শব্দমিছিল
দুর্জয় আশরাফুল ইসলাম
সীমান্ত যে রকম
একদিন সীমান্তকে মনে হত পাঁচিল। উঠোনের পর বিস্তার
একদিন যারা এখানে বিকেলের আসর মাতিয়েছিলো
তাদের মুখ ঠোঁট দেখে মনে হত পড়শি মুখচ্ছায়া
অলস সমুদ্রের ভাষা তারাও জানে। তারাও কথা বলে
শূন্যে ভাসমান, আর হাওয়া টেনে নিয়ে যায় বহুদূরে...
যে শুনিয়েছিল পরপর বিবাহ বাসর আর শূন্যতা
ঊৃষ্টি নামা দিঘিতে জলের সুঘ্রাণ, পাশ ধরে চলা নীরবতা,
তার মুখ আজ যদি মনে করি, একটি পাখি মনে পড়ে
একটি চেয়ারের গল্প, হাত ফস্কে যাওয়া চায়ের কাপ
পরিচিত আবহ বদলে যায়, দৃশ্যপটে ভিড় করে শ্মশান যথা
আজ বহুদিন পর বিকেলকে মনে হচ্ছে দ্বিধাবিভক্ত,
জন্মের প্রথমভাগে সে, আবার পথ দেখায় মৃত্যুর ওপার
শাদা পালকের মতো দিকবিদ্বিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা
গল্প সম্ভার হাহাকার তুলে তৃষ্ণার্ত বুকের ভিতর।
আর মনে হতে থাকে সব সরে গেছে, উঠোন, দিঘি জল
মনে হতে থাকে তার মুখ, দিকভ্রান্তির থেকে এসেছে
হৃতস্পন্দনের অতি কাছে, সন্তর্পণে তুলে দিচ্ছে সীমান্ত
মানচিত্র আরো সন্নিকটে, হয়তো নয়।
পাঁচিল আজ বুকের ‘পর...
একদিন কবিতা লেখা না হলে
একদিন কবিতা লেখা না হলে ভৌতিক অন্ধকারে
মূর্তিমান হয়ে দাঁড়ায় পুরনো অশ্বথ গাছ,
এই রাজপথের বুক চিঁড়ে কার কান্না শোনা যায়
অলৌকিক সব নির্জনতা দৃশ্যবন্দি হয়, দুরত্ব বাড়ে
পথ ফুরিয়ে যায়, গাছের আড়াল থেকে
কে ঢিল ছুঁড়ে, শরীর ভেদ করে বুকের ভেতর
আরো আরো অস্থিরতা বাড়ে, অসুখের মতো-
আর তোমাকে মনে পড়ে, না লেখা কবিতার মতো
এদিক সেদিক আবর্তিত, রাত্রিচর গাঢ় হয় খুব
সকাল দেখা
পরিত্যক্ত ঝুড়িকে এমনভাবে টানে যেন আটকে থাকা গাড়ি
নিয়ে যেতে হবে গন্তব্যে আজ এখুনি।
তখনও অনেক ভোর, অনেক ঘুম নিয়ে পৃথিবী শুয়ে আছে
বাগানের চৌকিদারদের চোখ নুয়ে পড়া ক্লান্তি স্পষ্ট
এর ভেতর ঢুঁকে পড়ে তারা, একজন দু’জন এবং মা
কারো চোখে স্বপ্ন নেই, কেবল মুহূর্তকে জড়িয়ে ধরে বাঁচা
কারো চোখে নেই বেদনা আর বকেয়া ঘুমের বিলাপ,
একটি কুকুর পাশ কেটে দৌড়ে যায়,
দূর থেকে যখন কেউ ডাকে নিঃশব্দে
আর আলো ঢুকতে শুরু করে এই বৃত্তের ভেতর,
তাদের চোখে আলো নেই, কেবল পালক খসা এক খেলা
তাদের দ্রুতবেগ চলাচল নেই, জড় এক আচ্ছন্নতা দিচ্ছে পাহারা
পরিত্যক্ত জীবনকে এমনভাবে টানে যেন নিয়ে যেতে হবে
এই বৃত্তের বাইরে,
আরো অন্ধকার যেখানে
কোন একদিন।
বাতাবিলেবুর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র, আর মানুষেরা ঢুকছে
DHANSHALIK YOUTUBE CHANNEL : https://