পদাবলি : ০১

 



হলাহল 

সা’দ সাইফ 


মনকে তো আমি বেঁধে রাখতে পারি না

সে তার মতই ভাবছে, 

চ-ালের মত জীবন।

অচ্ছুৎ;

মন খারাপের দিনে এক আকাশসম দুঃখ আমাকে স্ফীত পীড়া দিয়ে যায়।


ডুকরে ডুকরে ব্যথা উগলে উঠছে।

চলমান পা-ও ধাবমান মড়ক।

কী থেকে কী হয়ে যাচ্ছে নির্নিমেষ, 

চোখ খুলতেই কোণে এক ছটাক বৃষ্টি। 


হয়ত পিঁজরাপোলের কেউ, 

গ্রীবায় টান দিয়ে কেউ কেন নিয়ে যায় আস্তাবলে!

জোলো স্মৃতি মস্তকে গেঁথে থাকে,

আবার ধর্তব্যে না রাখার পণও ব্যর্থ। 


ছ্যাঁত করে ওঠা মন,

ব্যথা দিয়ে যাওয়া লাগাতার ঢাল ঠেকাতে অপারগ, 

অদৃশ্য শরে বিদ্ধ একটি মন-মন্দির।

আর আমি?

আর আমি সেই মন-মন্দিরের সমানুপাতিক সমার্থক।




ব্যাগ্রাউন্ড

নূরে জান্নাত


তোমার উঠানের শ্যাওলা জানে

কতোবার সেখানে স্লিপ কেটে

পড়েছিল বয়ঃসন্ধির সেই মুখ

যে মুখে তুমি নীল মেঘ সাদা বৃষ্টি

ঘিয়ে সংসার আর লাল রঙের

ঘুম এঁকেছিলে।

ধূলোমাখা পথের উঁচু নিচু কাঠামো

লজ্জাস্থানের মতো লুকিয়ে রাখে 

সাইকেলের পেছনে তার স্কুল যাওয়ার স্মৃতি!

আমি জানি.. ভুট্টা ক্ষেতে দাঁড়িয়ে থাকা কাকতাড়–য়ার যেমন অতীত থাকে

তেমন অতিত ছিল তোমার 

ছিলো আমারও অধর্ষিত ডালিমের চারা!

তবুও ভুলবসে আমরা জলের ক্যানভাসে জীবনে ডিঙ্গি ভাসিয়ে

ফিরে যায়;

তুমি যাও ফাইভে পড়া ডাঙ্গর পেঁপে গাছটার কাছে

আমি যায় দাউ দাউ করে জ্বালিয়ে দেওয়া বুক শ্মশানে 

পড়ে থাকা ছাঁইয়ের কাছে!

যখন আমাদের শোদ ফিরে আসে

রেশমের কৌটা খুলে মাতি ভালোবাসাবাসিতে

চোখের মলাট উলটে পড়ে নিই

যা হবার, যা হয়েছে, যা হয়ে যাক

তবুও আমাদের দু ডালের পাখি হবার সাধ্য নেই!



শূন্যতা থেকে যায়

মজনু মিয়া 


কত জল জলের উপর এসে আচড়ে পড়ে

কত বালি,ধূলা স্তরে স্তরে উপরে সাজায়,

আকাশের গায়ে মেঘ জমে,

পথের পরে পড়ে পায়ের পদাঘাত,

তব্ওু শূন্যতা থেকে যায় জনম জনম!


একদিন ভালোবাসা ছিলো ভাবতে অশ্রু ঝরে

বেদনারা হৃদমাঝারে কুঠারাঘাত করে,

তবুও যার জন্য ক্ষত সে পূরণ করে না!


গর্ত করে মাটি সরিয়ে নিলে যে গর্ত হয়

তাতে পূরণ করার চেষ্টা সেই মাটিতে বৃথা

এখানে শূন্যতার সৃষ্টি হয় তা পূরণ হয় না।


মানুষের ভেতরে ক্ষত বা শূন্যতার সৃষ্টি হয়

আর তা অপূরনীয় রয়ে যায়!


জনম মোহ 

নাসিমা হক মুক্তা 


নক্ষত্রের গায়ে আধুলি মাখে 

কিছু অভিমানের জল তৃষা

মনের চৌকাঠে ডুবুরি হয়ে মেদুর মৌতাত 

গলা উচু করে আকাক্সক্ষার যাত্রী- পোষাকে

ভোগ-পথ্য নিষ্প্রাণের মত দীর্ঘতম অপেক্ষায় 

ডাগর- ডাগর চোখে কাক- কাক করে 

গাছ থেকে ডগার সারস! 


ফেরার পথে পা আটকে ধরে 

এক টুকরো- জনম মোহ 

যার পর্দায় প্রেমহীন সোনা মাছি নেশার উজ্জ্বলে

টুকরো টুকরো বরফ গুলানো মুখে 

নিভৃতে- জীবন ছাইপাঁশ, জীবন ছাইপাঁশ বলে

চাষ করে অতৃপ্তির চিবুক

পরচুলা সুখ লুটোপুটি খায় 

অমানিশার অন্ধকারে 


প্রেমহীন সংসার মৃত্যুর চেয়েও যন্ত্রণা।


ফিলিস্তিন 

মুহিব্বুল্লাহ ফুয়াদ 


তোমার বুকে বোমা নিক্ষেপ হলে, আমি ছিন্নভিন্ন হই

তোমার কোলের কোনো শিশু স্তব্ধ হয়ে গেলে, আমার হৃদয় হাহাকার করে ওঠে 

তোমার বোবা চিৎকারে, আমি ভেঙে পড়ি

তোমার উদরে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকা দেয়াল ধ্বংস হলে, 

আমি নিঃশেষ হয়ে যাই

কারণ, 

তুমি’ই আমি- আমি’ই তুমি

তুমি আমাতেই মিশে আছো প্রিয় ফিলিস্তিন।





শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট