এই শীত চলে গেলে
নুরুল ইসলাম বাবুল
পালাব কোথায় এই শীতগ্রাম ছেড়ে
কোথায় ওমের দুপুর,
শীতের শহর কেমন চলছে এখন
কেমন আছো গো, নূপুর?
এই শীত চলে গেলে-
আমরা করব বসন্ত সংসার,
তখন তোমার ইচ্ছেগুলোর সাথে
খুলিও মনের দ্বার।
বিচ্ছিন্ন অসুখ
দেলোয়ার হোসাইন
এই নাগরিক ঘুম
চমকে উঠি রোজ,
খেয়া ঘাটে কেবল
মাঝির নেই খোঁজ!
এই নির্বোধ বায়না
নিগূঢ় খেল তামাশা,
অন্ধের মুষ্টিবদ্ধ হাত
অনাহুত দূরের ভাষা!
এই তরল অগ্নুৎপাত
রক্তে ত্যাগের হুলিয়া,
বিষন্ন গোলামের রাত
সস্তা নিলামে দেউলিয়া!
এই পশ্চিমা বাতাস
রুগ্ন তলপেটে ব্যথা,
ওষুধ গেলাবে মোড়ল
উচ্ছিষ্ট ডায়রির পাতা!
এই প্রতারিত অসুখ
বিচ্ছিন্ন মেঘের দেশ,
গুণের নামতা শিখি
আমরা আজন্ম ক্লেশ!
পৌষের হৈমো নিশুতি
নুসরাত মন
উত্তরের হু হু করা হিমেল বাতাসে
চারিদিকে নিস্তব্ধতার ধোয়াশে কোয়াশা,
পৌষের হৈমো নিশুতিতে জানালা ভেদ করে
রং বাহারী ফুলের সুবাসে -
যদি আমি যেতাম উড়ে,
ফুলপরী কিংবা প্রজাপতির মতো
স্বপ্নীল ডানায় বর্ণীল পাখায়,
উড়ে উড়ে ঘুরে ফিরে
মধু আহরণে প্রকৃতি ছোঁয়ে ব্যস্ত,
আকাশে তাকিয়ে দেখি
পৌষের হৈমো নিশুতি যেনো,
টুপটাপ ফোঁটায় ফোঁটায়
বৃষ্টির মতো ঝরছে অবিরত,
মিটমিট করে জ্বলছে নক্ষত্ররা
আর জ্বল জ্বল করে জ্বলছে,
আমার জেগে থাকা স্বপ্নেরা
কোনো এক মায়াবী উষ্ণতার খোঁজে,
বিন্দু বিন্দু করে স্নিগ্ধ আবরণে
পৌষের হৈমো নিশুতিতে,
মুক্তো ছড়ায়ে আলোক দিবে
বাগ- বাগিচায় আমার করে,
তাতেই আমি সুবিন্যস্ত।
প্রিয় নাম নিয়ে ডেকো
আবদুল্লাহ রিয়াদ
দুপুরে রোদের তীব্রতা রেখে
সূর্য হেঁটে চলে পশ্চিম গগনের দিকে,
ডানায় রোদের গন্ধ মুছে
পাখিরা উড়ে যায় নীড়ের দিকে।
তোমারও যদি ফিরতে মন চায়,
মন চায় যদি আসবে নীড়ে,
সন্ধ্যার আবছা অন্ধকার এলে
আমায় প্রিয় নাম নিয়ে ডেকো।
সন্ধ্যা পরের সেই কোমল চাঁদ,
আকাশের পাড়ায় পাড়ায় তারার হাট।
নিশ্ছিদ্র নিরবতা, সুনসান আশপাশ,
শৈত্য প্রবাহ আর কুয়াশার ঝঞ্জাট।
তখন যদি পাশে থাকতে মন চায়
মন চায় যদি হাতে রাখবে হাত।
রাত্রিরা গভীর হয়ে এলে
প্রিয় নাম নিয়ে মুনাজাত ডেকো।
কেউ থাকে না পথের শেষে
মানুষ শুধু সান্ত¡না দেয় হেসে।
বহু পথ হেঁটে
সবাই বুঝে পাশে নেই কেউ
বরং কোথাও কেউ নেই।
এমন একাকিত্বে যদি ভয় হয়,
প্রয়োজন হয় যদি সঙ্গত্বের।
শেষ রাতের পবিত্রতম জায়নামাযে
প্রিয় নাম নিয়ে মুনাজাত ডেকো।
শস্যশ্যামল আগুন
প্রেমাংশু শ্রাবণ
১
দিঘিটি এগিয়ে এলো তৃষ্ণায় --
স্পর্শে মাতাল ঝিনুক
গোপন অঙ্গশোভায় প্রদীপের সহমরণ
আর বোতাম খোলা শীতল
দৃশ্য মিশমিশে কালো তিল
তদুপলক্ষে অস্ত্রসজ্জিত রণতরঙ্গ..
২
আপাদমস্তক ছেয়ে গ্যাছে ছায়া
ঘোরতর ঘৃণা
অবহেলা জর্জরিত মুখোশে--
ওুপান্তরকামী ফুটন্ত ফুলের সৌরপ্রভায়
আসক্তি ক্রমবর্ধমান
নদীর সুডৌল স্তন ছুঁয়ে পানকৌড়ির উড়াল
জমাট বেঁধেছিল জল
শীতের গোপন আয়োজিত বিজ্ঞাপনে
আর না দেখা কথার স্পর্শে শস্যশ্যামল আগুন।
শীতল সুরে হাড়কাঁপানো শীত
মিসির হাছনাইন
আমাদের দেশে প্রচুর শীত মৌসুমেও
তুষার পড়ে না, শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়
যখন তখন এই হারানো খোলা মাঠ
শীতল সুরে বায়ু হাড়কাঁপানো শীতে
কয়লা দিয়ে আমরা আগুন তাপাই
নদীর দেশ আমাদের শীত পোশাক
নাই, তপ্ত হৃদয়ে এক ফোঁটা শিশির
চোখের উপর এই অবিরাম টলমল
তুমি দ্রুত কম্বলের নিচে ঢুকে পড়ো,
তোমাকে ছাড়া আমারও শীত করে,
আমার আকাশে শীতের সূর্য ওঠে না
শুধু একমাত্র তোমাকে গায়ে জড়িয়ে
কেন গুটিসুটি শুয়ে থাকতে পারি না..!