শব্দমিছিল
কবির কল্লোল
ধরো
ধরো এই হাত দু’টি, আর ধরো পা
ধরো মানে মনে করো, হাতেনাতে না
ধরো প্রিয় হাত নেই, পা-ও গেছে কেটে
ধড় আছে, মাথা নেই, পেট গেলো ফেটে
কিংবা মাথাটা আছে, ভুঁড়িটুড়ি নাই
ধরো বেল টুপ করে পড়লো মাথায়
মাথা আছে, হুশ নেই, মাথার কী কাজ?
মাথায় পরানো হলো হীরকের তাজ
ধরো এক চোর এলো, তাজ নিতে গিয়ে
ভুল করে চলে গেলো মাথাটাই নিয়ে
তোমার কিছুই নেই- রক্ত.. মাংস.. হাড়..
পড়ে আছে রেখে যাওয়া হীরার পাহাড়
ধরো ফের চোর এলো, চোরের গ্রীবায়
তোমার হারানো মাথা পষ্ট দেখা যায়
হীরা নিয়ে পালাচ্ছে, চোরটাকে ধরো
চোর..চোর.. নিজেকেই চোর মনে করো
চোরের পিছনে তুমি, তুমিটাই চোর
ধরো এই ধরাধরি পুরোটাই ঘোর
ভোরবেলা ঘোর কেটে ভেঙে গেলো ঘুম
সূর্যকে মনে হলো ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুম দেখে খিদে পেলো ধরো
ডিম নেই, মুরগি এক আছে বড়সড়
কিন্তু মোরগ নেই এই তল্লাটে
আবার ঘুমিয়ে পড়ো ঘোরলাগা খাটে
রক্তজবা
রক্তজবা ফুটেছে রাজপথে
কংকিরিটে, পিচের শাখায় শাখায়
ফুটেছে বাঁ পকেটে শ্বেত শার্টের
দ্বাদশ শ্রেণীর পাজামা ওড়নাতে
রক্তজবা লেপ্টে চাকার দাঁতে
নর্দমাতেও পাপড়ি থোকা থোকা
জলকামানে ধুচ্ছে কারা বুকের
ঘেঁষটে থাকা থ্যাঁতলানো লাল রেণু
রক্তজবা ফুটছে ট্রাকের শিঙে
দড়িছেঁড়া ষাঁড়ের মতো যানে
অথচ তার ফোটার কথা ছিল
ক্লিপের বোঁটায় রাইকিশোরীর কানে
পাখিতে বিস্কুট ফেলে যায়
ইচ্ছে হয় ফিরে যাই লণ্ঠনের দিনে
পাখিতে বিস্কুট ফেলে যাক
একখানি তিনচালা ঘর, খড় থেকে কেন্নো পড়–ক
ঝিঁঝিঁপোকা দিক রেলডাক
মাড়ের গন্ধ নাকে লাগে
তুশ পোড়ে, পাতা পোড়ে, ধোঁয়া ধোঁয়া ঘ্রাণ
তালপাতা ছাউনির নিচে
আম্মা, আরেকবার উনুন জ্বালান
স্বরে অ-তে অভিনয় শুরু
স্বরে আ-তে আম্মা ও আমি
‘আশ্বিন গেলো, কার্তিক গেলো
মা লক্ষ্মী ঘরে এলো’, আম্মা, আপনি অন্তর্যামী
উশখুশ বালকের বুকে
ক্রিং ক্রিং সাইকেল থমকে দাঁড়াক
বৌছির আহবান রুখে দিক অদৃশ্য আঙ্গুল
পাখিতে বিস্কুট ফেলে যাক।
DHANSHALIK YOUTUBE CHANNEL : https://