ভালোবাসার ফাল্গুন
ইব্রাহীম রাসেল
কবিতা উৎসব চলছে। ফাল্গুনকে কেন্দ্র করে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ। তারা দুজন পাঠ শেষে দর্শক সারিতে বসে অন্য কবির কবিতা শুনছে। দুজন কার কবিতায় কে মুগ্ধ হয়েছে তখনও জানা হয়নি। চার চোখের মিলন হয়েছে বেশ কয়েক বার। তারা দুজন তরুণ কবি। একজন এসেছে সাদা পাজামা আর লাল পাঞ্জাবি পড়ে। অন্যজন লাল শাড়ি, সাদা ব্লাউজ, খোঁপায় হলুদ ফুল। নারী তরুণ কবি যখন আবৃত্তি করছিলো ঠিক তখনি উৎসব রুমে প্রবেশ করে পুরুষ তরুণ কবি। যে কারণে আবৃত্তির শুরুর দিকে নারী তরুণ কবির নামটি শোনা হয়নি। পুরুষ তরুণ কবির নাম আজাদ আরমান। সে পরে আবৃত্তি করায় নারী তরুণ কবি তার নামটি শুনতে পেয়েছে। নারী তরুণ কবির মনে হচ্ছে আগে থেকেই আজাদ আরমানকে চেনে। অন্তত যতোবার আজাদ আরমানের দিকে তাকিয়েছে তাতে আন্দাজ করে বলাই যায়। নারী তরুণ কবির নাম না হয় পরেই জানা যাবে। পাঠকের কাছে এটা রহস্যই থাকুক। গল্পটা এগিয়ে নেয়া যাক।
কবিতা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান সময়ের খ্যামিতান কবিরা। হেলাল হাফিজ, মোহাম্মদ নুরুল হুদা, মতিন বৈরাগী সহ অনেকেই। হেলাল হাফিজ তার বক্তব্য শেষ করে যখন আবৃত্তি করছিলেন নিজের কবিতা-‘আমাকে চেনো না....’ । তরুণ নারী কবি তখন বার বার তাকাচ্ছিল আজাদ আরমানের দিকে। তরুণ কবি আজাদ আরমান আবিস্কার করার চেষ্টা করছে এই তাকানোর রহস্য। পড়তে চেষ্টা করছে চোখের পাঠ। খুব বেশি সময় পেল না আজাদ আরমান। মনে হচ্ছে মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেল উৎসব। সঞ্চালক বলছিলেন আবার দেখা হবে আগামী ফাল্গুনে।
উৎসব শেষে একে একে সবাই বের হয়ে যাচ্ছে। আজাদ আরমান তখনো ঘোরে নিমজ্জিত। আধো আলো কেটে উৎসব রুমে এবার জ¦লে উঠল ঝাঁঝালো লাইট। অনুষ্ঠান আয়োজক বাদে দর্শক সারিতে দুজন মানুষ বসে আছে। নারী তরুণ কবি উঠে এবার হাঁটতে শুরু করলেন দরজার দিকে। আজাদ আরামান এবার পিছু নিলো। উৎসব রুমের দরজা পেরিয়ে বের হতেই পেছন থেকে ডাকলো, শুনুন! নারী তরুণ কবি পা চালানো থামিয়ে দেয়। আজাদ আরমান বলল-আপনার নামটা প্লিজ!
ফেসবুকে প্রোফাইল ছবিহীন ‘বিষণœ বিকেল’ নামের যে কবির সাথে আপনি কথা বলেন, আমি সেই। নামটা ইনবক্সে আপনাকে বলেছি, মনে করার চেষ্টা করুন। আজাদ আরমান শূন্যে তাকিয়ে নামটা মনে করার চেষ্টা করছে। আপনিই তাহলে কবি সায়মা সুমি? সায়মা সুমির রিক্সা ততক্ষণে দৃষ্টির ওপারে।
১৫/৭, তাজমহল রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭।