শব্দমালা : অনন্ত পৃথ্বীরাজ

    অলঙ্করণ : জাহাঙ্গীর হোসেন বাদশাহ
 

শব্দমালা

অনন্ত পৃথ্বীরাজ


 

সেন্টমার্টিন


সূর্যাস্তের পেছনের গল্প পাঠের পর মনটা বিষণ্নতায় ভরে ওঠে

কোথায় পাই তুষারের হিমেল স্পর্শ!  রাত নিঝুম বড্ড একাকী লাগে।


যে দেশে পাখিদের বিরহ থাকে না; সেখানে বেদ, বাইবেল, কুরআন নেই!

যে তরিতে উঠেছিলাম আমরা সেটা মাঝিবিহীন নিরুদ্দেশের ভেলা

চকিত চাহনিতে শুধু সমুদ্রের স্বাদ; অক্ষির লোনাজলে চলে বেহুলা ভাসান।


নিমগ্ন বেদনার দুঃসহ সময় আঁকড়ে দুঃখ পুশে কোনো লাভ নেই।

ব্রজেন দাশের আগে-পরে কত শত সামুদ্রিক পাখি পাড়ি দিয়েছে বাংলা চ্যানেল


সেন্টমার্টিন আর কত দূর...!  

 


জিয়োনকাঠি


নিশিরাতে শিশুর কান্না কারও ভালো লাগে না-


কোনোদিন ভাবে না কেউ অন্তরঙ্গ সঙ্গমের পরিণতি

সন্তান; মিলনানন্দের পর অনাবিল প্রশান্তির পরশ 

সম্পর্কের বন্ধন দু’জন মানুষকে আরও গাঢ় করে


উত্তরাধিকারের প্রশ্নে রক্তের স্রোত বংশ পরম্পরা 

কেবল প্রবাহিত হয় যুগ থেকে যুগান্তরে...



বাউকুড়ানি


এক বছর পর তোমাকে দেখলাম-

মনে হলো, কত শত যুগ কেটে গেছে 

নিজেকে আঁড়াল রেখে কী সুখ পাও! 


তোমার শুভ্রতায় ধুয়ে যায় মনের পঙ্কিল

স্নিগ্ধ হাসি শ্বেত; পায়রার মতন মুগ্ধতা ছড়ায়

হৃদয়ের কাঁপন কেউ দেখে না- 

অনুভবে বুঝে নিও জড়তার নীল। 


তোমাকে দেখার পর যাইনি আর শোভিত কাননে 

তোমার কেশের ঘ্রাণ আমার চারপাশ মোহিত রাখে। 

হ্যালুস বলে যে অপবাদ মোরে দিয়েছে শিরে; 

বাউকুড়ানির ঘোর কেটে গেলে- 

নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে তো!



আল্টামর্ডান


বিমূর্ত ভাবনা, পোস্টমর্টেমের মত পোস্টমর্ডানিজম 

বিক্ষিপ্ত কতগুলো অঙ্গপ্রতঙ্গ দিয়ে কী ভেবেছিলে!

সমুদ্রস্নানে জ্বালা জুড়াবে? তবে নদীসঙ্গম করে-

 সমুদ্রমন্থনে যাও, দেখবে পৃথিবীর উলঙ্গ চেহারা।

লোপামুদ্রার চাঁদ তুমি, চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ বুঝে নিও 

পৃথিবীর সব জীবের শ্রেষ্ঠ অঙ্গ নিয়ে দেহের অবয়ব 

তুমি কী মানবী হে, ষোড়ষী নারী! আমি চিনি না তোমায়; 

চিনি না এ আধুনিক সময়, বিবেক বর্জিত বেহায়া নগরসভ্যতা।



হারিকেন


এককালে রাতে গ্রামে আঁন্ধার থাকত; বিদঘুটে অন্ধকার-

সেই আঁধারে আলো হয়ে আসতো জোনাকি মেয়েরা। 

তারপর এলেন রাজা রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বেগম রোকেয়া।


তখন থেকে এখানে একটু করে কুপি জ্বলতে শুরু করেছে। 

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ইংরেজ রাজ কোষাগারের লোভ ছাড়নি।


জোনাকি থেকে সূর্য আলো ধার নিয়ে ছড়িয়ে দিল বিশ্বময় 

তারপর স্বামীজি এলেন, নবাব সলিমুল্লাহ এলেন, নাথান কমিশন হলো।


বাবা কোলকাতা থেকে একটা হারিকেন কিনলেন।

ঢাকার রেসেকার্সের পাশে হারিকেল জ্বালানো হলো।


সেই আলোতে একটা মোটা ফ্রেমের চশমায়

বাবা কাগজের জমিন দেখে পড়তেন:

‘‘কাআ তরুবর পাঞ্চবি ডাল

  চঞ্চলঅ চি-এ পৈঠা কাল!!



জুয়াড়ি


এই বর্ষায় ধুয়ে দেবো যত রক্তের দাগ

তেল চিটচিটে বালিশ অথবা কর্দমাক্ত জামা।

রূপোর গ্লাসে হুইকি ঢেলে দাও। 

তোমার কোমরে কার যেন হাত নড়াচড়া করে।


নৃত্যের তালে তালে জলে নেমেছি 

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার পর কে বীণ বাজায়

পিঁপড়ের রাজনীতিও তোমরা বোঝ না। 


হাতিকে পরাভূত করে এবার গডজিলা তারা গিলে ফেলতে চায়; 

পাহাড়ের কান্না যেন শোকের নদী।


একটি রাজনৈতিক ইফতার দেবো ভাবছি-

বাংলাদেশ, ভারত ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে 

জমজমাট আড্ডা হবে।


তোমার কোমরে কার যেন হাত অবিরত নড়াচড়া করে!!



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট