প্রতিচ্ছায়া
আজমল হুসাইন
তুমি কোথাও হাঁটতে গেলে- পায়ের ধ্বনি শুনি
তোমার সাথে চলে প্রেমের যুদ্ধ-খুনাখুনি।
কনকচাঁপা চোখে তোমার বোকা বোকা মায়া
দূর থেকেও সঙ্গে থাকি- তোমার প্রতিচ্ছায়া।
আমি তুমি শব্দ দুটি হলেও তবু- এক
তোমায় দেখে হয়েছিল চোখের অভিষেক।
চুলের খোপায় গুঁজলে তুমি সাজের গোলাপ ফুল;
দেখতে পারি কারণ আমি তোমার অনুকূল।
ভালোবাসার শহরে কয়েকদিন
রেজাউল রেজা
একবার ভালোবাসার শহরে গিয়েছিলাম,
হায়রে সেকি ভালোবাসা!
যেদিকে তাকাই সেদিকেই শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা!
বিগলিত আবেগের তাড়নায় আমিও কিছু কুড়িয়েছিলাম-ঢুকিয়ে রেখেছিলাম হৃদ পকেটে ঠিক মাঝখানে।
সেই কুড়িয়ে পাওয়া ভালোবাসায় কয়েকটা বছর পায়ের উপর পা তুলে কেটেছে আমার।
রাজার হালে চলেছি সেই সময়টায়।
আমি ভলেই গিয়েছিলাম সেটা ছিল কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদ!
অবশেষে যা হবার তা-ই হলো, সম্পদের আসল মালিক এসে দাবী করে বসল।
আমি দিতে নারাজ ছিলাম; তারা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
চেষ্টা করেছি অনেক-পারিনি!
খুব কষ্ট হয়েছে, হৃদ পকেটের যেখানটাতে ভালোবাসাগুলো লেগে ছিল, সেখানটা ছিঁড়ে যাচ্ছিল, দু’চোখ বেয়ে পানিও বেরু চ্ছিল অবলীলায়।
কতটা বছর কেটে গেল!
সেই ব্যথাটা আজও অনুভব করি, দু’চোখের কোণ বেয়ে দু’ফোটা জলও বিসর্জিত হয় আপনা-আপনি।
কিন্তু কি আর করার,সম্পদটা যে ছিল না আমার
চলে গেছে তার ঘরে, ছিল সেটা যার!
তার শহর আলোকিত হলেও, আমার শহরে শুধুই আঁধার।
শুধুই আঁধার.......
প্রিয়তমা
নবাব আব্দুর রহিম
তোমার চোখে রাখতে পারি চোখ
তোমার সুখে সুখটা খুঁজে পাই
তোমার হাসি হাসায় আমায় রোজ
তুমি ছাড়া গন্তব্যও নাই
তুমি আছ মনের দেয়ালটায়
তুমি আছ স্বপনজুড়ে আর
বুকের মাঝে তোমারই আশ্রয়
কল্পলোকের রাজ্যটা তোমার!।
প্রিয়তমা, তোমার খবর দাও!
তোমার সরল মনের ভেতরটায়
আর ওখানের ছোট্ট যে কুটির
দিও আমায় একটুখানি ঠাঁই
চাইনি বেশি তোমার কিছুই, এই
আমায় দিও ভালবাসা, আর
তোমার কাছে এই আছি বন্ধক
মূল্য দিও একটু হলেও তার!
রক্তপলাশ
সৌরভ দত্ত
অভিমান লেখা থাকে খয়েরি জ্যোৎস্নায়
তুমি স্নান সেরে নাও
আমার ক্ষতের উপর তোমার
নিহিত দীর্ঘশ্বাস
ভাঙা হারমোনিয়ামে উপর রাখা পলাশগুচ্ছ
কয়েকটা অক্ষর সেজে উঠছে বেশ
ফুটফুটে সন্ধ্যায় প্রেম আসে
শনশন হাওয়া বয়
প্রেমিকার ফাগুনবেলা কেটে যায়
চুম্বন তাড়িত চিঠি ওড়ে
যাপনের বাঁশি পড়ে থাকে একা
মাঝেমাঝে বিরহের সুর ওঠে।
পরের বসন্তে
রুদ্র মানিক
অরিত্রি,
তুমি বরং আরেক বসন্তে এসো
পরের বসন্তে
কিংবা আরো পরে
কিংবা জীবনসায়াহ্নের কোন এক বসন্তে,
ক্ষণকালের জন্য হলেও তুমি এসো......
তুমি এসো এক অদ্ভুত অনন্য বসন্ত নিয়ে,
অমরাবতী’র অধিশ্বরী;
কিংবা অক্ষৌহিণী অনিন্দ্য পারিজাত হয়ে!
রবির সমস্ত ফুলঝুরিতে,
উদাস করা সুরের গাহুক পাখির গানে,
দিব্যলোকের অমৃতের সুধারস নিয়ে,
তুমি এসো অসূর্যম্পশ্যা নি®প্রাণ, রঙচটা জীবনে।
এসো শতবৎসরের লালিত হৃদয়দলে
তুমি এসো এক অনন্য বসন্তে,
অনন্তযৌবনা সংগীত-মুখরিত, কবিতা গগনে,
গমস্ত রুপরস গন্ধ তরঙ্গ শীর্ষে তুলে।
দিতে পারো আছে যত-
মধুকরের শিল্প মনে......