গোলাপগুচ্ছ
ইয়াসির আরাফাত
১
বসন্ত এসে ফিরে যায়
আর তুমি গোলাপের কোড়কে বসে
আমার বুকে মন্দিরা বাজাও
২
গোলাপের রঙ
তোমার চোখের মত অবারিত মেঘ
মুগ্ধতা আনে বর্ণহীন অন্ধকার
৩
গোলাপ কাঁদলে একশ একটা কাঁটা
তীর হয়ে বুকে এসেঁ বিঁধে
গোলাপ, তুমি উর্বশী রক্তাভ ক্ষত
৪
বুক ছুঁয়ে উড়ে গ্যালো প্রজাপতি
ভ্রমরের দল
আমি ছুঁলে পাপ হয়ে যাবে
৫
গোলাপ শুকিয়ে গেলে কেউ কেউ ছুঁড়ে ফেলে দ্যায়
এমনি প্রেমিক আমিÑ বুকের ভাঁজে গেঁথে রাখি
৬
গোলাপ জানেনা
যে প্রেমে মজেছে আর যে টাকায় কিনেছে
তার মধ্যে মৌল পার্থক্য কোথায়?
৭
গোলাপ, তোমার সুরভী আর কাঁটা
প্রেমিকের কাছে দু’টোই প্রিয়
৮
একটা গোলাপের রঙে,
সৌরভে, কাঁটায় খুন হয়ে গেছি
৯
চলে যাবে?
একদিন সব গোলাপ ঝরে যাবে
তুমি কিছু ক্ষত রেখে যাও
১০
একগুচ্ছ গোলাপ অথবা পৃথিবী
আমি প্রতিবার তোমাকেই চাই
বুকের ঘাস
আবদুল হান্নান হক
বুকের জমিনে নতুন সবুজ ঘাস জন্মেছে
কেমন লেকলেকে আর প্রাণবন্ত
সবকিছু ভেদ করে বেরিয়ে পড়তে চায়
অনেকটা দুঃসাহস দেখানোর চেষ্টা
বুকের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো ছাগল
আমার নবজন্মের ব্যাকুলতা কুঁকড়ে দেয়
আমি চরম অসহায়ে ঘাসগুলো মরে যাবার ভয় করি
একটি নতুন জীবন, কিছু অপূর্ণ স্বপ্ন
নীরবে বিলীন হবার ভয় করি
ঘাসগুলোকে তুমি মরে যেতে দিয়ো না
নিয়ম করে সকাল-বিকেল যতœ নিয়ো
ভালোবাসি শুধু তোমাকে
রুহুল আমিন রাকিব
তোমাকে কতটা ভালোবাসি এই প্রশ্নর উত্তর জানতে চাও?
তবে নদীর কাছে, সাগরের কাছে, পাহাড়ের ঝর্নার কাছে প্রশ্ন করো;
তোমার সঠিক উত্তর পেয়ে যাবে পূর্ণিমা।
তোমাকে আমার কোথায় রাখি;
প্রতিটা সেকেন্ডে কতবার ভাবি! এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাও?
তবে আমার হৃদপি-ে শত ক্ষতর সৃষ্টি করিও
তোমার আপন হাতে ছুরি দিয়ে কেটে কেটে;
ভালো করে খেয়াল করে দেখিও প্রতি দমে দমে তোমার নাম জপছে।
ভাবছো তোমাকে ছাড়া কী করে একাকী দিব্বি ভালো আছি!
তবে রাতের কাছে প্রশ্ন করো; তোমার সঠিক উত্তর পেয়ে যাবে পূর্ণিমা।
ভাবছো তোমাকে ভুলে গেছি, তবে ভুল ভাবছো পূর্ণিমা
আমি তোমাকে ছাড়া, বাঁচতে বা মরতে কোনটাই পারব না;
বিশ্বাস করো ওগো পুতুল বউ আমার
রক্তের প্রতিটা কণিকায় মিশে আছে তোমার নাম।
চাতক পাখির মতো আজো আমি তোমার অপেক্ষায়!
পবিত্র ভালোবাসার বিশ্বাস নিয়ে
এমন করে অপেক্ষায় থাকব জীবনের শেষ সময় অবধি,
এমন কী মৃত্যুর পরেও, শুধু তোমার জন্য পূর্ণিমা।
তুমি তো আমার আত্মা, আত্মা ছাড়া কখনো কি বাঁচা যায় তুমি বলতো।
ঐশী বন্ধন
নুশরাত রুমু
হে আমার আকাক্সিক্ষত বন্ধু,
প্রকৃতির কাছেই বিলাবো তোমার প্রেম।
নীল ভালোবাসার ঢালু ঝরনায় হিমশীতল হবো।
নদীর কলতানে ঘাসের ভেতর
উড়ে বেড়ানো কীট-পতঙ্গের গান শুনবো।
হে প্রিয় !
প্রেমের মাধুর্য মহিমা আমায় অনুধাবন করতে দাও।
হৃদয় তোমার তুষারের মত সমুজ্জ্বল।
কলুষহীন শিশিরবিন্দু রাখব তোমার
নিমীলিত চোখের পাতায়।
অতঃপর প্রেমের আগুন জলে শীতল হবো।
এসো,
সময়ের পায়ে শিকল পরাবো দু’জনে।
সুশোভিত হবো ঐশী মালার বন্ধনে।
স্বর্গীয় হুর মধুর স্বরে মাতিয়ে তুলেছে সমস্ত প্রেমের উদ্যান।
পানপাত্র হাতে কুর্ণিশ জানায় জান্নাতের গেলমান।
আনন্দের রসনায় হারিয়ে যাবো নিঃশব্দে...
হে অনিন্দ্য সুন্দর,
বিচ্ছুরিত অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত ছড়িয়ে যাবো তোমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
ঐ সুন্দর চোখের প্রশংসায় ত্রুটিহীন রূপে মোহময়ী হয়ে উঠব।
উদ্ভাসিত সূর্যালোকে আপ্লুত হয়ে ঘুচিয়ে দেব তোমার মনস্কামনা।
নিশীথের গৌরবদীপ্ত প্রেম সুগন্ধ ছড়াবে প্রশান্তির জগতে।
টুকরো কথার ঝাঁপি
শম্পা মনিমা
টুকরো কথার ঝাঁপি সময়ের ঘনিষ্ঠতা শুরুতে ছিলে শুধু শব্দ, নাকি শুরুতেই থাকে সম্পর্ক? নেই কোন এমন স্থান যেখানে ছিলাম না আমি ডানা এসে আমার শিকড়কে উড়িয়ে দেয় আকাশে তুমি সেই জন, হ্যাঁ সেই জন সময়ের আর আত্মার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মনের বন্ধন, কঠিনতম আঘাতে যখন ডুবি, রৌদ্র স্নাত হয়ে তুমি তোলা আমার আনন্দ মুহুর্তে পুনঃরাবিষ্কার করি নিজেকে। স্বপ্ন-কল্পনা, ভাবনা, চিন্তা, ইশারা, ঝাকুনি লাগে তোমার !
দূরত্ব
হাবিবাতুল উম্মে
সন্ধ্যাকালীন প্রেমের প্রদীপ নিভে গেলে
তোমাকে পাওয়া হয় না আর;
চৌকাঠে আঁচল গেড়ে বসে থাকি অবাধ;
তুমি আসো না এই বালিকার ঘরে ।