পদাবলি : ০১

 



যুথীকে মিস করি 

সৈয়দ নূরুল আলম 


যদি তুমি আসো, নবান্নের কোনো এক সকালে, তোমায় নিয়ে যাবো দূরের সোনারঙ ধানক্ষেতে- নতুন আমন ধানে ভরে আছে মাঠ, দেখবে সেখানে কিষাণ-কিষাণী গীত গেয়েগেয়ে ধান কাটে, ঝিরিঝিরি ঠান্ডা বাতাসে। ফসল তোলার আনন্দ ঝুলে থাকে মুখে। দেখবে তুমি অই দূর জলাশয়ে, দিনান্তের শেষ গোধূলি শুয়ে আছে কুয়াশা বিশ্রিত জলরাশির ওপরে। হিসেব মিলাতে চাইলে মিলবে কী! সে বয়েস হারিয়ে এসেছি দু'জনে, যদি তুমি খুঁজো খেলার পুতুল, হারানো ন্যাংটা সময়, পাবে?

 খুব মিস করি তোমাকে ।


অষ্টপ্রহর

সারমিন চৌধুরী 


অভিমান অচিরেই ঘুনে ক্ষয় হয়েছে 

খোলে দিয়েছি সব বন্ধ কপাট।

তুমি ফিরবে এইটুকুই আস্থা বিশ্বাসে

ঘুমহীন কাটিয়েছি সুদীর্ঘ রাত। 


অভিযোগের উঁচু দেয়াল খসে পরেছে

তুলে নিয়েছি পথের সমস্ত বেড়ী। 

তোমার খুঁজে সর্বত্রই হন্য হয়ে ছুটেছি

একলা দিয়েছি সাত সমুদ্র পাড়ি। 


পিচঢালা রাস্তায় দু’পা খসেছে দাবদাহে 

হাসিমুখে করেছি সব পীড়া গ্রহণ।

তুমি এসে হৃদয়ের ইটবালি জুড়বে বলে 

অপেক্ষায় ব্রত থেকেছি আমরণ।


ঊসন্ত গেছে-নীরবে দেয়নি বদনে দোলা

ফোঁটেনি বাহারি রঙের হরেক ফুল। 

নিরাশার রোদ মেঘ ছড়িয়ে করে আঁধার 

তবুও, কুড়ায় আমি পথের সব ধুল। 


কতো অজুহাত ভাসিয়ে দিয়েছি ঢেউয়ে

পান করেছি মনের জমানো বিষাদ। 

তুমি আসবে জলন্ত সূর্যের আলো হাতে 

স্পর্শ দিয়ে মিটাতে বিরহ-অবসাদ।



ধানমন্ডির মটকা চা 

মোহাম্মদ আল রাহাত


নির্লিপ্ত দুপুরে বেখেয়ালি রোদ তোমাকে যখন পোড়াবে! 

ক্লান্ত শরীরে এক কাপ মটকা চা খোওয়াবে ?

দৃষ্টিনন্দন! বয়সটাও রং ধরবার তাই আটকে গেলাম,

কিন্তু এখানে প্রেমিকদের ঘনিষ্ঠতাকে মিলিয়ে যত সব জটিল অংকরে, শংকরে 

আমি হাটলাম দক্ষিণ তপ্ত প্রান্তরে, কংক্রিটে । 

 

কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় সবুজ রঙের চেয়ারে বসে ;

এক প্রেমিকাকে দেখলাম সিগারেট ফেলে বিষন্ন স্বরে মটকা চা চেয়ে নিতে।  

পুরাতন কড়ইগাছের ছায়ায় একদল তরুন

চা ওয়ালা মটকা চা পরিবেশন করেন।

আমরাও ২ কাপ মটকা চা চেয়ে নিলাম। 

সিমেন্টের বেঞ্চ, এবড়োখেবড়ো লেকের ক্লেশ,

নাজুকের আগে আমার চা খাওয়া তখন শেষ।


রবীন্দ্র সরোবর, ডিঙ্গি রেস্টুরেন্টে, চটপটির দোকান এ যেনো দোকান বলয়। 

আড্ডা, গান গাওয়া গিটার, সিগারেট আর মটকা চায়ে বোকা প্রেমিকের পকেট ক্ষয়। 

সতর্ক দৃষ্টি মেলে যাযাবর বাচ্চাদের দল

ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আছে 

কেউ তাকালেই দিবে ডুব 

শিমুল, ছাতিম, চালতা, মেহগনি, নিম জলপাই আর সবাই যখন চুপ।


পূর্বের মোঘল বসতি, ঈদগাহ, কারবান নদীর পরিত্যক্ত খাল সবইতো হারানো.. 

বর্তমান শুধু বলি প্রেমিকদের 

তাও তো না

অনেকে এখানে একা একা বসে চোখের জল ফেলে, কেউ বিজয় কেতন ওড়ায়, চলে পতিবাত, আন্দোলন। কেউ আবার মটকা চায়ে মস্তিষ্কের জটলা ছুটান।



অপরা সেনসিটিভ মানচিত্র ও উপপাদ্যের তৃতীয় কঙ্কাল সমগ্র

নিমাই জানা


আমি এখন ঠিক শয়তানের মতো ভাঙা কাঁচ খাওয়া হেফাজত পালানো থ্রি এক্স মাইক্রোসফট টেসলা রেজুলেশন সেনসিটিভ বন্দীর লাল নখ, ছদ্মবেশী চকচকে ব্যাসাল্ট পাথর হয়ে উল্টানো লাল ব্লাউজের দোকান থেকে হিউয়েন সাঙের কবর ভর্তি মাটি আর রুই মাছের স্কেলিটন ভাঙ্গা অপরা শরীরের দগদগ ক্ষত,

১০০ এম জি ঘনফলের লম্বা দাঁত সেফালাক্সিনের লাল ট্যাবলেটের শূন্যস্থান বায়ুর ভেতরে ঢুকে মেঘ শূন্য আবহবিকারের রক্তাল্পতা মেঘগুলোকে নিয়ে হাঁ মুখের গর্তে ঢুকিয়ে দিচ্ছি কেঁচোর কঙ্কালের ঋতুকালীন গন্ধ দ্রব্যের বারুদ ঝাঁঝালো কয়লা, মেহগনি গাছের ঋতুমতী আঙুলগুলোতে সাপের মতো প্যাঁচ খেয়ে দোলাচ্ছে জন্মদোষের হিমবাহ ঋষি, আহ ! রক্তের চাটনিটা বড় মিষ্টি লাগছে আজকাল, যজ্ঞ করছে পাকস্থলী শুন্য পুরোহিতের দল

কালো রঙের আঙুর ভর্তি নারীরা পৃথ্বীশ অভয়ারণ্যে হাঁটতে হাঁটতে অজগরদের সঙ্গে সঙ্গমহীন বিশ্বামিত্র যজ্ঞের চারপাশে বসে বসে আরো একবার জরায়ুরস খেয়ে ফেলল, তৃতীয় পর্বের নিলিপ্ত সংহার কর্তা ব্রহ্মার মস্তক ছেদন করে দিলেন আমিও দ্বিখ- গলার পাশে জমে থাকা হরমোনাল গ্রন্থির মতো চটচটে কম্বোজ ও নন্দন বিষয়ক অসিটাকে দোলাই,

স্নায়ু রক্তের ওমেগা পিরামিড ডানায় ঢুকিয়ে ফেলি শুক্রাণুর বীজ, স্ন্যাক্স সাদা পাউডার দ্রবণের অতি ঋণাত্মক শ্যাওলা রেচন, ঙ দৈর্ঘ্যের নারীরা যৌনের ঘনিষ্ঠতম উপপাদ্য জানত না



দেওয়াল

আদনান আল মিসবাহ


বিষন্নতা যখন পৃথিবীতে রাজ করে 

তিন ঘন্টা কান্দনের পর কটকটি 

হাতে পাওয়া বালকের মুখ থেকে 

সদ্য ফোটা হাসিটুকু কেড়ে নেয় 

হৃদ মাঝারে-

পদ্মফুলটা ফোটার আগেই নেতিয়ে পড়ে 

আমি তখন পাথুরে দেওয়ালকে আলিঙ্গন করে 

অশ্রু ঝরাই অঝোর ধারায় 


হৃদয়ে বিষমাখা রক্তের স্রোত

প্রবাহিত হলে 

দেওয়ালের সাথে ভাগ করে নেই-

রক্তের প্রবাহ 

গভীর রাতের নির্জন নিস্তব্ধতায় 

দেয়ালের কাছে শুনতে চাই 

নিঃশব্দের পদাবলি


কুহকী আলেয়া নিয়ে বেড়ে ওঠা আমার 

স্বার্থপর বন্ধুটি বিশ্বাসঘাতকতা করলেও 

দেওয়াল- 

আমার প্রতিটি আবদার রক্ষা করে 

পিনপতন নীরবতা চূর্ণ করে আমাকে শেখায় 

জীবনমেরুর দীর্ঘ পথে-

একাকী চলার সবক


আমি যখন তোমার অলক্ষ্যে থাকি

মুহিতুল ইসলাম মুন্না


আমি যখন তোমার অলক্ষ্যে থাকি

তখন আমি তোমার আঁখির পূজা করি

দূরে বহু দূরে থাকলে মনের পূজা করি 

আরো দূরে অচিনপুরে থাকলে তোমার

রসপূর্ণ শরীরের ঘামের পূজা করি,

তা করি অনন্তকাল করে যাব,

ঠিক তোমাকে কাছে না পাওয়া পর্যন্ত।

কিন্তু আমার পিছনে সময়ের ঝান্ডাধারীর

ঘন্টার আওয়াজ শুনি, আমার যে সময় 

ফড়ফড়িয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

আমি তোমার উষ্ণ আলিঙ্গনে আপ্লুত,

বিচলিত, হয়ে যেতে চাই।

আমি তোমার আলিঙ্গন না পাওয়া পর্যন্ত

 যুগ যাপিত অপেক্ষা করতে থাকব।

কিন্তু কখন যে আসবে মায়ার বসুন্ধরা

ছেড়ে চলে যাওয়ার ডাক, কে জানে। 

হয়তো,

ক্ষুধিত হৃদয়ের পিপাসা এভাবেই থেকে যাবে।




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট