শব্দমিছিল : রবিউল আলম নবী






শব্দমিছিল
রবিউল আলম নবী

বিশ্বাস

বিশ্বাস করতে করতে মরে যাবো বলেই এ তল্লাটে এসেছিলাম। নদী ভেঙে গেছে, কথা রাখেনি পার। পার বেঁকে গেছে, কথা রাখেনি নদী। তাই বলে কি বিশ্বাসেও বাঁক নেবো আমি? নিইনি।

হয়তো কোথাও একটা পাহাড় আছে। তার ভেতর জমছে আদ্যিকালের দুঃখ। একদিন ফেটে যাবেই। কী মিরাকল ঘটবে ভাবতে পারছো? নিশ্চয়ই একদিন সে জলধারা নদী হয়ে ছুটে আসবে এ তল্লাটে। দেখবে আমার পার বাঁকেনি। আমার নদী ভাঙেনি।

এরপর মরে যাবো খুব নিঃশব্দে। একা। ঈশ্বরের মৃত্যু একাই হয়।

তাই বলে কি আর কেউ এ তল্লাটে আসবে না? আসবে। ফরহাদ আসবে। চ-ীদাস আসবে। শাজাহান আসবে।

পৃথিবীর প্রত্যেকটি নদীর নাম যমুনা।
পৃথিবীর প্রত্যেকটি পাহাড় ফরহাদ কাটবে।
পাহাড়ে বসে নদীতে ছিপ ফেলবে চ-ীদাস।

ফরহাদ একজন ঈশ্বর। সে পাহাড় কাটতে জানে। সে আদ্যিকালের দুঃখকে গলগল বের করবে কেবল নদী হতে। নদীর ধারার সাথে এ তল্লাটে এসে একটা প্রাসাদ বানাবে। তারপর ছিপ ফেলে মাছ ধরবে।

কিছুরই বিনাশ নেই। না বিশ্বাস, না মৃত্যুর। একটা নদী ভেঙে গেলে দশটা নদী এসে লাফিয়ে পড়বে পায়ের কাছে। একটা পার বেঁকে গেলে বিশটা পার গজিয়ে ওঠবে নদীদের শরীরে শরীরে।

বিশ্বাসে মেলে প্রেম, প্রেমিকা অবিশ্বাসী হোক।


অটোবায়োগ্রাফি

কিছুই মুখস্থ থাকে না। গতকাল মনে করি তো শৈশব ভুলে যাই। ভুলতে ভুলতে ভাঙামগজ থেকে তুলে আনি রৌদ্রদগ্ধ একটি দিন। (পিতা ছিপ নিয়ে দৌঁড়–চ্ছেন তল্লা কুড়ের দিকে)। ভুলে আনি ২০০৪ সন (বস্তা হাতে দাঁড়িয়ে আছি ইউনিয়ন পরিষদ)।

কিছুই মুখস্থ থাকে না। ফেরিওয়ালা দিন, বান্নি বান্নি শিশুযুগ। মুখস্থ থাকে না প্রাগৈতিহাসিক সুখ।

সব ছাপিয়ে জেগে ওঠে পিতার বেতন নেই অথচ মাতার অসুখ।


বাংলাদেশ

পাহাড়ে দশ টুকরো মানুষ মেলে
সমতলে দুতিন টুকরো কম-বেশি হতে পারে
সমুদ্রে ভাসে ব্যবচ্ছেদ লাশ।

এটা গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্রেরও হতে পারে

আসুন, জানাজায় দাঁড়াই
গণকবরেরও অধিকার আছে ওয়ারিশ দেহ ধারনের।

টুডু হত্যা
সাংমা হত্যা
হাসদা হত্যা
এসব নিয়ে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হতে পারে
হাসান রেজাউলকে বলে রাখবো

এসো একটা এক্সিবিশন দিই রানাপ্লাজা কেন্দ্রিক

আমরা ফিলিস্তিন নিয়ে কথা বলবো না
সুনামগঞ্জ ডুবে গেছে
নেত্রকোনা চোখের কোণের মতো জল টলমল
কুমিল্লার মেয়েটার কী খবর
আবারও লাশ তুলতে হবে নাকি গণপ্রজাতন্ত্রী?

হাসান রেজাউলকে বলবো
জলপুত্রের পর ক্যান্টনমেন্টকে যেন মঞ্চে নিয়ে আসে।


DHANSHALIK YOUTUBE CHANNEL : https://www.youtube.com/channel/UCvalpdS1Kp_2lW5-Qibzzpw

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এ ৫:৫৭ AM


ভুবনডাঙার মাঠে পড়ে আছে অগনিত লাশ,
বেআব্রু পোশাকে ঘোরে দুঃখিনী জননী।
তাঁর দুচোখ ভরা জল।
আমি চিৎকার করে বলি, মা, মাগো
পারলে আমায় ক্ষমা করে দিস।
আমার কথা শোনার কেউ নেই
আমি তাই বসে আছি ভাঙন নিয়ে বুকে।

Reply
avatar