অক্ষরমালা
মাজেদুল হক
অপ্রাসঙ্গিক চাওয়া-পাওয়া
অনেক প্রশ্ন অমীমাংসিত থেকে যায়
থেকে যায় কাগজের ভাঁজে ভাঁজে
কিংবা পাটাতনের নিচে
কিছু অপ্রাসঙ্গিক বোধহীন চাওয়া-পাওয়া।
হয়তো এমন করেই কেটে যাবে দিন-ক্ষণ-সময়
লালিত্য মাখানো সোঁদা গন্ধ গায়ে মাখিয়ে
বিন্দু বিন্দু করে গড়ে তুলবো অনাবাদী দু:খের বসতি।
কষ্টের ফাঁক গলে গলে উঁকি দিয়ে যাবে পরম্পরা
তমসার শৈল্পিক ছায়া।
অর্ধমৃত ভাবনার জলোচ্ছ্বাস
চার দেওয়ালের সেলে আটকে থাকা নিজের বৈভব
অসহিষ্ণুতার সমস্ত গ্লানি কপোল বেয়ে
প্লাবিত হয় অর্ধমৃত মনের উঠোনে।
প্রাত্যহিক বিত্ত, প্রাচুর্যের অহঙ্কার, নির্বোধ, নিলর্জ্জ
উঠকো ঝামেলাগুলোর শেকড় ছড়িয়ে গেছে
ভূবনডাঙ্গার করকমূলে।
প্রাণোচ্ছ্বল মনের ভেতরকার
ওয়ারড্রোব এর অবকাঠামোগুলো ভষ্মিভূত, বিকারগ্রস্থ
ঘুণ পোকার রাজত্বে সয়লাব।
ক্লান্ত-শ্রান্ত, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে অনুসৃত ভাবনার
অথৈই জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যাচ্ছি।
অস্তিত্বের কারসাজি
দু’চোখের জল আর বুকের গভীরের চাপা আত্মনাদ
লুকিয়ে রাখার অভিনয় করাটা বড় ট্রাজেডি।
তারপরও মূল কাহিনী, দৃশ্যের প্রেক্ষাপটের কাঁধে ভর করে
চোখ-মুখ বুজে ঘোড়া গাড়ীর মতো কর্কিয়ে কর্কিয়ে পথ চলি
কোন এক সময় মস্তিষ্কের ভেতর শুরু হয় হাঁতুর পেটানো শব্দ।
তখন ভুলের মধ্যে দিয়ে একাকী পথ চলি।
নিজেকে ভাসমান খড় কুটোর মতো মনে হয়
নিজেকে রক্ত মাংসের মানব ভাবতে পারি না
নিজেকে সঁপে দেই দুঃখ নদীর অগাধ জলে
নিজেকে প্রতিটি ক্ষণ অগোছালো মনে হয়
নিজেকে নিজের মতো আর ভাবতে পারিনা
নিজেকে নিজের আয়নায় দেখতে করুণা হয়
নিজেকে সঁপে দেই দুঃখ নদীর অগাধ জলে
নিজেকে নিজের অস্তিত্বের সাথে যুদ্ধ করি
নিজেকে নিঃশেষ করে দেবার মন্ত্র পড়ি।
অবরুদ্ধসময়ের ব্যাকরণ
কংক্রিটের বিবর্ণ দেয়ালে পেরেকবিদ্ধ মানবতার
বিলবোর্ডে ঝুলে আছে বিমূর্ত ভাবনা।
ভাবনার নৈতিকতার বাঁধন ছিঁড়ে বেদনার্ত হয়ে
দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে নিদাঘ চিতায়
অবরুদ্ধ সময়ের ব্যাকরণ।
অবসাদ, সংবেদনশীলতার মধ্যে জিঁইয়ে থাকা
বোধের পাঁজরে এঁটে থাকে মিহি ধূলোর আস্তরণ।
ক্লান্তিহীন, ঘুমহীন রাত্রির চৈতন্যে টোকা দিয়ে
ঘেটে যাই ভগ্নাকৃত হৃদয়ের গভীরতা।
প্রচ্ছন্ন নীরবতার রকমারী পসরা সাজিয়ে
বানের জলের মতো ভেসে যাই অজানা গন্তব্যে।