পর।
হাসমত উল্লাহ তার চাচাতো ভাই ও সরকার দলীয় রাজনীতিক সাত্তারকে অনুরোধ করলেন সানাউল্লাহকে একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে। সাত্তার সাহেব পৌরসভার মেয়রকে বলে সানাউল্লাহকে কাজে লাগিয়ে দিলেন। তবে চাকরিটা ক্ষণস্থায়ী। পার্মানেন্ট চাকরির জন্য নিয়োগ পরীক্ষার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর নিয়োগ পরীক্ষা হলেই যে চাকরি হবে তা তো নয়। প্রার্থী তো সানাউল্লাহ একা নইয়। পিয়নের চাকরির জন্য অনেক লোকই দশ থেকে পনেরো লাখ টাকা দিতে এক পায়ে খাড়া।
মেয়রের রুমে ঢুঁকে সালাম দিল সানাউল্লাহ। ওর দিকে না তাকিয়েই মেয়র বললেন, ‘তোমার নিয়োগের কাজ তো শুরু হইছে সানা। এবার পড়াশুনা কইরা ভাল প্রিপারেশন নাও।’ মেয়রের রুমে সাত্তার চাচাও ছিলেন। তিনি সানাউল্লাহকে বললেন, ‘শোন, এই চাকরির জন্য ছয়জন টাকা দিছে, তুই দিছিস দশ লাখ, পনেরো লাখ দেওয়া লোকও আছে। কিন্তু চাকরিডা তোরই হবে। তবে পরীক্ষা দিলে তুই তো ফার্স্ট হবার পারবি না।’
সাত্তার চাচার কথা শুনে সানাউল্লাহ শঙ্কিত হয়। ফার্স্ট না হতে পারলে কি চাকরিটা হবে না?
ওর কপালে দুশ্চিন্তা দেখে মেয়র ও চাচা দুজনেই হাসলেন। চাচা বললেন, ‘ পাঁচ হাজার টাকা দিয়া একটা জ্ঞানী লোক ঠিক করছি। তোর পাশে বসে পরীক্ষা দিবে। তুই খালি তার খাতা দেইখা লিখবি, পারবি না?’
সানাউল্লাহ মাথা ঝাঁকায়।
২। সানাউল্লাহ পরীক্ষার হলে বসে আছে। তার পাশেই বসেছে ভাড়া করা লোকটা। পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে দুজন একসাথে নাস্তা করেছে। সাত্তার চাচা সানাউল্লাহকে বারবার বলেছেন, লোকটার খাতা দেখে সবগুলা প্রশ্নের উত্তর লিখে আসতে হবে। কিন্তু সানাউল্লাহর মন মানছে না। এ যে পাপ! নকল করে চাকরি নিয়ে কি সুখী হতে পারবে সানাউল্লাহ ! আজীবন হারাম টাকায় খেতে হবে যে! ধানী জমি বিক্রি করে আব্বা যখন দশ লাখ টাকা মেয়রের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তখনও সানাউল্লাহর মনে পাপবোধ জাগ্রত হয়েছিল। ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে আপত্তিও জানিয়েছিল সে। তখন সাত্তার চাচা বললেন, এইডা ঘুষ না বাপ, ব্যবসা। টাকা ছাড়া কোন চাকরিই হয় না বাংলাদ্যাশে। চাকরিডা যারা বিক্রি করবে, আর যে কিনবে তাদের মধ্যে দামাদামি হয়। যার টাকায় চাকরি দেওয়ার লোক খুশি হবে, তার কাছেই বিক্রি করবে। এইডা ঘুষ না।’
সানাউল্লাহর বাধা দেওয়ার উপায় ছিল না। তাকে না জানিয়েই আব্বা জমি বিক্রি করে মেয়রকে দিয়েছিলেন। তাছাড়া আব্বার বয়স হয়েছে, আগের মত আর খাটতে পারেন না। সানাউল্লাহও দুই বাচ্চার বাপ হয়েছে। সংসারের হাল ওকেই ধরতে হবে। চাকরিটা ওর বড় দরকার।
আল্লাহর অলৌকিক শক্তির উপর সানাউল্লাহর অগাধ আস্থা। তার মনে ক্ষীণ আশা কাজ করছে- নকল করে চাকরি নেওয়ার পাপ থেকে আল্লাহই ওকে বাঁচাবেন । যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। হয়ত দেখা যাবে যে, সানাউল্লাহ কারো খাতা না দেখেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে!
পরীক্ষা শুরু হলো। সানাউল্লাহ এক নজরে পুরো প্রশ্নপত্র পড়েই হতাশ হয়ে পড়ল। পাঁচটা প্রশ্নেরও সঠিক জবাব লিখতে পারবে কিনা সন্দেহ ! উপায়ন্তর না দেখে ভাড়া করা লোকটার খাতার দিকে তাকালো। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা কে? জবাব সানাউল্লাহর জানা, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের বানান নিয়ে তার দ্বিধা আছে। তাই লোকটার খাতা দেখে দেখে লিখলো। পরের প্রশ্ন -বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি কি কি? প্রশ্নটা সানাউল্লাহর মাথার উপর দিয়ে গেলো। পাশে বসে থাকা লোকটার খাতার দিকে তাকাতেই কেউ একজনএসে সানাউল্লাহর খাতা তুলে নিলো। সানাউল্লাহ অবাক হয়ে কোট টাই পরিহিত লোকটার দিকে তাকায়।
রাগী গলায় লোকটা বলে,‘ কি করছেন আপনি? হুজুর মানুষ হয়ে নকল করতে লজ্জা করে না?’
সানাউল্লাহর মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বেরুলো না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ পর খাতা নেওয়া লোকটা বললো , ‘আসেন’। সানুল্লাহকে তুলে নিয়ে গিয়ে একেবারে পেছনের বেঞ্চে বসানো হলো। লজ্জিত সানাউল্লাহ প্রশ্নপত্রের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু চোখে কোনো লেখা দেখতে পাচ্ছে না সে। পাপ করলে আল্লাহ তো শাস্তি দিবেনই। একই সঙ্গে পাপের ভয় ও লজ্জার মিশ্র অনুভূতিতে কান্না পেলো সানাউল্লাহর। বিমর্ষ চিত্তে সে পরীক্ষার এক ঘণ্টা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু সময় যেন আর ফুরাতে চায় না।
মাগরিবের নামাজের পর মুনাজাতে অনেকক্ষণ ধরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইল সানাউল্লাহ। মন শান্ত হলে বাড়ি ফিরে দেখল - আব্বার সাথে বসে সাত্তার চাচা বিস্কুট চানাচুর খাচ্ছেন। ওকে দেখেই সাত্তার চাচা বলে উঠলেন, ‘ শোন, কাম তো গাধার মতই করছিস। ম্যাজিস্ট্রেট তোর খাতা না হয় নিছে বুঝলাম, কিন্তু তুই দশ নম্বরের এন্সারও নিজে নিজে করবা পারলি না ! সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের একজনের নামও তো লিখতে পারিস নি। সবচেয়ে খারাপ পরীক্ষা মনে হয় তুই ই দিছিস।’
সানাউল্লাহ জবাব দেয় না।
বাটি থেকে এক মুঠো চানাচুর মুখে ঢোকালেন সাত্তার চাচা। কিছুক্ষণ চিবিয়ে বললেন , ‘যা হবার হইয়া গেছে। ম্যাজিস্ট্রেটকে ম্যানেজ করছি। পঞ্চাশ হাজার টাকা শালারে খাওয়ান লাগবে। না হলে ভাইবায় তোক আটকাবে।’
‘চাকরিডা হামি করমু না চাচা’।
কি! একই সঙ্গে চেঁচিয়ে আব্বা ও সাত্তার চাচা।
আব্বা বললেন, ‘ দশ লাখ টাকা দিছি, এখন তুই চাকরি করবি না? বউ বাচ্চারে খাওয়াবি কী? টাকা পাবি কই?’
সানাউল্লাহ দৃঢ়কণ্ঠে বলে, ‘জমিতে হাল বইয়া খামু আব্বা। অনেক পাপ করছি, আর না। ওই চাকরির যে যোগ্য সেই করুক, হামি না। হামি জমি চাষ কইরা সংসার চালামু।’
সানাউল্লাহ প্রত্যুত্তরের অপেক্ষা না করেই ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে। ওর মনে এখন মুক্তির আনন্দ।