পদাবলি




অভিসার একান্ত
মীম মিজান

আকাশের মেঘ হতে ঝরে পড়া বৃষ্টিকণা
পিষ্টটানের ফলে গোলাকার হয়ে আমার শুষ্ক অবয়বে পড়ছে।

মেঘমালা তাদের ভালোবাসা পাঠিয়েছে পিষ্টটানে গোলাকার স্বচ্ছ ফোটায়।
আমি সে ভালোবাসা অঙ্গে মেখে ঝুমঝুম আওয়াজে বুঁদ।
মাথা থেকে পুষ্টগাল বেয়ে বুককে ভিজিয়ে চুয়ে চুয়ে আমাকে শীতল করছে মেঘের ভালোবাসা।

পল্লব স্নানে যেমন চিকচিক করে
আমার থেকেও চিকচিক রশ্মি বেরিয়ে মেঘমালাকে জানাচ্ছে ভালোবাসার প্রাপ্তি স্বীকার।

স্নাত এ সন্ধ্যায় কদমগাছের কাছে একগোছা ফুলের আবেদন করলাম।
সে নিরাশ করেনি।
আমি প্রেয়সীর হাতে কদমফুল গোছা দিয়ে আবার নেমে পড়ি ভালোবাসা মাখতে গায়ে।

‘তুমি কি একাই ভিজে সিক্ত হবে কবি?
আমাকে কী করবে না সাথি?
আমিও চাই ভিজতে!’

আমি দৌড় দিয়ে সেই কদমতলায় আবার।
আমি যে অভিসারে মিলেছি মেঘমালা
সেখানে সে বসাতে চায় ভাগ।
আমি এই অভিসারকালে শুধুই তোমার।
তোমার পরশে আমি হিম-শীতল।

আমি তোমার প্রেমিক।
প্রেমিক হয়ে চাই অভিসার একান্তই।


নূরলদীন ও কিংবদন্তিরা ইতিহাস নয়
খান মুহাম্মদ মেহেদী হাসান

কোথায় মানবতাবাদী বিপ্লবী কবিরা?
বিপ্লবের যে সময় হয়েছে?
তোমাদের কলম আজ ঘুমিয়ে কেনো?
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখাকে কবিতা বলেনা
দু’চারটা পদক পেলেই কবি হওয়া যায় না
নারীর আলতো স্পর্শই শুধু কবিতার সুর নয়
নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাও কবিতা
কিশোর সুকান্তের দুরন্তপনাও কবিতার সুর।
প্রত্যেক কবি মানবতাবাদী ও ন্যায়ের প্রতীক
তবে কি ভুলে গেছো নিজেদের কবিতা?
৫২, ৭১ যাদের প্রেরণা
তারাও কি ভুলে গেছো তারুণ্যের কামনা?
তবে আজ রাজপথে তোমাদের আসন শূণ্য কেনো?
কেনো আজ বাকরুদ্ধ তুমি?
‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি'
কিংবদন্তিদের উত্তরসূরিরা আজ রাজপথে
‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়'
সেই নূরলদীনেরা আজ নিজেদের অধিকারের জন্য লড়ছে
রাজপথে এসে দেখো না নূরলদীনের কথা মনে পড়ে কিনা?
স্বার্থের বেড়াজালে নিজেকে আটকে রেখে কবিত্বকে অপমান করো না।
কারণ নূরলদীন ও কিংবদন্তিরা ইতিহাস নয়
এরা অন্যায় কে রুখে দেয় যুগে যুগে !






স্বপথে অনড়
ইমরান লাবিদ

স্বপথে সুপথে চলেছি সতত
না, কোনো ঝঞ্ঝাট বিঘনতায় কিঞ্চিৎ নেই পরোয়া!
তিরষ্কার তিক্তাচার আসতেই পারে কত লোকের থেকে!
শব্দহীন সবকিছু মাথা পেতে নিয়ে
থাকব তবু― ন্যায়, নিষ্ঠা, সত্য ও সততার পরে সতত!
কটু বাক্যের স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করুক আমার কানের কাছেই
ধরে নেব, ‘আরে বলছে কাকে! কে জানে?
আমি তো সুপথে আছি, আমাকে বলছে না।’
নির্বোধ, মূর্খ আর ইতর লোকের তিরষ্কারে
প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন না করাই উচিৎ শিক্ষা,
নিরুত্তর পাশ কেটে যাওয়াই লা-জবাবকর জবাব!




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট