জলের ঝলকানিতে
মিলন ইমদাদুল
জলের ঝলকানিতে
লাফিয়ে ওঠে ইলিশের দল
শরীরে যার জলের স্পর্শ
জলই তার একমাত্র প্রেম।
আষাঢ় মাসে গাঙে থইথই উঠোন ভরা পানি
কারেন্ট জালের ফাঁকে ফাঁকে ইলিশের ফালি
আবুল মাঝি বেজায় খুশিমন করে উচাটন
আম্বিয়া বিবির উঁকিঝুকিতে কমলার হাতহালি।
নির্বাক শব্দ চাষি
নুশরাত রুমু
একটি কবিতা, ফেনিল স্নায়ুতে যার উত্তপ্ত অঙ্কুরোদগম ..
একটি কবিতা শব্দমালা খোঁজে ভূমিষ্ঠের অপেক্ষায়,
কলমের শরীর বেয়ে ঝরে পড়বে তৃষিত কাগজের বুকে..
একটি কবিতা, যার শব্দবাণে জেগে ওঠে ঘুমন্ত বিবেক,
মননশীলতায় ধুয়ে যাবে পীড়িত মনের পঙ্কিলতা,
শুদ্ধ হবে মুকুলিত নিষ্পাপ ভাবনাগুলো!
তেমন একটি কবিতা লিখতে চাই।
তারুণ্যের দীপ্ত পদশব্দে কবিতারা উদ্ভাসিত হতে চায়,
হায়! স্লোগানের টুঁটি চেপে আছে শোষকের কালো থাবা।
দামালের মুষ্টিবদ্ধ হাত কুঞ্চিত করতে চায়
সংঘবদ্ধ কুটিল আশীর্বাদ,
শানিত প্রতিধ্বনি বিবর্ণ যন্ত্রণায় কাঁতরায় রাজপথে..
বন্ধ্যা সময়ের আঁধারে ভাবনারা পর্যুদস্ত হয় গুজবের ঝুলিতে;
অন্তর্গত বোধ বুকে চেপে শব্দেরা
বিষাদে উড়ে চলে শোকাহত বাংলায়,
পতাকার আড়ালে দাঁড়িয়ে এক নির্বাক শব্দ চাষি!
সুস্থ জাতিই সুশৃঙ্খলার জন্ম দেয়
হিলারী হিটলার আভী
যে জাতির মাথা আলুর মধ্যে থাকবে
যে জাতির মাথা মরিচের মধ্যে থাকবে
যে জাতির মাথা পিঁয়াজের মধ্যে থাকবে
কসম- সে জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না!
কারণ?
আলু-মরিচ-পিঁয়াজ হলো মৌলিক অধিকারের একটির একাংশ মাত্র!
চাল ডাল লবণ তৈল পানি এদের সাথে মিলিত হবার পরেই তো মৌলিক অধিকারের একটি হয়!
আর হ্যাঁ - এখানে কিন্তু মাছ মাংস ডিমের কথা উহ্য রাখলাম!
আলু-মরিচ-পিঁয়াজ নিয়েই আমাদের মাথা ঘুলিয়ে যাচ্ছে
আমাদের ঘোলা মাথার জন্যেই তো -
আমরা ভোট নিয়ে, জোট নিয়ে, নোট নিয়ে, কোর্ট নিয়ে এতোসব বিশ্রী বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছি!
শ্রদ্ধেয় দেশবাসী
আপনারাই বলুন তো
সুস্থ মস্তিষ্ক কখনও কি ভোট নিয়ে, জোট নিয়ে, নোট নিয়ে,
কোর্ট নিয়ে এতোসব বিশ্রী বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে?
সুস্থ মস্তিষ্ক নিয়েই তো সুস্থ জাতি তৈরি হয়
আর সুস্থ জাতিই তো সুশৃঙ্খলার জন্ম দেয়!
আপনারা কেউ ভাববেন না প্লিজ
আমি কিন্তু বাঙালি জাতিকে অসুস্থ জাতি বলছি না!
আমাদের স্ব-স্ব স্বৈরাচারী খাসলতের দিক থেকে আমরা অসুস্থ জাতি!
লখলাইনে কেটে যায় গলা
রবীন বসু
তোমার বেড়ার পাশে ফুটে আছে জুঁই
আমার বাগানবাড়ি নিলামে উঠেছে
দুঃখের সে রাত্রিজল টুপটাপ ঝরে
ভগ্ন ডানায় উড়ানের সাধ নেই
ক্ষতচিহ্ন ধরে রাখে বুক
সমূহ বিচ্ছেদ নিয়ে সম্পর্ক দাঁড়িয়ে
এইবার তারাগোনা খেলা
এইবার গাঢ় মনখারাপ ফিঙেপাখির লেজ
ক্যানভাসে ফুটে ওঠে হাজারো হিজিবিজি
ছবিআঁকা চেষ্টার বাতুলতা
গময়ের সুতো ধরে টান মারে অপটু লাটাই
লখলাইনে কেটে যায় আমাদের গলা.
অবাচ্য শব্দের অভিধান
খৈয়াম কাদের
হাঁটতে নেমে দেখছি
পায়ের সীমানা থেকে সরে যাচ্ছে পথ
উড়ে যাচ্ছে ঘর, বাতাসে আটকে আছে প্রাপ্য সকাল
চোখ মানছে না মগজের নির্দেশনা
দৃশ্যগুলো হয়ে যাচ্ছে বিনয়ী মাতাল!
কথারা ছুটছে অবাচ্য শব্দের অভিধান বুকে নিয়ে
কানে বাজছে না আর শ্রাব্য ধ্বনি
অসার বয়ানে দুলছে রক্তে রঞ্জিত স্বপ্নপাড়া
গুণিন খুঁজছে ঘুরে ঘুরে, কোথায় হারালো তার
পুরাণ খচিত সেই বসুন্ধরা!