শিরোনামহীন
রেবেকা ইসলাম
মনটা আজ বিষাদগ্রস্ত হয়ে আছে
মনের অভ্যন্তরে বিষণœ দুপুর
শুষ্ক, নির্জলা চৈত্রের খরখরে আবহ,
কিসের তাড়নায় যেন তাড়িত
এক বর্ণনাতীত রিফ্লেক্সন,
অব্যক্ত ভাবনাগুলোর ক্রমাগত চাপ
মনের ক্যানভাসে কৌণিক আঁকিবুঁকি
ছোপছোপ দাগ, গড়িয়ে পড়া রঙ
গাঢ় কালচে-নীলের প্রাধান্য
যেন শিল্পীর আঁকা বিমূর্ত কোন চিত্র;
দুর্বোধ্য জটিল রহস্যময়,
ভাসা ভাসা, বোঝার সাধ্য নেই,
বুঝবে বিদগ্ধ কোন অহংকারী মন
শত সাধনায় পরিশুদ্ধ প্রাকৃতজন...
হয়ত সেই অপেক্ষায় বসে থাকা
সেই আশাতেই সময়কে না বেঁধে
অবিরাম চলতে দেয়া।
এলাহী বিচ্ছিন্নতা
সাদিক আল আমিন
রোদ ভালোবাসো। তবে তোমার কামুক কায়া ‘ভিটামিন ডি’র খোঁজ রাখেনি কোনোদিন। কোনোবেলা তুমি নিখোঁজ হতেই দশ নম্বর লেনের ভাঙাচোরা বাইক-অলা গুন্ডাটা সরদারি করতে করতে পুরো মহল্লা মাথায় তোলে। বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে দমকল বাহিনী ডেকে ফেলে ক্ষণিকেই। নিত্যই, তুমি পায়রার পেখমে চড়ে বোটানিক্যালে যাও। তোমার উদ্যমপরায়ণ প্রতিষ্ঠিত স্বচ্ছল প্রেমিক সেখানে নিঃসাড় মনে বসে থাকে অদ্ভুত অপেক্ষায়।
জীবন যাপনের নির্দিষ্ট তালিকা করতে করতেই আবার গর্ভবতী হয়ে ওঠো। এখনো তো ভরপুর যৌবনের আমেজটুকুই কাটলোনা! তোমার বার্ষিকীতে বাইক-অলা গুন্ডাটা একবাক্স রোদ উপহার দেয়। তুমি হয়তো কি না কি আছে ভেবে সেই মোড়ক কখনো খুলেই দেখোনি!
সন্ধ্যাতারা সব থরে-বিথরে জেগে আছে দশতলা বাড়ির ওপর। আজ দুপুরে কড়া রোদ ছিলো তাই এখন ভরা-আকাশ তারা, প্রোজ্জ্বল মায়ায় তাকিয়ে। এই রাতে সাংসারিক কাজকর্মে ভীষণ ব্যস্ত তুমি। আমি দর্শক এক প্রেমিক হয়ে ব্যর্থপ্রেম কবিতা লিখি, চাঁদোয়া খেরোখাতায়।
ঘ্রাণ
লুৎফুন নাহার লোপা
একবার আকাশের নীল গন্ধেই
প্লাবিত হয়েছিল পুরোটা সমুদ্র,
প্রায়ই জল থেকে বেড়িয়ে আসতো
শুন্যতা, মাটির সম্পর্ক, গভীরতা,
দেখি, যতটুকু চাইতে পেরেছি আমি
একটি অসম্পূর্ণ রাতের আবহে
ঘুমহীন বিবৃতি-
অথচ কতনা ঘ্রাণ সময় বিশেষে
ভুলে যেতে হয়েছে আমাকে,
বাতাসের কম্পনের ভেতর সময়
কেটে গেছে প্রেম, পরবর্তী দিনগুলো।
অনুরোধ
ইসমত জাহান লিমা
কোন এক খেয়ালী সন্ধ্যায়-
জোনাকির আলোর জ্যামে,
আমার চিরচেনা দু’টি চোখ দেখলে
তোমার কি খুব ভয় করবে পূজারী?
অথবা, তোমার রাখা স্মৃতি মনে করলে
আমায় কি শাপ দিবে?
তোমার উড়ন্ত মন পায়রার পালকগুলো
শৈত্যেপ্রবাহে খসে পড়লে
আমি অঞ্জলি ভরে ধরতে গেলে
সেই শাপে আমার হাত দু’টি কি পুঁড়ে যাবে?
নাকি হেলেঞ্চা লতায় দোলানে তোমার কাঁপা শরীর
বাতাসের বেগে ছুঁয়ে দিলে আমার পাপ হবে?
কিংবা সিঁড়ি ঘরের আবছা অন্ধকারে,
চাতক কৌতূহলে তোমায় ভাবলে কি আমার জাত যাবে?
পূজারী শোন,
যখন আমি থাকবো না-
একটা মরা শালিকের বুকে দূর্বাঘাসের বীজ বুনে দিও।
যখন শীতের খটখটে প্রেমে শুকনো বিলে
টুপ টুপ শিশির জমবে,
তখন আমাকে ভেবে একদম কাঁদবে না।
ভাবনার করিডোর খুলে দিও-
ডানার ঝাপটা মেরে উড়ন্ত বলাকারা
উড়ে চলে যাবে তোমার মনের অলিগলিতে।
তুমি শুধু বালুকা বাতাসে বুনো প্রেমের নাটাইটা ধরে রেখো,
বাঁশপাতা পুড়িয়ে অনুরোধের শীতার্ত হৃদয়ে
উষ্ণতার চাদর গায়ে ওম দিও।