অবুঝ দিনের গল্প
যাকারিয়া মুহাম্মদ
বারান্দায় চেয়ার টেনে বসে আছি। ছোট বাটন ফোন দিয়ে টেক্সটে কথা বলছি। কার সাথে কথা বলছিলাম ঠিক মনে নেই। সূর্য মাথার উপর আগুন ঢালছে তখন। ছোট বোন খেলনার চুলায় ডেগ বসিয়ে কী যেন রান্না করছে। আম্মা ওকে দেখে রাখতে বলে গেলেন। গরমে আমার কপালের ঘাম কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে ফোঁটা ফোঁটা করে। উঠোনের রেন্ট্রি গাছের ডালে একটা ঘুঘু ডেকে যাচ্ছে একা একা, কী করুণ তার সেই ডাক। আমি টেক্সটের রিপ্লাই দিচ্ছি। আর এদিকওদিক চোখ বোলাচ্ছি আলতো করে ।
গতকালের কথা ভাবছিলাম। চাচির বোনের মেয়ে বেড়াতে এসেছে। নৌকা দিয়ে আমিই তাদের গাঙ পার করে এনেছি। তখন সন্ধ্যা নেমে আসছিল। আবছা অন্ধকারে নেকাবের ভেতর দিয়ে আমি খেয়াল করছিলাম মেয়েটা বারবার আমাকে দেখছিল। লজ্জায় এতটুকু হয়ে যাচ্ছিলাম সেইসময়। চাচার ঘর ও আমাদের ঘর পরস্পর মুখোমুখি। এইসব ভাবতে ভাবতে চোখ পড়ল চাচার ঘরের দিকে। দেখি, দরজার কাছে টুল পেতে কী নির্লজ্জের মতো মেয়েটা আমাকে দেখছে। আমি সঙ্কোচে, দ্বিধায় দোদুল্যমান। আশকারা পেয়ে কিছুটা সাহস দেখাতে আমি তার চোখে চোখ দিলাম। চোখ চোখে ডুবে যাচ্ছিল। স্থির। আমি তলিয়ে যাচ্চিলাম কোথাও। একটা ঘোরলাগা আবহ আমার চারিদিকে বিরাজমান। বেশিক্ষণ যায়নি, অকস্মাৎ দেখি চাচি মেয়েটার পেছনে দাঁড়িয়ে, আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ত্বরিত চোখ ফিরিয়ে নিলাম। পুরো শরীর কেঁপে কেঁপে ওঠল। বুকের ভেতর প্রেম আর শঙ্কা একসাথে উঁকি দিল। ওঠে রুমে চলে গেলাম। রেন্ট্রি গাছের ডালে সেই ঘুঘুটার পাশে আরেকটা ঘুঘু এসে বসল।
ছাতক, সুনামগঞ্জ