পদাবলি : ০২






বেশ আছি তুমিহীনা
নীলিমা শামীম

প্রাপ্তিতে যেমন হই পরিপূর্ণ
অপ্রাপ্তিতে তেমন হইনা অপূর্ণ।
সঙ্গ যেমন নিঃশব্দে সুখ দেয়
নিঃসঙ্গ তেমনি কভু  দুঃখ দেয়না।
নিজেকে সোপর্দ করতে বিচলিত
নিজেকে হারিয়ে হউনা কলুষিত
তোমার আগমনী দেয়না আর আনন্দ
তোমার চলে যাওয়ায় থাকেনা ক্রন্দন।
স্পর্শ আর মন ছূতে পারেনা আগের মত
অস্পর্শ ঠিক রয়না বুকের বামপন্থীর ক্ষত
প্রতিক্ষায় আর আঁখি হয়না ছলছল রক্তিম
অপেক্ষা বাড়াতে পারেনা নিসর্গতার যখম।



ভালোবাসা
মীর সাহাবুদ্দীন

তোমার চেয়ে
তোমার কথা বেশি ভালোবাসি
কেননা একদিন দেহের ভীতর শুকিয়ে যায়
প্রয়োজন বোধে থাকে একজন বন্ধু
আমি তখনো কলঙ্কের
ভার নিতে চাই
উভয় চাই দিতে ও নিতে
একটা শব্দ না উচ্চারণ করে



মর্সিয়া
মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ্

এই নির্মম সংসারে আজ নির্ঘুম রাত
চোখ জুড়ে শুধু স্বজনের আর্তনাদ।
জীবনের সব হিসেব ফুরিয়ে গেলে
চলে আসে বিদায়ী সার্টিফিকেট।
এই তো জীবন, ক্ষুদ্র পরিসরে
বেঁচে থাকা এক অতিথি পাখির মতন।

তবুও প্রিয়জনের প্রার্থনায় কেটে যায় রাত
হসপিটালের করিডরে আজ ঠুনকো সবই,
হেরে যায় মানুষে মানুষে সব বিরহ বিবাদ।




ভাবান্তর 
সোহেল রানা

আমি সেইদিন তোমাকে দেখেছিলাম।
আমার জীবনের সমস্ত ভালোবাসা সেদিন
নিবিড় হয়েছিল, তোমার প্রতি; আর অনুভাবে তৃপ্ত হয়েছিলাম
তোমাকে পেয়ে। তুমি যে আমার হৃদয়ের মাঝে
সুপ্তভাবে বাসা বেঁধেছিলে, আর সেইদিনই ব্যাপ্তর বিস্তার ঘটালে।

আকাশ যেমন নীলিমায়, আর অন্ধকারে
তারায় তারায় ছেয়ে যায়,
প্রত্যূষের সংগীত যেমন ব্যথা ভোলায়
হৃদয়কে করে মোহময়।

সেই তুমি, আর আজ তুমি, একই তুমি-
তবে আজ তুমি, আমাকে আমার ওপর
এইভাবে চড়ে বসবে! আর আমিও তোমার ওপর
এইভাবে আসক্ত হব! কেউ কি কখনো ভাবতে পেরেছিল?
আর আমরাই কি ভাবতে পেরেছিলাম?

হয়তোবা ‘কাল’ তুমি থাকবে না আর সেই তুমি!
অথবা আমিও থাকবো না আর এই আমি!
ভাবনাই কেউ কি কাউকে মিলাতে পেরেছে
কখনও, কোনোদিন?  ভাবি একবার নিজেকে নিয়ে,
কে আমি? ভাবি একবার মানুষকে নিয়ে, মানুষের জীবনকে নিয়ে,
মানুষ আসলে কী? কী রকমই বা হয়?

রঙে রঙে বদলায় মানুষের রঙ
বিচিত্র মানুষের মন।
আসলে, মানুষ তার নিজে, নিজেকে নিয়ে
সঠিক ভাবে ভাবতেই পারে না-
কখন কী যে হয়! কার মাঝে ক্ষয়? কার মাঝে জয়?
কার মাঝে নিশ্চয়? কেউ’ই কারো ব্যাপারে নিশ্চিত নয়।






তিন আঙুলের ছোঁয়া
শরীফ সাথী

দুই হাজারের আগে, জাগে যে কথা আমার।
হাতের তিন আঙুলের ছোঁয়ায় চিঠি লিখতাম খুব
ডুব দিতো আর ঢেউ তুলতো কলমের কালি
কখনও সাদা কখনও রঙিন পৃষ্ঠায়।
নিষ্ঠার সাথে বিশ্বাস আসতো মনে, ক্ষণে জবাব পাবো
পেতাম ও। কলেজ ছেড়ে ভার্সিটি গেলাম।
কত চিঠি আদান প্রদান হতো।
কল্পনা ও স্বপ্ন কত না চোখে বুনলাম।
কিন্তু বছর শেষে ফিরে এসে শুনলাম
কদিন আগে নয়নার বিয়ে হয়ে গেছে।


দৌড়াচ্ছি
রুদ্র সাহাদাৎ 

দৌড়াচ্ছি শৈশব থেকে মেঠোপথ - রাজপথ
কোনো সিনেমার নায়ক নই
ক্লান্ত পথিক, ছুটছি সেই কবে থেকে জানা নেই
দৌড়াচ্ছি কৈশোর, তারুণ্য, পেরিয়েও আজ অবধি

কখনো জেনে শুনে, কখনো না বুঝে
আজব সংসার, আজব মায়ার পৃথিবী

মানুষের ধর্মই বুঝি দৌঁড়ানো সকাল-বিকেল
রাস্তায় তাকালেই, দেখা যায়
দৌড়াচ্ছে মানুষ ডান-বামে......






শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট