অনুশোচনায় অমিয়
হাফিজুর রহমান
ভেবেছিলাম ঝগড়াঝাঁটি হবে, হলো না তো!
বর্ষাও লজ্জিত, অঝোর ধারায় শুরু হলো বৃষ্টি।
মনে হলো যেন ক্ষীণ বজ্রপাতের সম্ভাবনা!
গুমোট গগনে নেই কালো মেঘের ঘনঘটা,
মধুচন্দ্রিমার খোঁজে বুঝি ব্যস্ত বেশি পবন!
ভুলে একদম কালবৈশাখীর উচ্ছৃঙ্খলতা।
আমার পৃথিবীটাকে শান্ত দেখে, যেমন-
নিশ্চিন্ত হওয়ার কোন কারণ নেই! তেমনি-
জানি চাঁদ উঠবে না আজ বাদল দিনে,
তবুও পুলকিত প্রাণোচ্ছলতায় জ্যোৎস্না রাত!
হলোই বা মান অভিমানে ঠোকাঠুকি,
তাতে কী? গভীর বড় জ জ্যোৎস্নার প্রেম।
আবার কখনওবা শান্ত শীতলতায় সিক্ত হতে-
পুঞ্জীভূত ক্ষোভ-নেত্রের একেকটি বৃষ্টিফোটা,
বিধ্বংসী বারুদের থেকেও বেশী সক্রিয়।
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট উত্তাপ্ত
লাভার ন্যায় নির্গত, হয়তো দাম্পত্য জীবনে
ঘটে সম্পর্কের শক্ত প্রাচীর নির্মানে।
পোড়ানো হয় হৃদয়, খেলা করে ভালোবাসা
অধর যুগলে, পারস্পারিক অনুশোচনায়।
হঠাৎ করে দূরে সরে গেলে
মিসির হাছনাইন
হঠাৎ করে দূরে সরে গেলে
নিত্য দিনের পরিচিত কাছের
মানুষগুলো মনে রাখে না আর,
কিংবা করে না স্মরণ,
রাখে না যোগাযোগ,
কারণ, তাঁর প্রয়োজনে পাবে না তোমারে।
মানুষ যে শুধু প্রয়োজনে মনে রাখে!
দেখা হলে কথা বলে, এই মনে রাখে।
হঠাৎ করে দূরে সরে গেলে--
মানুষ ভুলে যায়, একদম ভুলে যায়।
মানুষ পারে, ভুলে থাকতে পারে।
নিশ্বাসের দিনে তুমি
জায়্যিদ জিদ্দান
আজকের সন্ধ্যা তো দেখেছো!
সুর্য ও তো দেখেছো- মৃত সূর্য।
তারপর- অনুজ্জ্বল সন্ধ্যারাগ, হিমেল সমীরণ, রাত, রাতের অন্ধকার, রূপোলী চাঁদ
আর ফিনিক ফুটা জোসনার প্লাবন - সবই তো দেখেছো।
আমার পাশে বসা ছিল লেজ কাটা একটি নেড়িকুকুর চোখের চারপাশে যাবতীয় বিষাদ
ছড়িয়ে তাকিয়ে ছিল আকাশের দিকে
তাকে তো দেখো নি!
ওমা! তাকেও দেখেছো!
একজোড়া শালিক? ইলেক্ট্রিক তারের উপর বসা ছিল। তাকেও দেখেছো!
তাহলে আমি? আমাকে দেখোনি?
আমার নাকের নল বেয়ে বেরিয়ে আসা উত্তপ্ত নিশ্বাসগুলো?
বুকের বা পাশটায় -
গলগলে রক্ত আর এলোমেলো রগ-শিরা ছাপিয়ে একটুকরো মাংসপি-
সেখানে ভালোবাসার রং দিয়ে লেখা একটি নাম?
সেটা দেখেছো? দেখো নি!
আচ্ছা ভালোবাসার রং কি, জানো?
টুকটুকে লাল নাকি কুচকুচে কালো?
হেঁয়ালি জীবন
সাইফুল্লাহ ইবনে ইব্রাহিম
দিনশেষে পৃথিবীতে কিছু মানুষের
দাম যেন নেই কোনো, আছে ফানুসের
তবে ঠিক মিল পাবে এক দিকে তার
নানা কাজে তাকে সবে করে ব্যবহার
কেউ কেউ পৃথিবীতে অবহেলা পায়
ঘর-দোর যাই বলো যেখানেতে যায়
কেউ তার চায় না তো কভু কিছু ভালো
হুটহাট মনটাকে করে দেয় কালো
তাই বলি পৃথিবীতে একা ভালো থাকি
কারো কাছে সেধে গিয়ে ব্যথা পাব নাকি!
এই বোকা কেনো হব, প্রাণ আছে বুকে
লড়ে যাব জীবনের সাথে ধুঁকে ধুঁকে।
আবার যদি দেখা হয়
সোহানুজ্জামান মেহরান
আমিও সেই তোমার সম হইনি আজো, হবো না আর
হৃদয় কপাট শিথিল করে প্রেমের বাণী কবো না আর।
আজ সীমাহীন রুক্ষ আমি বিচিত্র গান নেই মুখেতে,
হৃদয় কাঁদে নামটি তোমার আনি আমি যেই মুখেতে!
তোমার থেকে আমিই বরং একটু বেশি অভিমানী,
আমি তোমার নই মানানসই আদি অন্ত সবই মানি।
ভুল ছিলনা তোমার কোনো ভুলটা আমার ভালোবাসা,
তোমায় জয়ের স্বপ্ন রচে করেছিলাম কালও আশা।
নিবিড় মনে একলা তুমি ভাবতে থাকো আমায় খুব,
দুটি চোখের কার্নিশে তাই ব্যথার বারিষ নামায় খুব।
ভাবছো মনে কষ্ট ভীষণ মুখ লুকিয়ে কাঁদছো তাই,
বুকের উপর বালিশ চেপে আমার উপর রাগছো তাই।
একলা পথে চলতে গিয়ে বাঁচার নামে মরছি রোজ,
অদূর হতে তোমার হাতটি কল্পনাতে ধরছি রোজ।
তোমার আমার এই দুটি নাম এক কালিতে লেখা হয়,
হাত ধরে ফের হাঁটবো দুজন আবার যদি দেখা হয়।