শব্দমিছিল
মাহমুদুর রহমান
জন্মদিন
শৈশবের একটি জন্মদিনে মা আমার বাম গালে চুমু খান এবং আমাকে একটি রঙীন কাগজে মোড়া সমুদ্র উপহার দেন। যার উপরের ট্যাগে লেখা- আবেগ।
বাবা আমার পিঠ চাপড়ে একটি পাহাড় উপহার দিলেন। আর বললেন- ওর ডাকনাম আত্মবিশ্বাস। ওকে কখোনো হারিয়ে ফেললে এই সমুদ্রে ভেসে যাবি।
আজ বহুকাল আমি আমার পাহাড় ও সমুদ্রকে খুব নির্জনে আগলে রাখছি। সম্প্রতি আমি খুব উদ্বেলিত এই পাহাড় ও সমুদ্রকে নিয়ে। কেবল একরাশ হারিয়ে যাবার ভয়।
কারণ আমার শেষ জন্মদিনে রূপা ডাকযোগে একটি দুঃখ নামের নদী পাঠিয়েছে। নীরব বহতা নদী এতটা শক্তিশালি জানা ছিলনা।
অপরাহ্ন
ভাত ঘুম গাঢ় হয়ে সর জমে এলে, উঁকি দিয়ে দেখে যায় কেউ। বিকেলটা শুয়েছিল ল্যান্ডস্কেপে; আরো দীর্ঘ তাই।
শৈশবের হাতে পরা পাঁচ আঙ্গুলের রিঙ চিপস, তুমি সন্ধ্যে বেলায় এসে খাও।
নিম আর শিরিষ বান্ধবী হলে দেবদারু রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। এইসব দৃশ্য ভেবে কখোনো কখোনো তুমি বৃক্ষ ওঠো। সবুজ কলাপাতা বেনীতে দোল খায় কার্তিকের উঠোন। সুপুরির শুকনো খোলায় আমাদের সীমানা প্রাচীর।
বিষন্ন ফসলের মাঠ, নিসঙ্গ বাড়িটা এক সদ্য কিশোরী যেন....
তোমার আলতা রঙ পা জলথই পুকুর। হাঁসেদের চইচই রুপোর নুপুর।
হালটের ধূলি পথে গভীর ক্লান্তি নামে, বোঝে তবু তারা। বাবার কাঁধে চড়ে যে শিশুটি মেলা থেকে ফেরে, তার থেকে সুখী পৃথিবীতে কেউ।
অরু আপা
অরু আপার আকাশ জুড়ে কাক ডাকে। সে মানত করে শাহ পীরের সিরনি। উঠোনের তারে ঝোলে ভেজা লাল ব্লাউজ। আমাকে মিষ্টি করে ডাকে।
আপার জন্যে ভাসি এক পৃথিবী সমুদ্র। ছুটি তিমিরের নীল নির্জন অরণ্য। এক একটি অখন্ড দুপুর।
হঠাৎ সন্ধ্যায় তবু বেজে ওঠে যুবকের সাইকেল বেল। তাহার বুকের অনাগত রিঙটোন।
খুলে যায় আপাদের ভেজানো কপাট। অনায়াস ঢুকে পড়ে দুধশাদা মেঘ।
যুবক আদতে একটি তুলে রাখা বেডশীট। ঘন্টা পড়লে বালক নৈঃশব্দে ঢেকে যায়।
DHANSHALIK YOUTUBE CHANNEL : https://