শব্দমিছিল
মাহমুদুল হক জালীস
জীবনের বারান্দা
জীবনের বারান্দায় পড়ে আছে
রাতের ভিজানো কাঁথা,
অল্প পানিতে ছটফট করা
মাছের মতো সেই শিশুকাল,
ঠাণ্ডায় আচ্ছাদিত পৃথিবীর দেহ,
আম্মার শীতার্ত শরীর!
ভিজে জবুথবু গায়ের কাপড়
একটু পরপর আরামের নিদ্রাভাঙা
নিজের দ্বিতীয় অস্তিত্বের কান্না।
শান্তনার বুলি মুখে ছেড়ে
কাঁচা ঘুমের অসহ্যকর জীবন,
শীতলতায় থেকে অঙ্কুরকে
তপ্ত রাখার পৃথিবীসম প্রচেষ্টা।
আহা শীতকালে সন্তান মায়ের
নিত্যনৈমিত্তিক জীবন।
মধ্যবিত্ত রক্তে
তোমাকে ভালোবাসি বলে,
আজও আমি বেঁচে আছি না থাকার মতো!
আসবে কি তুমি আমার মধ্যবিত্ত রক্তে
স্যালাইনের চিকোন সুঁই হয়ে!
দিগন্ত ছোঁয়া মেঘের মতো,
নাকি ইচ্ছাকৃত পথভ্রষ্ট হয়ে চলে যাবে
শান্ত নিভৃত স্বার্থের আশ্রমে,
শোনে রাখো! তোমাকে হারালে,
আমি হারাবো আমার সমুদ্রকে,
আমার আকাশকে, আমার জমিনকে,
আমার আমিকে।
তোমাকে ভালোবাসি বলে,
আজও আমি বেঁচে আছি
অতৃপ্ত জীবনকে চিরস্থায়ী করে,
যাবার শত চেষ্টায় হারিয়ে গেছি
যেমন, বিকালের রোদে ভর করে
সূর্য হারিয়ে যায়!
কিন্তু আমি বরাবরই তোমার ভালোবাসার
কাছে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছি,
সবুজ সকালে তিক্ত রাত্রির মতো!
শোনে রাখো! তোমাকে হারালে
আমি হারাবো আমার আত্মীয়স্বজনকে,
আমার টাকাপয়সাকে, আমার ঘরবাড়িকে,
আমার আমিকে।
মৌসুমী ঋতু শীত
শীতের শরীরে মিশে আছে
বাতাবী লেবুর ঘ্রাণ,
কুয়াশার বুক ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসে
অজানা কাকের ডাক।
হিমেল বাতাসে উড়ে যাচ্ছে
একজোড়া নবদম্পতি শালিক।
মৌসুমী ঋতু! শীত কখনো
স্পর্শ করতে প্রণয়ের দিনে-
আমাকে কিংবা তোমাকে।