ফিরে এসো ভোরের আলো অথবা রাতের নিকষকালো আধাঁর হয়ে...




ফিরে এসো ভোরের আলো অথবা রাতের নিকষকালো আধাঁর হয়ে...
আহমদ মেহেদী


 ধানশালিক ইউটিউব চ্যানেল । সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকুন : https://www.youtube.com/watch?v=7_bEP0d9Rm4 


মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কলেজে গেলাম। আমি এ কলেজে পড়তে চাইনি । বাবা অনেক বুঝালেন আর বললেন-
দেখ বাবা আমার এত টাকা পয়সা নাই যে তোকে ঢাকায় ভর্তি করাব ,
 এখানেই পড় । ভালভাবে পড়লে এখান থেকেই ভাল রেজাল্ট করতে পারবি । আমার অবস্থাটা তুই একটু বুঝতে চেষ্টা কর !
 কলেজের বারান্দা রং-বেরংয়ের ফুল দিয়ে সাজানো । আজ কলেজের নবীন-বরণ । বারান্দার রেলিং-এ ঢেলান দিয়ে একদল মেয়ে দাড়িয়ে আড্ডা মারছে । এস.এস.সি পাশের রেশ যেন তাদের এখনো কাটেনি । সকলের গায়ে সাদা এপ্রন আর সবুজ ছেলোয়ার ।মাথায় হালকা কমলা রঙের উড়না । তাদের অদ্ভুত সুন্দর লাগছে কেন জানি । একটু পর আমি দোতালায় চলে গেলাম ।
একটু পর আবার নিচে আসলাম , দেখলাম কিছু ছেলে মেয়েদের গায়ে রং ছিটানোর চেষ্টা করছে ।কয়েকটি মেয়ে তাতে অনেক মজা পাচ্ছে , হয়তো তারা একসাথে স্কুল জীবন পার করে এসেছে । কিন্তু একটি মেয়ে তার গালে কোনমতেই রং লাগাতে দেবেনা আর ছেলেদের বলছে-
‘ সরি , তোমরা এমন করো না । বাসায় এমন দেখলে বাবা খুব বকা দিবে আমায় ’।
ছেলেরা নাছোড়বান্দা , তারা লাগাবেই । ছেলেদের এমন অবস্থা দেখে একপ্রকার জোর করেই মেয়েটি দৌড়ে চলে গেল আড়ালে ।
 নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলছে। অনেকেই তাদের দামী মোবাইল দিয়ে ছবি তুলছে । কেউ কেউ কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে ।ব্যান্ড দল এখনো আসেনি তার ফাকে নবীনরা স্টেজে গিয়ে যে যার মতো গলা ফাটিয়ে গান গাচ্ছে আর চিল্লাচিল্লি করছে । আমি মাঝখানের একটি চেয়ারে বসে আছি । ফয়সাল নামের একটি ছেলে এখন গাইছে-
‘চল সবাই..... জীবনের আহবানে... সামনে এগিয়ে যাই ’।
একটু পর একটি  মেয়ে গাইতে শুরু করছে-
‘এখনো কি কেউ আমারে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে ?
এখনো কি কেউ আমার পথ চেয়ে থাকে ?
এখনো কি কেউ বইয়ের ভাজে একটি চিরকুট লুকিয়ে রাখে ?
এখনো কি কেউ আমার জন্য শিউলী-ফুলের মালা গেঁথে রাখে?
এখনো কি  কেউ ভালবাসার জল-ছিটে দেয় তা শুকাবার আগে ?’
এই মেয়ের গানটি শুনে কিছু ছেলে জোরে জোরে হাসছে আর বলছে-
ঘবীঃ ..হবীঃ..হবীঃ ংড়হম ঢ়ষবধংব.
আমি ঐ মেয়েটি লুকিয়ে দেখতে  চেষ্টা করছি । দেখলাম মেয়েটি পিছনের সাড়ির সামনের চেয়ারে বসে আছে । তার কিছুটা মন খারাপ মনে হল আমার কাছে । আমারও ভাল লাগছেনা । কোন বন্ধু নাই । সবাই অচেনা । সাঈদ, আনিস, আবদুল্লা ,মামুনদের মনে পড়ল খুব । তারা সবাই ঢাকায় ভর্তি হয়েছে । আমি শুধু কুমিল্লায় । যাইহোক মেনে নিলাম , সবার ভাগ্যে তো সবকিছু জোটেনা ।


অনুষ্ঠান শেষ। মনে মনে ভাবতে লাগলাম মেয়েটির সাথে কিভাবে কথা বলা যাবে । মেয়েরা খুব সহজে মিশে যেতে পারে হয়তো ছেলেরা পারেনা । দেখলাম মেয়েটি অন্য মেয়েদের সাথে মিশে গেছে , কথা বলছে, হাসছে । এতো সুন্দর  হয়  কোন মানুষের হাসি? তার সাথে একটু কথা বলতে ইচ্ছে করছে আমার । কিন্তু তার কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিনা ।

তাকে ফলো করতে করতে এসে দেখি মেয়েটি রিকশার জন্য একলা দাড়িয়ে আছে । এবার সাহস পেলাম ,কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কেমন আছ ? তোমার নাম কি ?
মেয়েটি যেন এমন প্রশ্ন কোনদিন শুনেনি এমন ভাব করল । একটি খালি রিক্্রাওয়ালাকে ডাক দিল-এই খালি , যাবেন ? মেয়েটি আমার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে চলে গেল হাউজ-বিল্ডিংয়ের দিকে । প্রথম দেখায় মেয়েটিকে ভাল করে দেখতে পারিনি কিন্তু এবার তাকে কাছে থেকে দেখে মনটা কেমন জানি মায়ায় ভরে ওঠল আমার ।

কলেজে কøাশ করছি । ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্যে কিছুক্ষন পর পর মিছিল বের করছে । ক্লাশ থেকে শুনতে পাই-‘জয় বাংলা ....’ । তাদের মধ্যে মারামারি ও হয় মাঝেমধ্যে ।কলেজ গেইটে ডুকেই দেখি  একদিন মারামারি চলাকালে ইট-ভাঙা এসে ঐ মেয়েটির হাতে এসে পড়ে। তার ডানহাতে কেটে রক্ত পড়ছে , সে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে কেউ সাড়া দিচ্ছেনা । আমিও যাচ্ছিনা অভিমান করে । সে আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এভাবে চলে গেল ?
কিন্তু কেন জানি পরে ছুটে গেলাম তার কাছে । তার হাতটি ধরে তাকে একটি ফার্মিসিতে নিয়ে গেলাম । তার হাত বেন্ডেজ করে একসাথে রিকশা করে যেতে যেতে কথা হল- নাম কি ?
-সামিয়া । তোমার ?
-মুহিত ।
তার কপাল ঘামছে । সামনের চুলগুলো কপালে পড়ে আছে । ঘেমে থাকার কারনে তাকে আরো সুন্দর লাগছে । অনেক কথা হল । কিছু মৌলিক কিছু অবান্তর ।


সামিয়া এইকয়দিন কলেজে আসেনি ।মোবাইল নাম্বার নিল কিন্তু কল দিল না এখনো। একটু রাগ হল আমার । সোমবার সকাল । রশিদ স্যারের প্রাইভেটে আছি । মোবাইলে ব্রাইবেশন হল । আমি স্যারকে বলে বের হলাম । ওপার থেকে-মুহিত, আমি সামিয়া । তুমি কেমন আছ ?
-ভাল, তোমার এখন কি অবস্থা ? কলেজে কবে আসবা?
-আসব, শনিবার।
-নাম্বার নিলা কল তো দিলে না ।
-আমার তো আর মোবাইল নাই, মার মোবাইল এটা । আচ্ছা রেখে দেই , বাবা বাসায় আছে । কলেজে গেলে দেখা হবে । আমি কল না দিলে তুমি দিওনা কেমন ।
-ওকে ।

এভাবে দিন যায় । সামিয়া কলেজে না আসলে আমি যাই না । আমি না গেলে সে যায় না । তার মায়ের হাতে বানানো পিঠা নিয়ে আসে, চা-কফি খাওয়ায় । কখনো বটতলায় একসাথে বসে বাদাম খাওয়ায় , ফুচকা খাওয়ায় । আর কত যে চকলেট খাইয়েছে সে আমাকে । পেটের ভিতরে মনে হয় চকলেটের চড় পড়ে আছে এখনো ।

একদিন সকালে বটতলায় আনমনে বসে আছি । সামনে টেস্ট পরীক্ষা । টেস্ট পেপার এখনো কিনা হয়নি আমার । সামিয়া কিনে ফেলেছে,সামিয়ার কাছে ঐরমযবৎ সধঃযং এর অংশটা চেয়েছি । সে অমৎরপঁষঃঁৎব নিয়েছে । বই গুলো বুকে জড়িয়ে আস্তে আস্তে আমার দিকে হেটে আসছে । কাছেই এসেই বলল-কেমন আছ ?
-ভাল । তুমি কেমন আছ ।
-এই নাও তোমার ঐরমযবৎ সধঃযং .
দেখলাম পুরোনো ক্যালেন্ডার একেবারে  বাধাই করে দিয়েছে সে । পুরো ক্যালেন্ডার জুড়ে জবাফুলের ছাপ ছাপ আঁকা । এই ফুলগুলোর গোড়ায় কয়েকটিতে লেখা গ ,কয়েকটিতে লেখা ঝ.
-এখানে খোলার দরকার নেই । বাসায় গিয়ে খুলবে কেমন ।
আমি কিছু না বলে ব্যাগে রেখে দিলাম। কিছুটা উত্তেজিত । কি আছে ওটার ভেতর ?


রাত । বাসার সবাই যখন ঘুমিয়ে গেছে তখন বইয়ের ভিতর খুজে পেলাম কয়েক লাইনের চিরকুট-
‘ প্রিয় মুহিত , ভালবাসা নিও । আমি অনুমান করে একটা কথা বলি ,যদিও আমার অনুমান কখনো মিথ্যা হয়না । আমার জন্য তোমার অনেক টান । আমার জন্য তোমার হৃদয়ে যে ভালবাসা ফুটতে শুরু করেছে তা একেবারেই নির্ভেজাল । আমি আমৃত্যু তোমার ভালবাসা চাই । আমি ও তোমাকে আমার হৃদয়ের রাজা বানাতে চাই ।
ইতি-ছঁববহ ড়ভ ুড়ঁৎ যবধৎঃ ( ং)
বি.দ্র.-“গতকাল তুমি ঐখানে দাড়িয়ে ছিলে জানতাম না প্রিয় । রাগ করোনা । তাকালেই আমিও তোমাকে দেখতে পেতাম।   ণড়ঁ ধৎব সধহ ড়ভ ধসরধনষব হধঃঁৎব.  ”
সেদিন রাতে আমার এক ফোটাও ঘুম হয়নি । এবার আর চিরকুট পাইনা , পাই চিঠি । প্রাইভেটে আসলে কেউ যখন না থাকতো সামিয়া বলতো
-তোমার হাতটা একটু দেখি তো । তোমার সাথে হ্যান্ডশেক করি বলেই ভাজ করা চিঠিটা দিয়ে দিতো। একবার ভ্যালেনটাইন ডেতে আমাকে শিউলী ফুলের মালা আর পেস্ট কালারের দুটি শার্ট গিফট করেছিল । আমিও তাকে দুটি বই গিফট করেছিলাম-একটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সোনালী-দুঃখ’ , আরেকটি শরৎ চন্দ্রের ‘দেবদাস ’ । সেদিন সারাদিন তাকে নিয়ে শালবন-বিহারে ঘুরাঘুুরি করেছিলাম । তাকে কোনদিন খাওয়াতে না পারলেও আজ খাওয়াতে পেরে ভাল লাগছে খুব । সেদিন একপিস টিস্যু আমার পকেটে নিজের হাতে দিয়ে দিয়েছিল । ভাবিনি তাতে ছোট্ট করে লেখা থাকবে
-‘একই সময়ে একটি মন কয়জনকে দেয়া যায় প্রিয়তমা?’
একথাটি লেখার মানে হল ,তাকে একটি ছেলে অফার করেছিল । সে কথা আমাকে বলাতে উত্তরে আমি বলেছিলাম যে , তুমি রাজী হয়ে যাও। এ কথা বলাতে সামিয়া কষ্ট পেয়েছিল সেদিন। পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছিল সে। আমি বলেছিলাম সরি । তুমি কি শাস্তি দিতে চাও বলো ?
-শাস্তিটা হল সারা কুমিল্লা শহর আমাকে নিয়ে বাইকে করে ঘুরাতে হবে ।
-তবে একটা শর্ত আছে, ঐদিন আমাকে বোরকা পড়ে বের হতে হবে ।তা নাহলে বাবা দেখে ফেলার সম্ভাবনা আছে ।
-ওকে..ডান ।
সেদিনটা সত্যি খুব আনন্দের ছিল । সারাদিন বাইকে চড়ে দুপুরের লাঞ্চ করে আবার কোটবাড়ি যাই । সেখান থেকে ঠিক সন্ধ্যার আগে তাকে হাউজ-বিল্ডিং নামিয়ে দেই। বাইক থেকে নেমেই আগে চারপাশ দেখে নিয়ে আমার চোখে-মুখে  চুমু দিতে থাকে ।পরে  বাসায় যাবার সময়  আমাকে বলে
-তুমি একটু দাড়াও জান। আমি দেখলাম সে একটি বেগুণী রঙের থ্রি-পিছ পড়ে এসে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সে যে কাদছে তা বুঝতে পারছি ।

এটাই সামিয়ার সাথে আমার শেষ দেখা। আগামীকাল আমার ভর্তি পরীক্ষা । আমি আনিসের মেসে আছি।  মেসে আজ আমি ছাড়া কেউ নেই ।ছুটির দিনে তারা কেউ মেসে থাকেনা ।  আমার বন্ধু নাছিরের কাছ থেকে পাওয়া তাকে দেয়া ‘দেবদাস ’ বইটি দেখে চমকে গেলাম । আমিই শুধু জানি এই বইয়ের ভিতরে কিছু একটা আছে । যা ভেবেছিলাম তাই হল , বইয়ের মলাটের ভিতরে একটি চিরকুট-
‘প্রিয় মুহিত , তোমাকে কি বলব জানিনা, শুধু এইটুকু জানি আমাদের স্বপ্ন কুড়িতেই জড়ে গেল । বাবা আর বয়োজেষ্ঠদের মুখ বন্ধ করতে এছাড়া আমার কিছু করার ছিল না । কালকে আমার বিয়ে । তোমার সুন্দর হৃদয় দিয়ে তোমার হৃদয়রাণীকে ক্ষমা করে দিও ।ভালভাবে লেখাপড়া করবে কেমন যেন নিজেকে দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পার !
ইতি-জড়া ফুল ।’
 সেদিন মেসে  একাকী হাউমাউ করে কেদেছিলাম । এর মধ্যে অনেক ঝড় বয়ে গেছে জীবনে । কিছু কেন’র উত্তর খুজতে গিয়ে নিজেকে বড্ড বদলে ফেলেছি । ডিজিটাল যুগেও সে আমার একটিবার কেন আমার খোজ নেয়নি সেটার উত্তর আমার কাছে আছে তবুও তার দেয়া কিছু শর্ত আমি এখনো পালন করি-লালন করি । সেটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত । তার দেয়া চিঠিগুলোতে এখনো আমি শিউলী ফুলের ঘ্রান পাই। তার শরীরের ঘ্রান খুজে পাই। কি অদ্ভুত ব্যাপার তার কথা মনে হলেই আমার সব দুঃখ উড়ে যায় ।

 যে বলে তুমি নেই সে অন্ধ ।আমার অস্তিত্বে তুমি বিরাজমান। জান সামিয়া আমার একটি ফুটফুটে মেয়ে আছে । তুমিই তো বলেছিলে মেয়ে হলে তার নাম তুমি রাখবে । তোমার দেওয়া নাম-‘মেহেরিন ’ই রেখেছি তার নাম । তোমার কাছে এই জীবনে আর কোন চাওয়ার নেই। তুমি যে ভালবাসার সা¤্রাজ্য আমাকে দিয়ে গেছ তার দাম পুরো পৃথিবীর সমান নয় , আরো বেশি। মেহেরিন বড় হচ্ছে । একদিন তার কাছে আমাদের ভালবাসার কথা বলব কেমন। তোমার দেয়া চিঠিগুলো তাকে পড়তে দেব কোন একদিন । সে যদি প্রশ্ন করে বসে
-বাবা , তোমাকে এতো ভালবেসেও সে এভাবে তোমাকে একা করে চলে গেল কেন ? আমার সে উত্তর দেয়ার মতো সাহস আমার সত্যি নেই। এই জীবনে তোমার কাছে একটাই চাওয়া- মেহেরিনের প্রশ্নের উওর দেয়ার জন্য ছল করে হলে ও আরেকটিবার এস ভোরের আলো অথবা রাতের নিকষ-কালো আধাঁর হয়ে। তুমি শুধু মেহেরিনের সাথে তোমার কিছু মূল্যবান সময় তা হতে পারে দশমিনিট..বিশমিনিট কিংবা আধা ঘন্টা সময় চাই। আর সেটা হউক তোমার মনের রাজা বেচে  থাকতেই ! আমি তোমার সামনে যাবনা , কথা দিলাম। শুধু দূর থেকে তোমাকে একটি নজর দেখব ! আর একটা অনুরোধ -মেহেরিনকে মিথ্যা বলোনা কেমন । সে ও কিন্তু তার বাবার মতো মানুষের চোখ দেখে বুঝতে পারে -কেউ মিথ্যা বলছে না সত্যি বলছে ।
আমি যে তোমার সামনে যাবনা তা কি এই পৃথিবীর কোন মানুষ বিশ^াস করবে?
নোয়াগাঁও, দেবিদ্বার, কুমিল্লা







শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট