নব্যপথিক
আব্দুল্লাহ আল তুহিন
কিছু দিন আগে তুহিনের পরিক্ষা শেষ হয়েছে, তাই ঠিক করলো গ্রামে যাবে। কত্ত দিন গ্রামে যায়নি। সেই দশ বছর বয়সে গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছে। এখন বড়ো হয়েছে তুহিন। এবার ক্লাশ নাইনে পড়ে। গ্রামে বেশ লম্বা ছুটি কাঁটাবে তুহিনের।
বাবাকে বলে যাওয়ার দিন ঠিক করলো। কাজের চাপে বাবা-মা যেতে পারলো না। তাই তুহিন একাই যেতে হলো। এবার তুহিন গাড়িতে করে গ্রামে চলে গেলো। ভালো ভাবেই গ্রাম আসল তুহিন। গ্রামের সবাইকে দেখে খুশি হলো তুহিন। তুহিনকে দেখতে পেরে দাদা-দাদী, কাকা-কাকীর খুশি সীমা রইলো নাহ্।
কত্ত দিন পরে আসলো তুহিন। সেই ছোট্ট তুহিন আজ এতো বড়ো হয়েছে!
যাই হোক তখনের মূহুর্ত বেশ ভালো ছিল তুহিনের।
এখন হেমন্তকাল। শীতকাল আসতে কিছু দিন দেরি হবে।
সবাই ধান কাঁটতে ব্যস্ত ছিল।
তুহিনও ধান কাঁটতে চায়। তার ছোট ভাই রনি খুব ভালো করে ধান কাঁটতে পারে। কিন্তু তুহিন ধান কাঁটতে পারে নাহ্। রনি গ্রামের ছেলে সব রকম কাজ করে পারে কিন্তু তুহিন একটুও পারে নাহ্।
রনি বেশ ভালো করে কাঁটলো।
দাদীমা তুহিনকে বলল, এসব শহরে ধান হয় কাঁটা হয় না! তাই, অনেক চেষ্টার পরে তুহিন পারবে।
হুমম, পারলো কিন্তু অনেক চেষ্টার পর।
ধান কাঁটার সময় অনেক পোকা দেখে ভয় পেলো তুহিন। বয়স পনের কিন্তু এই বয়সে অনেক ভয়। তার ছোট ভাই রনি এসব কিছুই মন করে না। দাদী তুহিনকে বলল, কিরে তুইতো ছোট বেলায় এই পোকা নিয়ে খেলসিছ। এখন এসব দেখে ভয়, তাও এতো বড়ো ছেলে হয়ে?
উত্তর নেই তুহিনের মুখে, আর দেবে কি করে। শহরে ছেলে একটু ভীতু হয়ে থাকে। যাই হোক এখন ধান ঘরে তোলার পালা।
অনেক অনেক আটি। তাই তুহিনকে নিতে হলো। তুহিন বেশ বারোটা আটি নিয়েছে। তার ছোট বোন উম্পা নিয়েছে দশটা। যেখানে তার বয়স মাত্র আট বছর।
দাদী বলল, দেখ উম্পা তোর চেয়ে বেশি নিয়েছে।
কথা শুনে ভীতুর মত দাঁড়ায়ে থাকলো।
মনে মনে বলল, শহরের ছেলে এমনি হয় দাদীমা।