শব্দমালা
সোহেল রানা
প্রেমত্তা
পুরোনো মাটির ঘ্রাণ আসে :
লকলকে কচিডগায় প্রাণের স্পন্দন,
গুল্ম লতাপাতায় জড়ানো মায়ার আবরণ।
বলি: দয়া বি. ‘মিছে এ জগৎসংসার' -
যতবারই বলি, বোঝেনা সে
বারবার পিছন ফিরে চায়!
বলি: সে তোমাকে ভুলে গেছে
রাখেনি মনে! ততবারই বলে এ হৃদয় -
সে নাকি তাতে জড়িয়ে আছে।
জানিনা বুঝিনা আমি, এর নাম বুঝি
ভালোবাসা - হৃদয়পোড়া ব্যথা!
অমলিন ক্ষণ
তুমি আমি হেঁটেছিলাম একদিন
নদীর বুক চিড়ে জেগে উঠা চরে
পাশাপাশি আমরা দু’জন হাতে হাত
পায়ের তলে নরম নরম সবুজ ঘাস।
নীলাভ আকাশ শান্ত সমীরণ
ক্লান্ত পাখির ডানা
বেখেয়ালী কিছুটা সময়
অবশেষে সন্ধ্যা নামে
কিছু না বলা কথা
কিছু মুগ্ধতা
কিছু বিস্ময় আর শিহরণ
আজও স্মৃতিপটে উজ্জ্বল অমলিন।
ভালোবাসা বুঝতে হয়
১
কিছু ফুল
কিছু সুবাস
কিছু কথা
কিছু হাসি
কিছু গান
কিছু কবিতা -
এই নিয়ে পথ চলা।
২.
নানান ঋতুর নানান ভাষা,
প্রেমিক হতে হলে
বুঝতে হয় তাদের কথা।
দেখতে হয়
জানতে হয়
বুঝতে হয় -
পাহাড়ের মতো শান্ত থেকে, বৃষ্টির জন্য
অপেক্ষা করতে হয়।
৩.
গোলাপ কাঁটায় হাত রাঙিয়ে, গোলাপ ফুলের
সুবাস নিয়ে - তাকে রাখতে হয় সযতনে।
৪.
মনহারা পাখি বোঝে - ভালোবাসা হারিয়ে গেলে
তার কেমন কেমন লাগে।
৫.
ভালোবাসা সযতনে রাখতে হয় -
ভালোবাসা হারিয়ে গেলে, তাকে কি খুঁজে পাওয়া যায়?
স্মৃতি
মনে পড়ে তুমি আমি পাশাপাশি
দু’জনে হাত ধরাধরি করে
খোলা আকাশের নিচে হেঁটেছিলাম,
নদীর বুকের মধ্যখানে, জেগে উঠা চরে
শিশিরভেজা ঘাস ছিল,
আমার হাতে ছিল তোমার কোমল তালুর পরশ।
নরম ঘাসে তোমার পায়ের
নূপুরের ঝঙ্কার-- এখনও হৃদয়ে শিহরণের ঢেউ তোলে।
স্মৃতিময় আকাশে-- দিগন্ত থেকে দিগন্তে
হৃদয়মেঘ ভেসে ভেসে যায়
স্মৃতির নদী মেশে মোহনায়,
সন্ধ্যার পাখি ফেরে নীড়ে
আকাশ মিশে যায় আরো ঘন নীলে।
কেবল তুমি রয়ে গেছ আমার হয়ে নয়, আমার স্মৃতি হয়ে।
তোমারই ভালোবাসাতে
হৃদয়ে বেজেছে বাঁশি, রিনিঝিনি রিনিঝিনি
তোমারে দেখি
জীবনে ভাবিনি
কখনো, কোনদিন আগে
এভাবে, আমি যে তোমারই প্রেমেতে...
আমি দেখেছি আমার দু নয়নে
যাকিছু লেগেছিল ভাল, হৃদয়-মদিরে
‘সে-ই ভালোলাগা ভালোবাসা তোমাতে’...
তাই তো, আমার এই হৃদয়
তোমারই ভালোবাসাতে.।