অপূর্ণতা
এ এম তোফায়েল
তাঁকে নিয়ে আমি কতো কবিতা লিখি, হয়তোবা
সে জানে হয়তোবা জানে না! হয়তোবা সে দেখে হয়তোবা দেখে না! তাঁকে ঘিরেই আমার কতো আয়োজনতাঁকে ছাড়া সকল আয়োজন অপূর্ণ
থেকে যায় কেমন!
যে ফুল অবেলায় গেছে ঝরেতাঁর জন্য মানুষ কি যুগ যুগ ধরে কেঁদে মরে? প্রকৃতি যেমন শূন্যস্থান পছন্দ করে না তেমনি প্রকৃতির কল্যানেই শূন্যস্থান পূরণ হয়!
তাঁকে নিয়ে আমি কতো কবিতা লিখি, হয়তোবা সে জানে হয়তোবা জানে নাহয়তোবা সে দেখে হয়তোবা দেখে না!
বার্তা
নাসিমা হক মুক্তা
ভোরে বার্তা এলো
কানে বাজলো পাখপাখালির খই ফুটা ডাক
ভেতরকার চান্দিনা আলো কখন থেকে উপবাসী
তা জানে কেবল ঈশ্বর!
সে খেলে যায়
আর আমিও নাচি
মনের ঢোল বাজিয়ে, চিৎকার করে জানাই যে
আমি তো মানুষ
সব রঙেই আমাকে খেলায়!
সে সব দেখতে মজা লাগে
এইখানে বটমূলে জায়গায় হলেও- মানুষ বড় বিশ্রী
মনে কাদা, পুরো মাথা ছাইপাঁশ
এসব পতন দেখলে কেউ কারো কাছে ভিড়ে না
দূর থেকে- সালাম, নমস্কার ও কল্যাণের
এপাশ- ওপাশ দু’ পাশেই- মন বলে ওঠে
কী অসহায় মানুষ
কী করুণ এ মানবজীবন!
এক ইঞ্চি সুখ
এক গজ মায়া
এক মগ জলভরা ছায়া;
এসব দিয়ে পুরো মানুষ বানানো সৃষ্টি
নিজেও আফসোস করে বলে-
আমার মানব মোরগ লড়াই শিখেছে
স্বর্গের মত বাগান দেখার ইচ্ছে থেকে- এরা পালিয়ে বেড়ায়!
তিনি দু’ গালে হাত আলতো বুলিয়ে- বলে ওঠে
হায় মানুষ
আফসোস- আফসোস- আফসোস!
অটল বিশ্বাস
মোঃ নুরুজ্জামান সবুজ
হতাশার দীর্ঘ নিঃশ্বাসে জীবন বৃক্ষের
হলুদ পাতারা ঝরে যায়
সবুজেরা প্রত্যয়ী হয়ে ওঠে অটল বিশ্বাসে-
বৃক্ষবাকলে বয়সের প্রতিচ্ছবি
চিরধরে ধ্বসে যাওয়া ঢিলে ঢালা ত্বক
বেলা শেষে মেলার মতো, হাট শেষে-
পড়ে থাকা উদোম হাট হয়ে।
হেমন্তের আঙিনা এখন শুধুই ফিকে
দিগন্তে নিঃশব্দেরা শব্দভূমি খুঁজে খুঁজে হয়রান
মৌপোকা, ঘাসফরিং প্রজাপতি ডানামেলে
কোথাও গেছে চলে-
যেখানে যেমন খুশি তোমরা যাও
আমি এখানেই রয়ে যাবো; এ নির্জনতায়-
একদিন সম্ভাবনার মাঠ জুড়ে ফুল পাখি
অটল বিশ্বাসে আমাকেই ভালোবাসবে
অন্তহীন, অনন্তকাল।
সওয়ারি
রহিত ঘোষাল
দুটো কণ্ঠস্বর একে অপরকে সঙ্গ দিয়ে যায়,
এইসব জটিলতা আমার আর ভালো লাগেনা,
সোনার ফসল ভরা মাঠে আগুন লাগিয়ে যায় বিকেলের সূর্য, আমি ছুটতে থাকি, নরকের মধ্যে যে উদ্যান সেখানে বসে দু’দ- গলা ভিজিয়ে নিই,
আমার মনে পড়ে বৈঠা ঠেলেতে ঠেলেতে ফাগুন মাসের কথা, অগ্রায়ন মাসের নদীর ধারের কাদামাটি,
সাদা মেঘের আঁচল বিছানো,
ফিরে যেতে চাই যেখানে আমার মায়ের পায়ের ছাপ,
আমি সেই মাটির কিছুটা হাতে তুলে নিই
কপালে লাগিয়ে আম-জামরুল বনের মধ্যে দিয়ে, ধান খেতের উপর দিয়ে, ছোট ছোট ঢেউয়ের সওয়ারি হয়ে
মরা পদ্মার ওপারে যদি বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া যায়।