বাউণ্ডুলের অক্সিজেন
সানাউল্লাহ বিপুল
একটু অক্সিজেন হবে?
আমি বাঁচতে চাই
পুরনো স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার এক কুটিরে
বদ্ধ অবস্থায় আমি আমার স্বত্বাকে
হারিয়ে চলেছি নিরবধি
আমি একটু অক্সিজেন চাই।
একটু অক্সিজেন হবে?
আমি হাফ ছেড়ে বাঁচতে চাই
এই ঝঙ ধরা শিকলে
গতরে পঁচা পঁচা দাগ,
এখন শুধু পোকা কিলবিল
করাই বাকী রইলো
আমি মুক্তি চাই।
একটু অক্সিজেন হবে?
আমি উন্মুক্ত অসীমে
মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়তে চাই
কারো অনুমতির ধার ধারতে চাইনা
অনুভুতিগুলোকে পাথরচাপা দিতে চাইনা
আমি আমার মত থাকতে চাই।
একটু অক্সিজেন হবে?
আমার ভালো লাগা গুলোকে
ভেঙ্গে চুরমার করছি প্রতিনিয়ত
ইচ্ছেগুলো দুমড়ে মুছড়ে যাচ্ছে-
আমি কিছুই করতে পারছি না।
আমার মুখে, হাতে, পায়ে পেড়েক সটকে দিয়েছে।
একটু অক্সিজেন হবে??
সংসার নামক এই বন্দিশালা থেকে
মুক্তি মিলবে কী?
তা না হলে আমি যে কাতরাতে কাতরাতে
কোন একদিন নিঃশেষ হয়ে যাবো।
একটু অক্সিজেন হবে?
আমি বাউণ্ডুলে, আমি ছন্নছাড়া
আমি প্রতিনিয়ত ব্রাউনীয় গতিতে
ছুটে বেড়াতে চাই দিকবিদিক।
তবে আমায় বেধে রেখেছো কেন?
আমাকে শৃঙ্খলে বেধে রাখা যায়না।
আমি একদিন মুক্ত হবো
সেদিন তোমাদের কাছে অক্সিজেন চাইবোনা
মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে রাত-দুপুরে
মনের আনন্দে ভেসে বেড়াবো
আমি পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেবো
সেদিন আমায় বেধে রাখা যাবে না
সংসারের এই মায়ার শৃঙ্খলে।
মানচিত্র
জান্নাতুল ফেরদৌস লিসা
অন্ধকারে মুখটা ঠিক দেখতে পেলাম না
তবে হাতটা খুব চেনা।
একজোড়া হাত শরীরটায় একটা কলঙ্কের মানচিত্র এঁকে দিলো।
বন্ধ ঘরের অন্ধকারে শরীরের আলো খুঁজে নিলো,
কি খুঁজলো, কি হাতালো জানিনা।
বদলে আমি কি পেলাম?
একটা মানচিত্র
রাশিয়ার মত বড় মাপের মানচিত্র,
কলঙ্কের মানচিত্র, অভিসাপের মানচিত্র, একটা দোরের খরিদ করা তালা,
এই খবরটা হবে থানার পরে থাকা মামলা।
অনামিকা থেকে যেই আংটি'টা খুলে নিয়েছিলাম
কালো পাথর বসানো আংটি-
চা দেবার বেলায় করিম চাচার হাতেই তো দেখেছিলাম!
আন্টি গর্ব করে শুনিয়েছিলেন এই আংটির দামটি।
আর বডি ¯েপ্রর গন্ধটাও তো চেনা।
কিন্তু উনি যে ভালো মানুষ
এ তো সবার জানা।
গলাটাও তো ভিষন চেনা
কিন্তু চাচার কাছে এ বছর যে
বাবার অনেক টাকা দেনা।
বাবা বলেছেন, উনি নাকি ক্ষমতার দৌড়ে চাঁদ কিনে নেয়।
কারোর কাছে অভিযোগ করবো,
এসব কি আমাদের মানায়!
মুখ টিপে বাবা চুপ করালেন
আমার গোপন কথা,
সত্যি বলছি সিলিং ফ্যানে ঝোলার সময় হচ্ছিলো খুব ব্যথা।
আগামী লিপইয়ারগুলোতে স্ত্রীর ঠোঁটে চুমা দিবো
হিলারী হিটলার আভী
আজও একদিনও স্ত্রীর ঠোঁটে চুমা দেয়া হয়নি!
অথচ প্রতিদিন-ই বেশ্যার ঠোঁটে রঙিন-চুমা দিচ্ছি!
আর এভাবেই কেটে যাচ্ছে ৩৬৫ দিন
বছরের পর বছর,
এককথায় বেশ কয়েকটি যুগ!
দু’চোখে ছলছল জল নিয়ে-
গত লিপইয়ার-এ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
নিজের ঠোঁটে নিজেই কাব্যিক-চুমা দিয়েছিলাম!
আগামী লিপইয়ারগুলোতে প্রিয়তমা স্ত্রীর ঠোঁটে বাসন্তিক চুমা দিবো,
এ আমার সহস্র কোটি বছরের মনন অঙ্গীকার!
তুমি বন্ধু অভিমান বুঝো না
হাবিবাতুল উম্মে
একটা গাছের কথা বলো-
গাছেরাও আজকাল করে আছে অভিমান;
বসন্ত এসে গেছে ভেবে তুমি
পা বাড়িয়েছ বনে;
আমাকে নিয়ে তোমার যত অভিযোগ
ফুল করে দেব সব-
তুমি বন্ধু অভিমান বুঝো না !